আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনার সুযোগ তৈরির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। আজ রোববার গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন। তাঁদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।’

আরও পড়ুনসন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত ব্যক্তি ও সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধ৪ ঘণ্টা আগে

গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে ১৫ বছর ধরে গুম-খুন-হত্যা, জনগণের কণ্ঠরোধ, ভোটাধিকার হরণ, দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচারসহ নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল। সর্বশেষ ২০২৪–এর জুলাই–আগস্টে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। এসব অপরাধের জন্য শেখ হাসিনা ও তাঁর সহযোগীদের বিচারের পাশাপাশি দল হিসেবেও আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনা জরুরি ছিল। কেননা, বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ঠিক হবে।

আরও পড়ুনট্রাইব্যুনাল রাজনৈতিক দলকে শাস্তি দিতে পারবেন, অধ্যাদেশ জারি, যথোপযোগী বলছে প্রসিকিউশন ৭ ঘণ্টা আগে

বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা।

এর আগে গতকাল শনিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ ছাড়া আজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধনী আনা হয়েছে, যাতে ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, এর অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে।

আরও পড়ুনদল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিতের দাবি গণসংহতির১০ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব চ র র আওত অপর ধ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ‍মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান। 

তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া

বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত

ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।

তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।

দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।

অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ