প্রাচীন ছায়াপথের গভীরের ছবি তুলেছে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ
Published: 30th, May 2025 GMT
পৃথিবী থেকে প্রায় ৪৫০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত অ্যাবেল এস১০৬৩ নামের এক ছায়াপথের গুচ্ছের ছবি তুলে দারুণ সাড়া ফেলেছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। শুনতে অবাক লাগলেও এই ছবি তুলতে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপটির ১২০ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার তথ্যমতে, জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তোলা একক কোনো লক্ষ্যবস্তুর সবচেয়ে গভীরতম দৃশ্য এটি। প্রাচীন ছায়াপথের ঘূর্ণায়মান আলোর দৃশ্য থাকায় এই ছবিতে মহাবিশ্বের সবচেয়ে গভীরতম স্থান দেখা যাচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, ছবিটির মাধ্যমে মহাবিশ্ব শুরুর সময়ে কেমন ছিল, সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। দূরবর্তী স্থানের দিকে তাকানোর অর্থ সময়ের দিকে ফিরে তাকানো। এসব ঘটনা মহাজাগতিক ভোর নামে পরিচিত। সেই সময় প্রথম দিককার ছায়াপথ কীভাবে গঠিত হয়েছিল, তার ধারণা এই ছবিতে আছে। ধারণা করা হচ্ছে, মহাবিশ্বের বয়স তখন ছিল মাত্র কয়েক লাখ বছর।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপে ধারণ করা দৃশ্যগুলোতে থাকা বিভিন্ন নিয়ার ইনফ্রারেড আলোক তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে যুক্ত করে একটি ছবি তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিক মহাবিশ্বের ছায়াপথ কত বড় ছিল সে বিষয়ে জানতে ছবিতে থাকা গ্যালাক্সি গুচ্ছের চারপাশের আলো পর্যবেক্ষণ করছেন বিজ্ঞানীরা।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি