শেরপুরের নালিতাবাড়ির গারো পাহাড়ঘেরা এলাকায় এক সপ্তাহের বেশি সময় চলছে সজল ও বুবলী অভিনীত নতুন একটি ছবির শুটিং। সেখানে দুই দফায় বন্য হাতির আক্রমণের ঘটনা ঘটে। এক দল হাতির আক্রমণে শুটিং সেটের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হাতির আক্রমণের সময় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ছোটাছুটি করতে গিয়ে ছবির কয়েকজন অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলী আহত হয়েছেন। খবরটি শোনার পর বন বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শুটিংয়ের অনুমতির নিয়ে প্রশ্ন তোলেন অভিনেত্রী জয়া আহসান। ‘গারো পাহাড়ে নতুন সিনেমার শুটিং, বিঘ্ন ঘটাচ্ছে বন্য হাতির দল’ শিরোনামের একটি নিউজ কার্ড শেয়ার করে ফেসবুকে নিজের মতামত তুলে ধরেন জয়া আহসান। ফেসবুকে দেওয়া জয়ার পোস্ট ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মনে করেন ছবির পরিচালক রাশেদা আক্তার।

বুবলী ও সজল। কোলাজ.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রেতা বলছেন দাম চড়া বিক্রেতার ভাষ্য কম

নওগাঁর মহাদেবপুর হাটে কোরবানির জন্য গরু কিনতে এসেছিলেন সদরের দয়ালের মোড় এলাকার এমদাদুল হক। তিনি বলছিলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম বেশি মনে হচ্ছে। মাঝারি সাইজের একটি গরুর জন্য ৯০ হাজার থেকে লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য একটু চাপই হয়ে যাচ্ছে।’
ঈদুল আজহা সামনে রেখে জেলার বিভিন্ন হাটে জমে উঠেছে পশুর বেচাকেনা। গরু, ছাগল ও মহিষ নিয়ে আসছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। শনিবার সরেজমিন একাধিক হাট ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। ছোট-বড় আকারের প্রচুর গরু বিক্রির জন্য আনা হয়েছে। রয়েছে ছাগলসহ কোরবানিযোগ্য অন্য পশুও।
বিক্রেতারা জানান, ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। বড় গরু কেউ কিনতে চাইছেন না। বড়গুলোর ক্রেতা কম থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা। গরুর সরবরাহ বেশি হওয়ায় 
খরচের তুলনায় তেমন দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তাদের। যদিও গরুর দাম বেশি অভিযোগ করে ক্রেতা বলছেন, এখন গরু কিনলে লালনপালন কষ্টসাধ্য। ঈদের দু-এক দিন আগে কিনলে তাদের সুবিধা হবে। শেষ দিকে পশু কেনার অপেক্ষায় আছেন তারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জেলায় ৩৮ হাজার ৫৭৩টি খামারে দেশি, অস্ট্রেলিয়ান, ফ্রিজিয়ানসহ বিভিন্ন জাতের ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৩২০টি গবাদি পশু লালনপালন করা হয়েছে। ঈদে চাহিদা রয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩৭টি। পশু বেচাকেনার জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী ৩৬টি হাট বসানো হয়েছে। উদ্বৃত্ত পশু ব্যবসায়ীরা অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করবেন।
জেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট মান্দার চৌবাড়িয়া, সতিহাট, নিয়ামতপুর উপজেলার ছাতড়া, মহাদেবপুরের মাতাজি, রানীনগরের আবাদপুকুর ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকে পশু নিয়ে আসছেন খামারি, প্রান্তিক চাষি ও বেপারিরা। দুপুর পেরোতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় হাটগুলো। ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে দরদাম করে কিনছেন পছন্দের পশু। ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদা বেশি। ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীও এসব হাটে আসছেন।
জেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট চৌবাড়িয়ায় এসেছিলেন মান্দার গণেশপুর থেকে খামারি কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, গোখাদ্য, খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি গরু লালনপালনে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। সে তুলনায় দাম বলছে না। বড় গরুর দাম কম দিতে চাচ্ছেন ক্রেতা। ফিরে গেলে খরচ আছে। তাই কিছুটা লোকসানেও গরু বিক্রি করে দেবেন তিনি।
আরেক বিক্রেতা মোজাম্মেল হকের ভাষ্য, চারটি গরু বাড়িতে লালনপালন করে বিক্রি করতে নিয়ে এসেছেন তিনি। কিন্তু দামে হচ্ছে না বলে বিক্রি করতে পারছেন না। বড় গরুর দামই বলছেন না অনেকে। খরচ বাড়লেও দাম আগের মতোই। তাঁর মতো কাজী আব্দুল কাদের হীরার একটি গরু ১ লাখ ৪০, আরেকটি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দাম ওঠে। ফিরিয়ে নিয়ে গেলে খরচ বাড়বে বলে বাধ্য হয়ে বিক্রি করে দেন। আরেকটি দেড় লাখ টাকা চাইলেও ক্রেতারা বিভিন্ন দাম বলছেন। গোখাদ্যের দাম বেশি থাকায় ততটা লাভ হয়নি বলে দাবি তাঁর।
বিক্রেতার এমন দাবির সঙ্গে একমত নন ক্রেতা। আবুল কাসেম বলেন, হাটে প্রচুর দেশি গরু উঠেছে। দাম বেশি মনে হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা বেশি চাওয়া হচ্ছে। লুৎফর রহমান নামে আরেক ক্রেতার ভাষ্য, ‘বাড়িতে অনেক সময় কোরবানির গরু রাখার জায়গা থাকে না। তাই ঈদের দু-তিন দিন আগেই পশু কিনি। এখন ঘুরে ঘুরে দরদাম করছি।’
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মাহফুজার রহমান বলেন, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হাটে নিয়োজিত রয়েছে ভেটেরিনারি টিম। প্রতারণা ও অতিরিক্ত দামের বিরুদ্ধে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নওগাঁ সীমান্তবর্তী হওয়ায় যাতে ভারতীয় গরু না আসে, সে জন্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। খামারিরা লাভবান হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক উপায়ে পশু লালনপালনে প্রচার চালানো হয়েছে। পশুর সংকট হবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ