কুমিরের খামারে পাত্র-পাত্রীর প্রথম দেখা
Published: 29th, May 2025 GMT
আট বছর পর নাটকে ফিরলেন নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল। এবারের ঈদ উপলক্ষে সিএমভির ব্যানারে তিনি নির্মাণ করেছেন বিশেষ নাটক ‘চুপকথা’। এতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব ও নাজনীন নীহা।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নাটকের গল্প লিখেছেন গীতিকবি মহসীন মেহেদী। চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন উজ্জ্বল নিজেই। সিনেমাটোগ্রাফিতে ছিলেন হৃদয় সরকার। শ্রীমঙ্গল, জাফলং, গাজীপুর ও ঢাকার বিভিন্ন মনোরম লোকেশনে হয়েছে শুটিং, যা শেষ হয়েছে ২৭ মে।
নির্মাতা উজ্জ্বল বলেন, ‘গল্পটা প্রেমের, তবে তার সঙ্গে সমাজ, প্রকৃতি ও শ্রেণি বিভাগের নানা প্রসঙ্গ এসেছে, যেমনটা আমার কাজে সব সময়ই থাকে। নাটক বানাতে গিয়ে মনে হয়েছে একরকম সিনেমাই বানিয়ে ফেলেছি।’
‘চুপকথা’-তে উঠে এসেছে উচ্চবিত্ত শ্রেণির প্রেম, জীবনদর্শন ও বাস্তবতার বিভিন্ন দিক। গল্পের শুরুতেই নাটকের দুই পাত্র–পাত্রীর দেখা হয় একটি কুমিরের খামারে, যা হয়ে ওঠে কাহিনির মোড় ঘোরানো মুহূর্ত।
প্রথমবারের মতো অন্য কারও গল্পে নির্মাণ করলেন উজ্জ্বল। তিনি জানান, ‘গল্পটা আমাকে এতটাই টেনেছে যে কাজটি করতে বাধ্য হয়েছি। নাটকে ফিরে মনে হচ্ছে, নিজের জায়গায় আবার ফিরলাম। আমি মনে করি, এখনো নাটকের একটা বিশাল দর্শকশ্রেণি রয়েছে, যাদের জন্য কিছু করাই উচিত।’
২০১৭ সালের ঈদে প্রচারিত ‘দাস কেবিন’ ছিল উজ্জ্বলের সর্বশেষ নাটক, যার বিষয়বস্তু ছিল সাম্রাজ্যবাদ ও মানুষের মানসিক কাঠামো। এরপর দীর্ঘ বিরতি শেষে তিনি আবারও নাটকে ফিরলেন। এর মধ্যে তিনি নির্মাণ করেছেন প্রশংসিত দুই চলচ্চিত্র ‘ঊনপঞ্চাশ বাতাস’ ও ‘বনলতা সেন’।
প্রযোজক এস কে সাহেদ আলী জানান, ‘এই ঈদে “চুপকথা” সিএমভির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নাটকগুলোর একটি। নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের ফেরা আমাদের জন্য আনন্দের। নাটকটি চাঁদরাত থেকে উন্মুক্ত হবে সিএমভির ইউটিউব চ্যানেলে।’ এ ছাড়া ঈদ আয়োজনে প্রতিষ্ঠানটির ব্যানারে আরও প্রায় এক ডজন নাটক প্রকাশিত হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।