কাল বেলা ৩টার পর বাফুফে অনুমোদিত টিকিট বিক্রির প্রতিষ্ঠান টিকিফাই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে অনেকেই অবাক হয়েছেন। বাফুফে গত পরশু রাত ১০টা থেকে আবার টিকিট বিক্রি শুরুর কথা বললেও ওই ওয়েবসাইট থেকে ফুটবলপ্রেমীরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা করেও টিকিট কাটতে পারেননি। অথচ এই অচলাবস্থার মধ্যেই নাকি বাংলাদেশ–সিঙ্গাপুর ম্যাচের ১৮ হাজার ৩০০ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে!

সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একই কথা জানিয়ে আলোচিত ‘অনলাইন টিকিট বিক্রি’র কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেছে বাফুফে। টিকিট নিয়ে এই আলোচনা–সমালোচনার মধ্যেই সিঙ্গাপুর ম্যাচের জন্য দল সাজাচ্ছেন বাংলাদেশ দলের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা। সেই দলে পরীক্ষিতদের ওপরই আস্থা রাখতে চাচ্ছেন তিনি।

১০ জুন এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ফুটবল দল। তার আগে ৪ জুন একই ভেন্যুতে ভুটানের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন রাকিব–মোরছালিনরা। এই দুই ম্যাচ সামনে রেখে ২৭ জনের দল প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছেন কাবরেরা। নাম প্রকাশ না করা শর্তে জাতীয় দলসংশ্লিষ্ট একজন কাল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘২৬ থেকে ২৭ জনের তালিকা হয়ে গেছে। ভুটান ম্যাচে আমরা একটা পরীক্ষা চালাব। এরপর ঠিক করা হবে কারা থাকছেন চূড়ান্ত দলে।’

আরও পড়ুনবাফুফের ডাকে ইতালি থেকে ঢাকায় ফাহামিদুল২ ঘণ্টা আগে

নিয়ম অনুযায়ী, ম্যাচ শুরুর এক দিন আগেই ম্যানেজার্স মিটিংয়ে চূড়ান্ত স্কোয়াড ম্যাচ কমিশনারের কাছে জমা দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে ভুটান ম্যাচের পরও সিঙ্গাপুর ম্যাচের জন্য ২৩ জনের চূড়ান্ত দল ঠিক করতে তিন থেকে চার দিন সময় পাবেন কাবরেরা।
৩০ মে থেকে প্রস্তুতি ক্যাম্প শুরু করবে বাংলাদেশ।

প্রাথমিক দল ঘোষণা হতে পারে আজ-কালের মধ্যে। সব ঠিক থাকলে বাংলাদেশের মাটিতে প্রথম ম্যাচ খেলতে হামজা চৌধুরী ঢাকায় পা রাখবেন ২ বা ৩ জুন। ৪ জুন আসার কথা শমিত সোমের। ক্যাম্পের প্রথম দিন থেকেই থাকবেন ফাহামিদুল ইসলাম। ভুটান ম্যাচে হামজা ও শমিতের খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

শামিত সোম.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আরেকটি সংকট ভুয়া সমন্বয়ক: দুদক চেয়ারম্যান

ভুয়া সমন্বয়কদের বিষয়ে সতর্ক করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর হঠাৎ করে একটি বাহিনীর আবির্ভাব ঘটেছিল, যেটাকে বলা হতো সিক্সটিন ডিভিশন। এখন আরেকটি সংকট হলো ভুয়া সমন্বয়ক। আপনাদের এখনই প্রতিরোধ শুরু করতে হবে, নইলে ভবিষ্যতে বড় সংকট হবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল সার্কিট হাউস মিলনায়তনে ‘দুর্নীতি ও হয়রানিমুক্ত নাগরিক সেবা ও সেবার মানোন্নয়নে করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদক চেয়ারম্যান এ কথা বলেন। বরিশাল বিভাগে কর্মরত সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের এখন বড় সুযোগ সামনে এসেছে। কারণ, একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে, যার কোনো রাজনৈতিক পক্ষপাত নেই। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না থাকলে আমাদের কাজের পরিবেশ অনেক ভালো হয়।’
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকার পালিয়ে যায়, সরকার চলে যায়। কিন্তু আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অবক্ষয় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।’ তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ সেবা নিশ্চিত করাই দুদকের মূল লক্ষ্য। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’

মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার মো. রায়হান কাওসার। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মো. মঞ্জুর মোরশেদ, জেলা প্রশাসক মো. দেলোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুদেকর বিভাগীয় পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার।

মতবিনিময় সভায় দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমরা অনেক সময় বলি, প্রশাসন রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। কিন্তু আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, বিষয়টি উল্টো। আমরাই বরং রাজনীতিবিদদের কাছে যাই। যদি আমরা একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে পারি, তাহলে পরিবর্তন আনা খুব সহজ হবে।’

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘কারও পক্ষ নেওয়া আমাদের জন্য ভালো নয়। আমাদের দায়িত্ব নিরপেক্ষ সেবা দেওয়া। আমরা সেই দায়িত্ব নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি একটা স্ট্যান্ড নিতে পারি, স্ট্যান্ড নিতে পারলে আমরা পরিবর্তন আনতে পারি। এই পরিবর্তন আমাদের এবং আপনাদের পক্ষে আনা খুব সহজ। আমার মনে হচ্ছে, আমরা একটা সুবর্ণ সুযোগ পাচ্ছি।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আগামী নির্বাচন একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতিকে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেখানে আমাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে।’

মতবিনিময় সভায় দুদকের কাজের ধরন নিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের উচিত ভবিষ্যতের দুর্নীতি প্রতিরোধে বেশি কাজ করা। আগের দুর্নীতি নিয়ে কম সময় ব্যয় করা দরকার। আমরা শতভাগ সময় অতীতের দুর্নীতি তদন্তে ব্যয় করি, এটা আমাদের ভুল। এই ভুল থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ