বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে দেশের বেশির ভাগ নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এর ফলে দেশের ছয় জেলায় স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। গত দুই দিনে ভারী বৃষ্টি ও উচ্চ জোয়ারের কারণে লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়ায় ৭৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে দুই লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

খুলনার কয়রায় কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধে ৩০০ মিটার ধসে পড়েছে। ঝোড়ো হাওয়ার কারণে পটুয়াখালী ও কক্সবাজার জেলায় দুই সহস্রাধিক বসতঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সারা দেশের মতো ঢাকায়ও গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। এতে নিউমার্কেট, কাজীপাড়া, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তি পোহান হাজারো মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকেই স্থল নিম্নচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। এটি রাত আটটার দিকে শেরপুর জেলা পার হয়ে ভারতের মেঘালয়ের দিকে এগোচ্ছিল।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক গতকাল রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার রাজশাহী বিভাগ বাদ দিয়ে বাকি সব বিভাগের বিভিন্ন স্থানে বাড়ি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। লঘুচাপের প্রভাব এবং এর সঙ্গে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণেই এই বৃষ্টিপাত হতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় চট্টগ্রামে ২২৯ মিলিমিটার।

জোয়ারে লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারে ৭৮ গ্রাম প্লাবিত

লক্ষ্মীপুর জেলার উপকূলীয় এলাকার অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব গ্রামের প্রায় দুই লাখ মানুষ। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব গ্রাম প্লাবিত হয়। এদিকে ঝোড়ো হাওয়ায় গাছ উপড়ে লক্ষ্মীপুরের অনেক স্থানে বিদ্যুতের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে গতকাল সকাল থেকেই বিদ্যুৎহীন পুরো জেলা।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর সদরের চর রমনী মোহন; রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী, দক্ষিণ চরবংশী; কমলনগর উপজেলার চর মার্টিন, পাটারির হাট, চর কালকিনি, সাহেবের হাট, চর ফলকন; রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, চর রমিজ, বড়খেরী ও চরগাজী ইউনিয়নের মেঘনা নদীসংলগ্ন অন্তত ৪০টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। বাড়িঘরের পাশাপাশি এসব গ্রামের ফসলি জমি, হাটবাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়।

জোয়ারের পানিতে কপোতাক্ষ নদের বেড়িবাঁধের কিছু অংশ ধসে পড়ে। গতকাল সকালে খুলনার কয়রা উপজেলার হরিণখোলা এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: লক ষ ম প র উপজ ল র ত হয় ছ গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

১২ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কেরানীগঞ্জে বহুতল ভবনের আগুন

ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগরে জমেলা টাওয়ারে লাগা আগুন ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। আগুন লাগা ভবনে আটকেপড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস৷

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের ডাইরেক্টর (অপারেশন) তাইজুল ইসলাম। এর আগে, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ১২ তলা ওই ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে।

আরো পড়ুন:

কৃষিজমি ক্ষতির শঙ্কায় ভেকুসহ মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ

সুনামগঞ্জে আগুনে পুড়ল ৭ ঘর 

তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। পরে আরো ১০টি ইউনিট যুক্ত হয়। বর্তমানে ২০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে আটকে পড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘ভবনের ভেতরে বিপুল পরিমাণ দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে অতিরিক্ত ইউনিট মোতায়েন করা হবে এবং আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।’’

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘এখনই সূত্রপাত বলা যাবে না, আগে আগুন নিয়ন্ত্রণ করব, তারপর সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।’’

ঢাকা/শিপন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ