অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের অকুণ্ঠ সমর্থন জানানোর বিষয়টি এক ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করেছেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেছেন, ‘তাঁরা (তিনটি দলের নেতারা) বলেছেন...চিফ অ্যাডভাইজারের (প্রধান উপদেষ্টা) নেতৃত্বে আস্থা আছে। এবং তাঁকে অনুরোধ করেছেন যাতে.

.. ওনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশে ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন (অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন) হয়। ওনার নেতৃত্বে অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন।’

আজ শনিবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ কথা বলেন। এ সময় তিনি বলেন, বৈঠকে প্রতিটি দল নিজ নিজ অবস্থান ব্যক্ত করেছে। রাজনৈতিক দলগুলো তাঁকে (প্রধান উপদেষ্টা) পদত্যাগ না করার জন্য অনুরোধ করেছে এবং বলেছে, তাঁর নেতৃত্বেই যেন বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়।


আজ সন্ধ্যা থেকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির (জাতীয় নাগরিক পার্টি) সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলো বিচার, নির্বাচন এবং সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেছে। তিনটি দলের সঙ্গে বৈঠকেই উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান আলী রীয়াজ। তবে বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে বৈঠকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া উপস্থিত থাকলেও এনসিপির বৈঠকে তিনি ছিলেন না।

বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যে বিএনপি নির্বাচন চেয়েছে বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের যে সময়সীমার কথা বলেছেন, সেটিকে সমর্থন করেছে জামায়াত ও এনসিপি। একই সঙ্গে দল দুটি মনে করছে, ইসি সংস্কার না করলে নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত হবে না।

শফিকুল আলম বলেন, জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিচারপ্রক্রিয়া এ মাসেই শুরু হবে বলে বৈঠকে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

ডিসেম্বরে নির্বাচনের যে দাবি বিএনপি করছে, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য কী—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, বিএনপির সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যেই হবে।
দুই উপদেষ্টা এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছে বিএনপি—এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া কী ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘উনি এটা শুনেছেন।’

উপদেষ্টা বদলের কোনো সম্ভাবনা রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘আজকে বিএনপি তাদের কথা বলেছে, আমরা শুনেছি।’

প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের মনোভাব পরিবর্তন হয়েছে কি না—এমন এক প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা তো ওনার এই বিষয়টা পত্রিকায় পড়েছি।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক ড স ম বর ও এনস প বল ছ ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি

‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে ‎বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।

এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

আরো পড়ুন:

‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’

‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন

‎জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।

‎তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।

‎কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।

‎পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”

‎গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”

‎অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, ‎যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”

ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ