চান্দনা ডাকঘরে এখন স্বেচ্ছাসেবক ও যুবদলের কার্যালয়
Published: 13th, May 2025 GMT
গাজীপুর মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-জয়দেবপুর রোডের পাশে অবস্থিত চান্দনা ডাকঘর এখন স্বেচ্ছাসেবক ও যুবদলের কার্যালয়৷ প্রাক্তন বাসন ইউনিয়ন ভবন যেখানে দিন ধরে ডাক সেবা চালু ছিল। সেই ভবনটি এখন স্বেচ্ছাসেবক দলের বাসন থানা কার্যালয় করা হয়েছে।
এদিকে সরকারি জায়গায় দলীয় কার্যালয় বানানোর ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
চান্দনা চৌরাস্তার সড়ক ভবনের দেয়াল ঘেঁষে প্রাক্তন বাসন ইউনিয়ন ভবনটি এখন সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন। সেটি অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়৷ তবে সেখানে বছরের পর বছর ধরে চান্দনা ডাকঘর-১৭০২ এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
গতকাল সোমবার (১২ মে) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, চান্দনা ডাকঘর যেখানে ছিল সেখানে এখন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের বাসন থানা কার্যালয়ের নাম লেখা। রয়েছে একাধিক ব্যানার ও পোস্টার। মূল ভবনের বাইরে পাশের একটি ছোট কক্ষ ডাকঘরের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ডানপাশে একটি কক্ষে সাঁটার লাগানো। সেখানে লেখা রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কার্যালয়।
স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৪-৫ দিন আগে থেকেই বিএনপির অঙ্গসংগঠনের কার্যালয়ের জন্য ভবনটিতে লেখালেখি ও ফেস্টুন টানানো হয়েছে। কিন্তু এটি সাবেক পৌরসভার ভবন তবে এখন এটির দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। সরকারি সম্পত্তিতে দলীয় কার্যালয় হয় এটি তাদের জানা ছিল না। বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লোকজনও এটি করার সাহস করেনি।
গাজীপুর বাসন থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মুনসুর বলেন, “ওখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের কার্যালয় হয়েছে আমি জানি না। আমি আহ্বায়ক কিন্তু আমারও জানা নেই। কেউ করেছে কিনা সেটিও বলতে পারব না।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর যুবদলের এক নেতা বলেন, “সরকারি স্থাপনায় কোন দলীয় কার্যালয় হতে পারে না। কেউ হয়তো দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এটা করেছে।”
চান্দনা ডাকঘরের পোস্টমাস্টার ফারজানা আক্তার বলেন, “বিএনপির কার্যালয় আপতত নিয়েছে। তারা অফিস করেছে কিছুদিনের জন্য। তারা কীভাবে কার্যালয় করেছে জানি না। আমাদের অফিস ওখানেই আছে, একটু সাইডে আসছি শুধুমাত্র।”
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বলেন, “রাজনৈতিক দলের অফিস সরকারি যায়গায় করা যায় না। বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি আমাদের যায়গায় কিনা।”
ঢাকা/রেজাউল/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দল র ক র য য বদল র র জন য ক দল র ড কঘর এখন স সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫
ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।
সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।
জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।
সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।
সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”
সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।
ঢাকা/হিমেল/এস