মাত্র দেড় সপ্তাহ পর পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ। ঈদকে ঘিরে জমে উঠেছে দিনাজপুরের হিলি বন্দরের মসলা বাজারে বেচাবিক্রি। 

তবে এবারের মসলা বাজারের চিত্র আলাদা। কমেছে সব ধরনের সাদা এলাচের দাম। প্রকার ভেদে কমেছে কেজিতে ৪০০ টাকা। আর জিরার দাম কমেছে কেজিতে ৫০ টাকা। ভারত থেকে আমদানি বৃদ্ধির কারণে দাম কমেছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর ভালো মানের মসলা কিনতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিলিতে ছুটছেন ক্রেতারা। 

সোমবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় হিলি মসলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তিন সপ্তাহের ব্যবধানে সাদা এলাচের দাম কেজিতে ৪০০ টাকা কমে প্রকার ভেদে খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৫ হাজার টাকায়। কালো এলাচ ২০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৬০০ টাকা কেজিতে। দারুচিনি ৪২০ থেকে ৫৬০ কেজি, লবঙ্গ ১ হাজার ৪০০ টাকা ও গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে। 

এছাড়াও দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ টাকা কমে জিরা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫৮০ থেকে ৬০০ কেজি দরে। ঈদকে সামনে রেখে কম দামে মসলা কিনতে পেরে খুশি সাধারণ ক্রেতারাও। 

মসলা কিনতে আসা রেজাউল করিম বলেন, “আমার বাড়ি রাজশাহীতে। সামনে কোরবানির ঈদ। ঈদ বাসায় অনেক মসলার প্রয়োজন হয়। হিলি বাজারে মসলার দাম অনেকটা কম। জিরা, এলাচসহ দারুচিনি কিনলাম।”

বগুড়া থেকে আসা আব্দুল খালেক বলেন, “সামনে ঈদ, তাই হিলি বাজারে আসছি মসলা কিনতে। কিছুদিন আগেও আসছিলাম। তখন জিরাসহ সব মসলার দাম অনেকটা বেশি ছিল। আজ দেখি জিরার দাম কমে গেছে। তাই দুই কেজি কিনলাম।” 

ক্রেতা আকাশ রহমান বলেন, “প্রতিবছর- বিশেষ করে কোরবানির ঈদে সব মসলার দাম অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু এবার দাম কমে গেছে। কম দামে কিনতে পেরে খুশি হলাম।”

হিলি বাজারে মসলা ব্যবসায়ী সিফাত রহমান বলেন, “আমাদের হিলির মসলার মার্কেটে দেশের বিভিন্ন স্থান- রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, রাজশাহী এমনকি ঢাকা থেকে ক্রেতারা আসেন মসলা কিনতে। বিশেষ করে ঈদের সময় ক্রেতারা মসলা বেশি কিনতে আসেন।” 

হিলি বিসমিল্লাহ মসলা ঘরের মালিক শাওন বলেন, “এক থেকে দেড় সপ্তাহ ধরে জিরাসহ প্রায় মসলার দাম কমে গেছে। হিলি বন্দর দিয়ে জিরাসহ সব মসলার আমদানি বেড়েছে, যে কারণে দামও কমে গেছে। ঈদ উপলক্ষে বেচাবিক্রি মোটামুটি শুরু হয়েছে। ঈদের আগমুহূর্তে বেচাবিক্রি আরও বাড়বে।”

হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, “ভারত থেকে এই বন্দরে আমদানি-রপ্তানি স্বাভাবিক আছে। বিশেষ করে মসলা জাতীয় পণ্য এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ ও জিরা। এসব পণ্য আমদানি স্বাভাবিক থাকায় বাজারে তার প্রভাব পড়েছে। এই বন্দরে জিরার আমদানি পর্যাপ্ত হচ্ছে এবং দেশের বাজারে দামও অনেকটা কমে গেছে। আশা করছি আমদানি স্বাভাবিক থাকলে আগামীতে আরও কমবে দাম।”

ঢাকা/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মসল র দ ম র দ ম কম আমদ ন র মসল

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনার ফুটপাত পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে

খুলনা নগরের প্রধান সড়ক ও ফুটপাত এখন পথচারীদের নয়, হকারদের দখলে। ডাকবাংলা থেকে বড়বাজার পর্যন্ত নগরের প্রধান ব্যবসাকেন্দ্রজুড়ে ফুটপাতের ওপর চলছে অস্থায়ী দোকানপাট, পণ্যের পসরা আর ক্রেতাদের ভিড়। ফলে পথচারীদের হাঁটার জায়গা নেই, স্থায়ী দোকানের ব্যবসায়ীরা হারাচ্ছেন ক্রেতা, হচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত।

ডাকবাংলা এলাকা খুলনা নগরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র। এখানে ডাকবাংলা সুপারমার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, খুলনা বিপণিবিতান, দরবেশ চেম্বার, শহীদ সোহরাওয়ার্দী বিপণিবিতান, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেটসহ বড় শপিং কমপ্লেক্স আছে। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের অন্যতম বাজার এটি। কিন্তু এখন এর পুরো এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে ভাসমান ব্যবসায়ীদের হাতে।

হকারদের ভিড়ে দোকান দেখা যায় না

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, ডাকবাংলা মোড় থেকে ক্লে রোড পর্যন্ত ফুটপাতে মালামাল সাজিয়ে বসেছেন হকাররা। স্থায়ী দোকানদাররাও নিজেদের দোকানের সামনের জায়গা দখল করে ব্যবসা করছেন। ভ্যানে করে জামাকাপড়, ফল, গৃহস্থালির পণ্য বিক্রি হচ্ছে ফুটপাতের পর এখন রাস্তার অর্ধেকজুড়ে। পুরোনো যশোর রোড, সদর থানা মোড়, কেডি ঘোষ রোড থেকে হেলাতলা পর্যন্ত একই চিত্র। খালিশপুর চিত্রালি বাজার ও দৌলতপুর বাজারেও ফুটপাতের ওপর খাট বসিয়ে চালা তুলে ব্যবসা চলছে। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে প্রতিদিন।

খালিশপুর চিত্রালি বাজারের দোকান ব্যবস্থাপক মো. আসাদ বলেন, ‘হকারদের কারণে বাইরে থেকে আমাদের দোকান দেখা যায় না। তাদের ব্যবসা জমজমাট, কিন্তু আমাদের বিক্রি কমে গেছে। সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোও ঢেকে গেছে অস্থায়ী দোকানে।’

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) সূত্রে জানা গেছে, নগরের আয়তন ৪৬ বর্গকিলোমিটার, পাকা সড়ক ৬৪১ কিলোমিটার। ফুটপাতের সঠিক হিসাব না থাকলেও অন্তত ২৫ কিলোমিটার ফুটপাত হকারদের দখলে। চলতি বছরে ১২ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দখল হয়ে যায়।

কেসিসির সম্পত্তিবিষয়ক কর্মকর্তা গাজী সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতা ও প্রশাসন সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ না নিলে এটি বন্ধ হবে না। অনেকে নিজের দোকানের সামনের ফুটপাতও ভাড়া দেন হকারদের। সহযোগিতা না পেলে একা আমাদের কিছু করার নেই।’

পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা

সম্পর্কিত নিবন্ধ