ব্রাজিলের কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেছেন কার্লো আনচেলত্তি। কিন্তু তার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ফিফার বৈধ লাইসেন্সধারী এজেন্ট নন এমন ব্যক্তি আনচেলত্তির ব্রাজিলের কোচ হওয়ার আলোচনায় সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে ফিফা।

ব্রাজিলের সংবাদ মাধ্যমের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কার্লো আনচেলত্তির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত ছিলেন ডিয়াগো ফার্নান্দো নামের এক ব্যক্তি। তিনি রিয়াল মাদ্রিদের পরিচালক জোসে অ্যাঞ্জেল সানচেজের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্লাবের সঙ্গে থাকা আনচেলত্তির চুক্তি বাতিল করতে সহায়তা করেছেন।

ব্রাজিলের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য কার্লো আনচেলত্তি ও তার এজেন্টদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে এই ফার্নান্দো বৈঠক করেছেন। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে দুই পক্ষের সমঝোতা করতে সহায়তা করেছেন। এমনকি মাদ্রিদ থেকে কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে রিও ডি জেনেইরোতেও যান তিনি। ব্রাজিলের জার্সি পরে ডন কার্লোর সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করেন।

অথচ ডিয়াগো ফার্নান্দো ফিফা নিবন্ধিত কোন এজেন্ট নন এবং ফিফার নিয়ম অনুসারে কোন ফুটবলার কিংবা কোচের সঙ্গে চুক্তি সংক্রান্ত কাজে নিবন্ধন নেই এমন কেউ সম্পৃক্ত থাকতে পারবেন না। ব্রাজিল সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, আনচেলত্তিকে ব্রাজিলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিতে সহায়তা করায় ফার্নান্দো ১.

২ মিলিয়ন ইউরো কমিশন নিয়েছেন।

ব্রাজিল ফুটবলের সদ্য সাবেক সভাপতি এজনাল্ডো রদ্রিগুয়েজের সঙ্গে তার এই কমিশনের চুক্তি হয়েছিল বলে দাবি করা হয়েছে। তবে ফার্নান্দোর কার্যালয় থেকে দাবি করা হয়েছে, তিনি মধ্যস্থতাকারী নন পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সিবিএফ ও ফিফার নিয়ম মেনেই কাজ করেছেন।

ফিফার পক্ষ থেকে সিবিএফের বর্তমান সভাপতি সামির দাউদ ও তার প্রশাসনের কাছে ফার্নান্দোর ভূমিকা কী ছিল, তাকে কত অর্থ দেওয়া হয়েছে, কেন দেওয়া হয়েছে এই সংক্রান্ত তথ্য ৪ জুনের মধ্যে জমা দিতে বলেছে। বর্তমান প্রশাসন দাবি করেছে, কার্লো আনচেলত্তির সঙ্গে চুক্তি খুব গোপনীয়তার সঙ্গে হয়েছে এবং এই সংক্রান্ত তথ্যাদি এডনাল্ড রদ্রিগুয়েজের বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদিও বর্তমান প্রশাসন ফিফার তদন্তে সহায়তা করছে এবং বিষয়টি সিবিএফের অভ্যন্তরে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।

কোচ নিয়োগে অনিয়ম প্রমাণিত হলে সিবিএফ’কে জরিমানা করতে পারে ফিফা। এছাড়া এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মধ্যস্থতাকারী রাখায় সিবিএফের নিয়োগ দেওয়া এজেন্ট ও আনচেলত্তির এজেন্ট সাজা পেতে পারেন। তাদের অর্থ দ্বন্দ্ব, লাইসেন্স রহিতকরণ বা সাময়িক বাতিলের মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে ফিফা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র জ ল ফ টবল স ব এফ কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’

লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।

সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ