মেলার আয়োজন নিয়ে বিএনপি- জামায়াত সংঘর্ষ, আহত ১৫
Published: 21st, May 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মেলা বসানো নিয়ে স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াতের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট-পাটকেলের আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২০ মে) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাপাইগাছি বাজারে ঘটে এ ঘটনা।
আহতদের মধ্যে ১১ জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- আসাকুর রহমান, হাবিবুর রহমান, কুদ্দুস প্রামাণিক, তুহিন হোসেন, সরাফাত সুলতান, টিপু সুলতান, সুকুর শেখ, শরীফ, জিহাদ হোসেন, জামাত আলী ও ইউনুস আলী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে কুমারখালীর হোগলা চাপাইগাছি বাজারে ‘গাজীকালু-চম্পাবতী’ মেলার আয়োজন করা হয়। অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়া খেলার অভিযোগ তুলে মেলা বন্ধের দাবি তোলেন জামায়াত কর্মীরা।
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থকেরা মেলা কমিটির পক্ষ নেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার বিকেল থেকে এলাকায় উভয়দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সন্ধ্যায় দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে দুপক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির সমর্থক ও খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান বলেন, “জামায়াতের শত শত লোকজন আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। আমরা থানায় মামলা করব।”
মেলার দোকানীরা বলেছেন, “আসরের পর থেকে জামায়াত-শিবিরের লোকজন বার বার উঠে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়। পরে সন্ধ্যার একটু আগে কয়েকশ’ লোক রামদা, হাঁসুয়া, লাঠিসোঁটা নিয়ে দোকানে হামলা চালায়। ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিলাম। পরে এসে দেখি মালামাল কিছুই নেই। অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন বলেন, “ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডে জামায়াতের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতে গেলে মেলা কমিটির লোকজন হামলা করেছে। থানায় মামলা করা হবে।”
জগন্নাথপুর ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, “মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়ার আসর বসানো হয়। সেজন্য প্রশাসন অনুমতি দেননি। তবুও বিএনপি ও মেলা কমিটি মেলার আয়োজন করেছে। আমরা মেলার বিষয় জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমিসহ আমাদের অনেকেই আহত হয়েছেন।”
এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ বলেন, “মেলা নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত কর ম স ঘর ষ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
ছেলের গলায় ছুরি ধরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় দুই বছর বয়সী ছেলের গলায় ছুরি ধরে এক গৃহবধূকে (২৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার একটি চা-বাগান সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা ওই গৃহবধূকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করেন। পরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই গৃহবধূ ও তার ছেলেকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে ওই গৃহবধূ পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। এর আগে, এদিন সকালে উপজেলার জগদল বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করে পুলিশ।
আরো পড়ুন:
তালাক দেওয়ার পর আটকে রেখে প্রাক্তন স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
মুরাদনগরে পর্নোগ্রাফি মামলায় ৪ যুবক ৩ দিন রিমান্ডে
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) এবং সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার একটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন ওই গৃহবধূ। শুক্রবার রাতে বাসা থেকে ইজিবাইকযোগে অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নে বাবার বাড়িতে যাচ্ছিলেন তিনি। সদর ইউনিয়নের তিনমাইল সুরিভিটা এলাকায় পৌঁছলে তার ইজিবাইকের পেছনে থাকা আরেকটি ইজিবাইকের পরিচিত চালক নাম ধরে ডাকতে থাকেন। পরে থামতেই তাকে জনিসহ ছয়জন সড়কের পাশের একটি চা-বাগান সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে শিশু সন্তানের গলায় ছুরি ধরে ওই গৃহবধূকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন তারা। ধর্ষণের একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়ে থাকেন ওই গৃহবধূ। পরে স্থানীয় একটি সড়কের পাশে তাকে ফেলে পালিয়ে যান ধর্ষকেরা। ৯৯৯-এ খবর পেয়ে পুলিশ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আমার ছোট্ট ছেলের গলায় ছুরি ধরেছিল তারা। তখন আমি নিরুপায় হয়ে পড়ি। চিৎকার করতে চাইলে আমাকে তারা ভয়ভীতি দেখায়। পরে একে একে ছয়জন আমাকে ধর্ষণ করে। চারজন পরিচিত আর দুইজন অপরিচিত। আমি ধর্ষণের শিকার হলাম এখন আমার কাছের লোকজন আপসের জন্য চাপ দিচ্ছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’’
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আবুল কাশেম বলেন, ‘‘রাতে পুলিশ অচেতন অবস্থায় এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করা হচ্ছে। ধর্ষণের বিষয়টি পরীক্ষার পরে জানা যাবে। আপাতত তিনি শারীরিকভাবে স্থিতিশীল রয়েছেন।’’
পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, ‘‘৯৯৯-এ খবর পেয়ে পুলিশের একটি টহল দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে অচেতন অবস্থায় এক নারী এবং তার সঙ্গে থাকা একটি শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ওই নারীর জ্ঞান ফিরলে তিনি ঘটনার বিস্তারিত জানান। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’
ঢাকা/নাঈম/রাজীব