মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার টেংরাবাজার-পতনঊষার সড়কের দুই কিলোমিটার অংশের কারণে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয় অধিবাসী। খানা-খন্দে ভরা সড়কের এ অংশ সংস্কারে একটি প্রকল্প হাতে নিলেও তা যেন শেষ হতে চাইছে না।
টেংরাবাজার-পতনঊষার সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামতের জন্য ১১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প শুরু হলেও এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। এই সড়কের কারণে তিনটি উপজেলার অন্তত ২০টি গ্রামের মানুষকে প্রতিদিন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
রাজনগর উপজেলার টেংরাবাজার-কমলগঞ্জের পতনঊষার সড়ক প্রায় ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। এ সড়কের একটি শাখা কুলাউড়ার টিলাগাঁও ও হাজীপুর ইউনিয়নের দিকে চলে গেছে। যার কারণে সড়কের এই অংশ চলাচলে অধিক ব্যবহার করেন রাজনগরের কামারচাক, কমলগঞ্জের পতনঊষার, কুলাউড়ার টিলাগাঁও ও হাজীপুর ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের বাসিন্দা। জেলা সদর ও সিলেট যাতায়াতে এ সড়কটি তাদের প্রধান মাধ্যম।
বিশেষ করে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা বর্ষা-বাদলে চলাচলে মহাবিপাকে পড়ছেন। এদিকে ওই সড়কের তারাপাশা বাজার অংশে হাঁটুসম গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পথচারী চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। অথচ এলজিইডির নিয়ন্ত্রণাধীন এ সড়কের হরিপাশা থেকে তারাপাশা বাজার পর্যন্ত দুই কিলোমিটার জায়গা মেরামতে ঠিকাদার গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
তারাপাশা বাজারে আসা মশাজান গ্রামের আলকাছ মিয়া বলেন, এ রাস্তা দিয়ে শুধু রাজনগরের কামারচাক ইউনিয়নের মানুষ চলাচল করেন না। কুলাউড়া ও কমলগঞ্জ উপজেলার তিন ইউনিয়নের মানুষ এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন। এলাকার মানুষকে দুর্ভোগের কবল 
থেকে বাঁচাতে তাড়াতাড়ি সড়কটি মেরামত জরুরি। একই গ্রামের জিলাল মিয়া জানান, অসুস্থ রোগী বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার উপায় নেই। 
এলজিইডি রাজনগর উপজেলা প্রকৌশলী রাজু সেন সমকালকে বলেন, ১১ কোটি টাকার প্রকল্পের কিছু অংশ অসম্পূর্ণ। ঠিকাদারকে কাজ সম্পন্ন করার জন্য তাগিদ দেওয়া হয়েছে। 
এদিকে এই সড়ক সংস্কার প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমআর এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুহিবুর রহমান জানান, তারাপাশা বাজারে জনস্বার্থে ১৪ ফুটের স্থলে ১৮ ফুট আরসিসি ঢালাই করা প্রয়োজন। বর্ধিত কাজের জন্য ফাইল ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করা হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক প রকল প উপজ ল র র জনগর এ সড়ক সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ