বাজেট পেশ সোমবার, প্রচার হবে বিটিভিসহ সব টেলিভিশনে
Published: 31st, May 2025 GMT
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে বাজেট উপস্থাপন করা হবে ভিন্ন আঙ্গিকে। সংসদ না থাকায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম বিটিভিসহ অন্যান্য বেসরকারি গণমাধ্যমে একযোগে প্রচার করা হবে। আগামী সোমবার বিকেল ৪টায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট বক্তব্য সম্প্রচার করা হবে।
আগামী সোমবার ২ জুন অর্থ উপদেষ্টা ড.
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে চলতি বাজেটের চেয়েও ছোট বাজেট দেওয়া হবে। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম। আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় কিছু কর্মসূচিতে ভাতার পরিমাণ ও উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানে সুযোগ তৈরির উদ্যোগ থাকবে গ্রামীণ পর্যায়ে। এজন্য উজ্জীবিত করা হবে রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কারসহ গ্রামীণ অবকাঠামো খাতের কর্মযজ্ঞকে।
এর আগে সংসদের বাইরে বাজেট দেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন ক্ষমতায় ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছরের ৯ জুন তখনকার অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম ২০০৮-০৯ অর্থবছরের জন্য ৯৯ হাজার ৯৬২ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিলেন। সেদিনও ছিল সোমবার। বেলা ৩টায় বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সম্প্রচার করা হয়েছিল মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের বাজেট বক্তব্য।
তারপর আওয়ামী লীগের চার মেয়াদে সাড়ে ১৫ বছরে আবুল মাল আবদুল মুহিত টানা ১০ বার, আ হ ম মুস্তফা কামাল পাঁচবার এবং আবুল হাসান মাহমুদ আলী একবার জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন। নির্বাচিত সরকারের আমলের এসব বাজেট জাতীয় সংসদেই উপস্থাপন করা হয়। পরে মাসজুড়ে সেই প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা হত সংসদে। জুন মাসের শেষ দিকে সংসদে পাস হত নতুন অর্থবছরের বাজেট।
এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। তবে বাজেট ঘোষণার পর প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর নাগরিকদের নিকট মতামত চাইবে অর্থ মন্ত্রণালয়। মতামতের ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করা হবে। এরপর আগামী ২৩ জুনের পর যেকোনো একদিন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনুমোদন নিয়ে রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে তা আগামী এক জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে।
সবশেষ ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। জুলাইয়ে নতুন অর্থবছর শুরুর পর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। এবার বাজেটের আকার সামান্য ছোট আকার দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা। স্বাধীনতার পর এই প্রথম বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় কমছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ ট বক ত উপদ ষ ট স মব র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বকাপ ফাইনালে সবচেয়ে সস্তা টিকিটের দামই ৫ লাখ, ফিফাকে ‘বিরাট বিশ্বাসঘাতক’ বলছেন সমর্থকেরা
২০২৬ বিশ্বকাপ টিকিটের হালনাগাদকৃত দাম প্রকাশ পেয়েছে গত বৃহষ্পতিবার। টিকিটের দাম দেখে ফিফার বিরুদ্ধে ‘বিরাট বিশ্বাসঘাতকতা’র অভিযোগ তুলেছেন ফুটবলপ্রেমীরা।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে, ফুটবলের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা বিভিন্ন দেশের জাতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে মোট টিকিটের ৮ শতাংশ বরাদ্দ দেয়। এসব অ্যাসোসিয়েশন যেন তাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত সমর্থকদের কাছে এসব টিকিট বিক্রি করতে পারে সেজন্যই এই ব্যবস্থা।
জার্মান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক প্রকাশিত ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিটের দামের তালিকায় দেখা গেছে, গ্রুপ পর্বে বিভিন্ন ম্যাচের টিকিটের দাম ১৮০ (২১ হাজার ৯৫৫ টাকা) থেকে ৭০০ ডলারের (৮৫ হাজার ৩৮৪ টাকা) মধ্যে। বিশ্বকাপ ফাইনালে সবচেয়ে সস্তা টিকিটের দাম ৪ হাজার ১৮৫ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা)। সবচেয়ে দামি টিকিটের মূল্য ৮ হাজার ৬৮০ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৬৪ টাকা)।
বিবিসি জানায়, ‘ফুটবল সাপোর্টার্স ইউরোপ’ সমর্থকগোষ্ঠী বলেছে তারা ফিফার ‘অত্যধিক দাম’–এর নীতি দেখে ‘বিষ্মিত’ এবং টিকিট বিক্রি ‘তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ’ রাখার আহ্বান জানিয়েছে। ইংল্যান্ডের ফুটবল সাপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, এই অত্যধিক দাম সমর্থকদের ‘মুখে চড় মারা’র সমান। অতিরিক্ত দামের এই অভিযোগের বিষয়ে ফিফা এখনো পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেনি বলে জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাস্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোয় আগামী ১১ জুন থেকে শুরু হবে বিশ্বকাপ। ১৯ জুলাই নিউইয়র্কের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। বিবিসি স্পোর্ট জানিয়েছে, ফাইনালের টিকিট তিন স্তরের—সাপোর্টার ভ্যালু টায়ার: ৪ হাজার ১৮৫ ডলার (৫ লাখ ১০ হাজার টাকা), সাপোর্টার স্ট্যান্ডার্ড টায়ার: ৫ হাজার ৫৬০ ডলার (৬ লাখ ৭৮ হাজার ১৯৪ টাকা), সাপোর্টার প্রিমিয়ার টায়ার: ৮ হাজার ৬৮০ ডলার (১০ লাখ ৫৮ হাজার ৭৬৪ টাকা)।
এপি জানিয়েছে, গ্রুপ পর্বের টিকিটগুলোর এই দামের সঙ্গে ফিফার এর আগে ৬০ ডলারের টিকিট দেওয়ার প্রতিশ্রুতির মিল নেই। সাত বছর আগে এই বিশ্বকাপ আয়োজনের বিড করার সময় যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল কর্তাদের লক্ষ্য ছিল টুর্নামেন্টের শুরুর দিকের ম্যাচগুলোর জন্য ২১ ডলার দামের হাজারো টিকিট ছাড়া। কিন্তু বর্তমান দামের সঙ্গে সেই ভাবনারও মিল নেই।
আরও পড়ুনমেসির ভারত সফর: ৭০ ফুট উচ্চতার ভাস্কর্য, কনসার্ট, প্রীতি ম্যাচসহ আরও যা যা থাকছে১ ঘণ্টা আগেফুটবল সাপোটার্স ইউরোপ (এফএসই) তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিশ্বকাপের ঐতিহ্যের প্রতি এটি বিরাট বিশ্বাসঘাতকতা, এটাকে (বিশ্বকাপ) আরও আকর্ষণীয় করতে সমর্থকদের অবদানকে পাত্তা দেওয়া হয়নি।’
বিশ্বকাপ ফিফার প্রধান ইভেন্ট। সর্বশেষ ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ফাইনালের তুলনায় এবারের বিশ্বকাপের টিকিটের দাম সাত গুণ বেশি। সেই বার কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে সবচেয়ে সস্তা টিকিটের দাম ছিল ৬০২ ডলার। শুধু তা–ই নয়, এবারের বিশ্বকাপে শিশু কিংবা অন্য কোনো গোষ্ঠীর জন্য কোনো টিকিটের দামেই কোনোরকম ছাড় নেই।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো