পাবনায় সমালোচনার মুখে দুই মুক্তিযোদ্ধার নামে স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম পুনর্বহাল
Published: 29th, May 2025 GMT
তীব্র সমালোচনার মুখে শহীদ অ্যাডভোকেট আমিনউদ্দিন স্টেডিয়াম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল সুইমিংপুলের নাম পুনর্বহাল করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যুগ্ম সচিব মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার জারি করা ওই চিঠিতে নাম দুটি পুনর্বহাল করে দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পাবনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো.
জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘চিঠি এখনো হাতে পাইনি, তবে ফেসবুকে দেখেছি। চিঠি হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এর আগে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন জেলার স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। তাতে পাবনার এই দুটি স্থাপনার নাম পরিবর্তন করে শুধু ‘জেলা স্টেডিয়াম’ ও ‘জেলা সুইমিংপুল’ করা হয়। এর প্রতিবাদে পাবনাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।
নাম পুনর্বহালের ঘোষণার আগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে সচেতন নাগরিক সমাজ। কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তাঁরা নাম পুনর্বহাল না হলে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুনপাবনায় দুই মুক্তিযোদ্ধার নামে স্টেডিয়াম ও সুইমিংপুলের নাম পরিবর্তন, স্থানীয়দের ক্ষোভ২৫ মে ২০২৫শহীদ আমিনউদ্দিনের ছেলে সদরুল আমিন বলেন, ‘১৯৭১ সালের মতো পাবনার মানুষ আবারও অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। সরকারকে বাধ্য করা হয়েছে শহীদদের সম্মান রক্ষায়।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুলের ছেলে নুর ইসলাম বলেন, ‘নাম পরিবর্তনের ঘটনায় আমরা গভীরভাবে আহত হয়েছিলাম। কর্তৃপক্ষ শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছে।’
পাবনা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ মাসুম বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ জাতির আত্মার অংশ। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা মানেই জাতিকে অসম্মান করা। ভবিষ্যতে সরকারকে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আইপিএল বেটিংয়ে ১৬ বছর বয়সী ছেলে খোয়াল ৫০ হাজার রুপি, বাবার প্রশ্ন, বিসিসিআই কি করে
আইপিএল বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি লিগ। তবে জনপ্রিয় হওয়ায় দুশ্চিন্তার জায়গাও আছে। অনলাইনে তথাকথিত ফ্যান্টাসি প্ল্যাটফর্মে আইপিএল নিয়ে দেদার বেটিং চলছে, আর এই অনলাইন বেটিংয়ের প্রচারণায় রয়েছেন তারকা ক্রিকেটাররাই।
উঠতি বয়সী ক্রিকেটপ্রেমীরা জড়িয়ে পড়ছেন অনলাইন বেটিংয়ে এবং অনেক অর্থও তাঁরা খোয়াচ্ছেন। ব্যাপারটি কারও কারও চোখে ‘নীরব মহামারি’। ফোনে বেটিংয়ের অ্যাপস চালু করে এতে মনোযোগ দিতে গিয়ে শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ও মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে।
ভারতের বার্তা সংস্থা আইএএনএস এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কিছু মা–বাবার সঙ্গে কথা বলেছে। দিল্লির ৫৫ বছর বয়সী মণীষ আইএএনএসকে জানান, তাঁর ১৬ বছর বয়সী ছেলে অনলাইন বেটিংয়ে ৫০ হাজার রুপি খুইয়েছে। এরপর তিনি ছেলের ফোন থেকে অনলাইনে বেটিংয়ের তিনটি অ্যাপস মুছে ফেলেন। মণীষ প্রশ্ন রেখেছেন অনলাইন বেটিংয়ের প্রচারণা চালানো তারকা ক্রিকেটারদের কাছে, ‘এটা হৃদয়বিদারক। ক্রিকেট এত দিন ছিল প্রেরণার ও খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার। আমার নায়কেরা কেন এমন কিছুর প্রচারণা চালাচ্ছেন, যেটা খুব বিপজ্জনক।’
আরেকজন অভিভাবক হতাশা প্রকাশ করেছেন এভাবে, ‘বিসিসিআই অর্থ আয়ে ব্যস্ত, আমাদের সন্তানদের কী হচ্ছে, সেটা তারা পাত্তা দেয় বলে মনে হয় না। শীর্ষসারির ক্রিকেটাররা এসব অ্যাপসের প্রচারণা চালাচ্ছে, কিন্তু বোর্ড তাদের নিবৃত্ত করছে না। এমনকি কিছু (বেটিং) প্ল্যাটফর্ম বড় টুর্নামেন্টের স্পনসরও হচ্ছে। তারা স্মার্ট—এটাকে তারা বলে ফ্যান্টাসি খেলা, কিন্তু এটার সঙ্গে অর্থ জড়িত এবং দ্রুত আয়ের একটা পথ ভেবে অল্প বয়সীরা এতে আসক্ত হয়ে পড়ছে।’
আরও পড়ুনযে পাঁচ কারণে কোহলি স্বপ্নপূরণের খুব কাছে৫ ঘণ্টা আগেসাম্প্রতিক সময়ে একটি পরিবার আইপিএলের ম্যাচ দেখতে গিয়ে খেয়াল করে, অনেক দর্শক ফোনে সবার সামনেই বেটিং করছেন, ‘আমরা দেখেছি কিশোররা স্টেডিয়াম থেকে ফোনে কল করে লাইভ বেটিং করছে। সংখ্যায় তারা প্রচুর।’
ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা মাঝেমধ্যেই অবৈধ বেটিংয়ের চক্র ধরতে অভিযান চালায় এবং সফলও হয়। কিন্তু ফ্যান্টাসি গেমিংয়ের ছদ্মবেশে মুঠোফোনের বেটিং অ্যাপস নিয়মনীতি ফাঁকি দিয়ে কম বয়সী কিংবা পরিণত ব্যক্তিদেরও ঝুঁকিপূর্ণ আচরণকে উৎসাহিত করছে।
সমালোচকেরা মনে করেন, বিসিসিআইকে এ নিয়ে অবশ্যই নৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) এখনো চুপ করে থাকায় ভারতের জনমনে প্রশ্ন জাগার পাশাপাশি সন্তানদের নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায়ও পড়েছে। বেটিংয়ের এসব প্ল্যাটফর্মে আইপিএলের বড় তারকাদের প্রচারণা চালাতে দেখা যায়।
আইএএনএস জানিয়েছে, ভারতে এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। সমর্থক ও অভিভাবকদের চাওয়া, বিসিসিআই এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেবে; তথাকথিত এসব গেমিং প্রতিষ্ঠানগুলোর স্পনসর ও এনডোর্সমেন্ট বাতিল করবে। ক্রিকেটাররা আরও দায়িত্বশীল হতে এসবের প্রচারণা যেন না চালান, সেটাও তাদের প্রত্যাশা।
আরও পড়ুনআইপিএলে জরিমানাও কোটি টাকা, বড় ক্ষতি কার২৯ মে ২০২৫