ক্যানটিনের ব্যবস্থাপক পদে চাকরিতে পিএইচডি লাগবে
Published: 31st, May 2025 GMT
চীনের নামকরা সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির সম্প্রতি দেওয়া একটি চাকরির বিজ্ঞাপন দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানটিন ব্যবস্থাপকের জন্য প্রকাশিত এই বিজ্ঞাপনে প্রার্থীদের পিএইচডি ডিগ্রি থাকা আবশ্যক বলে জানানো হয়েছে, যা অনেককে বিস্মিত করেছে।
ক্যানটিন ব্যবস্থাপকের দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে রান্নার প্রস্তুতি ও উন্নয়ন তদারকি, ক্যানটিনের ঠিকাদারদের পরিচালনা, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং প্রশাসনিক কাজকর্ম দেখভাল করা। তা ছাড়া প্রার্থীদের ইংরেজি ও অফিস সফটওয়্যারে দক্ষতা থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা ও কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এ ধরনের একটি পদে পিএইচডি চাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন লিখেছেন, ‘একটা ক্যানটিন চালাতে এখন পিএইচডি লাগে?’ আরেকজন বলেছেন, ‘এটাই নেইজুয়ানের (অতিরিক্ত প্রতিযোগিতা) ফল।’
এই ‘নেইজুয়ান’ বা অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতার চাপেই চীনের তরুণ প্রজন্ম উচ্চশিক্ষার পেছনে দৌড়াচ্ছে। কিন্তু তা করেও চাহিদামতো চাকরি মিলছে না। গত এপ্রিলের তথ্যমতে, দেশটিতে শহরের ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে বেকারত্বের হার ১৫ দশমিক ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। তবে তা আগের মার্চ মাসের চেয়ে সামান্য কম। মার্চ মাসে তা ছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
উল্লিখিত ক্যানটিন ব্যবস্থাপক পদে বছরে ১ লাখ ৮০ হাজার ইউয়ান বেতন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, যা চীনের জাতীয় গড় বেতনের চেয়ে বেশি। অনেকেই মনে করছেন, এ পদটি হয়তো কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থীকে মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছে।
চীনে জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশটির শহরের সরকারি ও বেসরকারি খাতে কর্মরত কর্মচারীদের বার্ষিক গড় আয় ছিল যথাক্রমে ১ লাখ ২৪ হাজার ১১০ ইউয়ান এবং ৬৯ হাজার ৪৭৬ ইউয়ান।
চীনে চাকরিতে অপ্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতার চাপ নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা
জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।
হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
আবেদনে যোগ্যতার শর্ত
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—
—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।
—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।
—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।
বয়সসীমা—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।
—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।
—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।
—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।
—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।
বৃত্তির সুবিধা
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:
১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।
২। মাসিক ভাতা।
—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।
—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।
—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।
—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।
—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।
—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।
—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।
হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।