দেশের রাজনীতিতে এখন আলোচিত বিষয় অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ কত দিন আর নির্বাচন কবে হবে। যদিও ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে বারবার বলে আসছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই আলোচনার মধ্যেই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চেয়ে ফেসবুকে প্রচার চলছে। অনেক বাণিজ্যিক ফেসবুক পেজ তাদের লাইক ও ফলোয়ার বাড়াতে এই প্রচারণার সুযোগ নিয়েছে। রাজনৈতিক বার্তার প্রচারকারীদের মধ্যে রয়েছেন ফেসবুক পেজের মাধ্যমে খাবার, প্রসাধনী, পোশাক বিক্রির বিজ্ঞাপনদাতারাও। ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার নজরদারি ঘাটতির সুযোগে নীতিমালা লঙ্ঘন করেই তাঁরা কাজটি করছে।

‘তাঁরাও ড.

ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য চান, শুধু ফেসবুকে “লাইক” বাড়াতে’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব বিষয় তুলে ধরেছে তথ্য যাচাইয়ের প্ল্যাটফর্ম ডিসমিসল্যাব। তথ্য ব্যবস্থায় প্রযুক্তির প্রভাব নিয়ে কাজ করা ডিজিটালি রাইটের তথ্য যাচাইয়ের প্ল্যাটফর্মটি গতকাল মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকের এই প্রচার কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নয়, বরং খাবার, প্রসাধনী, পোশাক কিংবা ব্যক্তিগত ভ্লগের প্রচারণা। এসব বিজ্ঞাপনে অধ্যাপক ইউনূসের নাম ও ছবি ব্যবহার করে ‘লাইক’ দেওয়া বা ‘ফলো’ করার আহ্বান জানানো হয়।

ডিসমিসল্যাব তাদের অনুসন্ধানে দেখেছে, চলতি বছরের এপ্রিলের শুরু থেকে মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত অন্তত ৪৭টি ফেসবুক পেজ এ ধরনের ৫৫টি বিজ্ঞাপন দিয়েছে। প্রতিটি পেজের সর্বশেষ ২০টি পোস্ট পর্যালোচনা করে তাদের নিয়মিত কার্যক্রম দেখা হয়। এতে দেখা যায়, ৯০ শতাংশ পেজ আগে কোনো রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে পোস্ট করেনি।

যেভাবে ছড়ায় এ স্লোগান

ডিসমিসল্যাবের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ড. ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় দেখতে চাই’ স্লোগানটি ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি গঠিত ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক নেতা সারজিস আলম গত ২৯ মার্চ নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখেন, ‘প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মতো একজন স্টেটসম্যানকে পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশের একটি নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা আমার আজীবন থাকবে।’

সারজিসের এই পোস্ট পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনার জন্ম দেয় এবং বিষয়টি ভাইরাল হয়। ডিসমিসল্যাবের অনুসন্ধানে দেখা যায়, কিছু ফেসবুক পেজ এই আলোচনার সুযোগ নিতে নিজেদের পেজে একই ধরনের বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করে।

ঢাকাভিত্তিক রেস্তোরাঁ ‘দ্য টেস্টি অ্যাপ্রোনের’ ফেসবুক পেজে ১৩ ও ১৪ মে প্রচারিত দুটি বিজ্ঞাপনের একটির বার্তা ছিল, ‘আপনি যদি চান ড. ইউনূস পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকুক, তাহলে ডান পাশে লাইক অপশনে ক্লিক করুন’। বিজ্ঞাপনের নিচে ডান পাশে একটি ‘লাইক’ বাটন দেখা যায়। যদিও ১৮ মে পর্যন্ত তাদের সর্বশেষ ২০টি পোস্টের কোনোটিতেই রাজনৈতিক বিষয় নেই।

ডিসমিসল্যাব বলছে, ৪৭টি পেজের মধ্যে ৩০টি অর্থাৎ প্রায় ৬৪ শতাংশই খাবার, প্রসাধনী, পোশাক, স্বাস্থ্যসেবা বা মৌসুমি ফলের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। আটটি ছিল ব্যক্তিগত বা ভ্লগ ধরনের পেজ। আর দুটি নিজেদের মিডিয়া আউটলেট হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। বাকি পেজগুলো ‘পাবলিক ফিগার’ ও ‘ডিজিটাল মার্কেটিং’ হিসেবে তালিকাভুক্ত।

প্রধান উপদেষ্টাকে পাঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চেয়ে পোস্ট দেওয়া ‘ন্যাচারাল হেলথ বিডি’, ‘আমবাজার’, ‘মায়ের দোয়া অ্যাগ্রো’ নামের পেজগুলোর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। এমনকি তারা আগে কোনো রাজনৈতিক প্রচারও চালায়নি।

ডিসমিসল্যাব বলছে, এই ৪৭টি ফেসবুক পেজের গড় লাইক ৩৫ হাজারের বেশি; অনুসারী ৩৭ হাজারের বেশি। এদের মধ্যে ২৪টি পেজ পরিচালিত হয় বাংলাদেশ থেকে, একটি ইতালি থেকে এবং একটি পেজ যৌথভাবে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে পরিচালিত হয়।

ডিসমিসল্যাব এসব পেজের ছয়জন অ্যাডমিনের সঙ্গে কথা বলেছে। তাঁদের চারজন বলেছেন, বিজ্ঞাপনগুলো নিজেরা তৈরি করেননি, বিজ্ঞাপন সংস্থাকে প্রচারণার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। একজন জানান, তিনি নিজেই বিজ্ঞাপন তৈরি করেছেন লাইক ও ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য। আরেকজন বলেন, একটি ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। বিজ্ঞাপনের বিষয়বস্তু তিনি আগে জানতেন না। তিনি বলেন, তাঁরা ফলোয়ার বাড়াতে বলেছিলেন, কিন্তু বিজ্ঞাপন কী হবে তা ওই প্রতিষ্ঠানই সিদ্ধান্ত নেয়।

‘ইয়াতি ডিজিটাল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম ফারুক ডিসমিসল্যাবকে বলেন, এ ধরনের বিজ্ঞাপনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে পেজের ফলোয়ার বাড়ানো। পেজের গ্রহণযোগ্যতা বিচার করা হয় ফলোয়ার সংখ্যা দিয়ে। বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর উচিত বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করা।

আরও পড়ুনপ্রধান উপদেষ্টা, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে জড়িয়ে সবচেয়ে বেশি ভুল তথ্য: ডিসমিসল্যাব২৬ জানুয়ারি ২০২৫

মেটার নজরদারি ঘাটতি

ফেসবুক বিজ্ঞাপনে রাজনৈতিক স্লোগান আর পরিচিত ব্যক্তিত্বদের ছবি ব্যবহার করে মানুষের আগ্রহ বাড়ানোর এই কৌশল নতুন কিছু নয়। ডিসমিসল্যাব আগেও এ ধরনের কৌশলের নজির দেখেছে।

মেটার নীতিমালা অনুযায়ী, রাজনৈতিক, নির্বাচনসংক্রান্ত বা সামাজিক ইস্যুভিত্তিক বিজ্ঞাপনগুলোতে ডিসক্লেইমার (স্বচ্ছতার ঘোষণা) থাকা আবশ্যক। যেখানে বিজ্ঞাপনদাতার পরিচয় এবং তাঁর পরিচয় যাচাই সম্পন্ন হয়েছে তা উল্লেখ করতে হয়। এই বিজ্ঞাপনগুলো মেটার অ্যাড লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত থাকে, যেখানে দেখা যায় বিজ্ঞাপনটি কোথায় এবং কার কাছে প্রদর্শিত হয়েছে, কত দিন ধরে চলেছে এবং কত অর্থ ব্যয় হয়েছে। এসব শর্ত পূরণ না করলে বিজ্ঞাপনটি প্রচার অযোগ্য বিবেচিত হয় এবং সরিয়ে ফেলার কথা।

‘ড. ইউনূসকে পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় দেখতে চাই’—এ ধরনের স্লোগানসহ যে বিজ্ঞাপনগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো মেটার সংজ্ঞা অনুযায়ী রাজনৈতিক আধেয় (কনটেন্ট) হিসেবে গণ্য হওয়ার কথা। কিন্তু ডিসমিসল্যাবের পর্যালোচনা করা ৫৫টি বিজ্ঞাপনের একটিতেও মেটার নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ডিসক্লেইমার ছিল না। এসব বিজ্ঞাপনের মধ্যে ৪৩টি পর্যালোচনার সময় পর্যন্ত সক্রিয় ছিল। আর ডিসক্লেইমার না থাকায় ১২টি বিজ্ঞাপন মেটা সরিয়ে দেয়।

ডিসমিসল্যাব বলছে, বাংলায় লেখা বিজ্ঞাপন, বিশেষ করে যেগুলো সরাসরি রাজনৈতিক পেজ থেকে নয় বরং ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক পেজ থেকে আসে, সেগুলো শনাক্ত করার ক্ষেত্রে মেটার এখনো বড় ঘাটতি রয়ে গেছে।

আরও পড়ুনফেসবুকে অপতথ্য ছড়ালে তার দায় কে নেবে৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ বছর র জন য বছর ক ষমত য় ফ সব ক প জ ফল য় র ব ড় র জন ত ক এ ধরন র ইউন স র একট

এছাড়াও পড়ুন:

মৌলভীবাজারে সম্প্রীতির উৎসব মণিপুরি মহারাসলীলা

বর্ণাঢ্য আয়োজন আর বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মণিপুরি সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শ্রী কৃষ্ণের মহারাসলীলা।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে মণিপুরি অধ্যূষিত জনপদ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুরে এ উৎসব উদযাপিত হচ্ছে। কমলগঞ্জের মাধবপুর শিব বাজারের জোড়ামণ্ডপ এলাকায় রাখাল নৃত্য ও রাতে রাসনৃত্য এ উৎসবের অন্যতম মূল আকর্ষণ। 

পাশাপাশি আদমপুরে মৈতৈই মণিপুরি সম্প্রদায় মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্সে এ উৎসব উদযাপন করছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) ভোরে শেষ হবে শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা। উৎসব উপলক্ষে উভয়স্থানে মেলা বসেছে। রাস উৎসবে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার ভক্তসহ দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড়ে মুখরিত হবে কমলগঞ্জের মণিপুরি জনপদ। 

এ উপলক্ষে উভয় জায়গায় বসবে বিরাট মেলা। রাসলীলা উপলক্ষে এরইমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এলাকায় সাজ সাজ রব বিরাজ করবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

বৃহত্তর সিলেটের আদিবাসী মণিপুরি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী মণিপুরি মহারাসলীলা উপজেলার মাধবপুর শিববাজার জোড়া মণ্ডপে মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের আয়োজনে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি সম্প্রদায়ের ১৮৩তম এবং আদমপুর মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে মৈতৈ মণিপুরি সম্প্রদায়ের ৪০তম মহারাস উৎসব হবে এবার।

কমলগঞ্জের মণিপুরি অধ্যুষিত গ্রাম ও পাড়াগুলোতে বইছে উৎসবের হাওয়া। আগামী বুধবার দুপুরে উভয় স্থানে গোষ্ঠলীলা বা রাখালনৃত্য এবং রাতে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা, গুণীজন সংবর্ধনা ও রাসনৃত্য।

উৎসবস্থল মাধবপুরের শিববাজার উন্মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণে হবে গোষ্ঠলীলা বা রাখাল নৃত্য। রাতে জোড় মণ্ডপে রাসের মূল প্রাণ মহারাসলীলা। এছাড়া মণিপুরি রাস উৎসব উপলক্ষে বুধবার বিকাল ৫টা ও সন্ধ্যা ৬টায় মণিপুরি ললিতকলা একাডেমি মিলনায়তনে মণিপুরি থিয়েটারের আয়োজনে ‘নুংশিপি’ চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।

অপরদিকে উৎসবস্থল আদমপুরেও থাকবে যথারীতি রাখাল নৃত্য ও রাসলীলা। তবে মণিপুরি বিষ্ণুপ্রিয়া ও মণিপুরি মৈতৈ এরা আলাদা স্থানে আয়োজন করলেও উৎসবের অন্তঃস্রোত, রসের কথা, আনন্দ-প্রার্থনা সবই একই। উৎসবের ভেতরের কথা হচ্ছে বিশ্বশান্তি, সম্প্রীতি ও সত্যসুন্দর মানবপ্রেম।

আলাপকালে মণিপুরি ললিতকলা একাডেমির উপ-পরিচালক (অ: দা:) প্রভাস চন্দ্র সিংহ জানান, মণিপুরের রাজা ভাগ্যচন্দ্র মণিপুরে প্রথম এই রাসমেলা প্রবর্তন করেছিলেন।

মণিপুরের বাইরে ১৮৪২ সালে কমলগঞ্জের মাধবপুরে প্রথম মহারাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। রাস উৎসবে সকালে ‘গোষ্ঠলীলা’ বা ‘রাখালনৃত্য’ হয়। গোধূলি পর্যন্ত চলে এই রাখালনৃত্য। রাত ১২টা থেকে শুরু হয় রাস উৎসবের মূল পর্ব শ্রীশ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা অনুসরণ।

মণিপুরিদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের পোশাকে নেচে-গেয়ে কৃষ্ণবন্দনায় ভোর পর্যন্ত চলে রাসলীলা। রাসনৃত্যে শ্রীকৃষ্ণ, রাধা ও প্রায় ৫০ জন গোপী থাকেন। গোপীর সংখ্যা অনেক সময় কমবেশি হয়।

একটি রজনীকে কেন্দ্র করে মণিপুরিদের সংস্কৃতির এক বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হয়। রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ও আদমপুরের মণিপুরি পাড়া সমুহে চলে প্রস্তুতি ও উৎসবের আমেজ। রং ছড়িয়ে মন্ডপগুলোকে সাজানো হচ্ছে নতুন সাজে। 

রাসের দিন দুপুরে উৎসবস্থল মাধবপুরের শিববাজার উন্মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণে হবে গোষ্ঠলীলা বা রাখাল নৃত্য। রাতে জোড় মন্ডপে রাসের মূল প্রাণ মহারাসলীলা। রাস উৎসবে মণিপুরি সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশাপাশি অন্যান্য জাতি, ধর্মের হাজার হাজার লোক মেতে উঠবে আনন্দ-উৎসবে। উৎসব উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ ভারত থেকেও মণিপুরি সম্প্রদায়ের লোকজন ছুটে আসেন।

মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, রাস উপলক্ষে আমাদের পাড়ায় পাড়ায় প্রস্তুতি চলছে। প্রতি বছরের মতো ঐতিহ্য ও ধর্মীয় ভাবধারায় মাধবপুর জোড়ামণ্ডপে ১৮৩তম শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। 

রাসলীলা মণিপুরিদের আয়োজন হলেও জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের আগমনে মানুষের মানবিক মূল্যবোধ বৃদ্ধির পাশাপাশি অপরাপর সকল জাতিগোষ্ঠীর মাঝে সম্প্রীতির বাঁধনে বেধে চলেছে এই উৎসব রাসলীলা, গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের প্রেমপ্রীতির ঐতিহ্য দর্শন।

কমলগঞ্জ থানার ওসি আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির জানান, নির্বিঘ্নে মণিপুরি মহারাসলীলা উপলক্ষে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। 

আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তার জন্য দুই জায়গাতেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে পুলিশ ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। উৎসব নির্বিঘ্নে করার লক্ষ্যে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও র‌্যাবের টহলও থাকবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, ঐতিহ্যবাসী মণিপুরি রাসোৎসব উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে আইনশৃংখলা বিষয়ক সভা করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

ঢাকা/আজিজ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ