ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের কোনো সমস্যা হবে না: নৌপরিবহন উপদেষ্টা
Published: 31st, May 2025 GMT
ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের গত ঈদে কোনো সমস্যা হয়নি, এবারও হবে না বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি বলেন, সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শনিবার দুপুরে জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত ভোলার চরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। আজ বেলা একটার দিকে ঢাকা থেকে কার্নিভ্যাল ক্রুজে করে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে পৌঁছান উপদেষ্টা। তিনি ভোলার ঢালচর, চর কুকরি-মুকরি, মনপুরা ও কলাতলীর যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য খোঁজখবর নেবেন বলে জানা গেছে।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ভোলায় যে জোয়ার-জলোচ্ছ্বাস হয়েছে, বিভিন্ন চরাঞ্চলে সাধারণ হতদরিদ্র যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, বিশেষ করে কচ্ছপিয়া, কুকরি-মুকরি, ঢালচর, কলাতলী এসব এলাকায় পরিদর্শন করবেন। যাতে ওই এলাকার মানুষের নিরাপদ যাতায়াতের জন্য কিছু করা যায়। পরিদর্শনকালে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ত্রাণ দেবেন।
সাংবাদিকেরা জানান, ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে যাত্রীবাহী লঞ্চের অভাবে অবৈধ স্পিডবোট ও ট্রলার চলছে। এখানে বড় লঞ্চ চালু হলে মানুষের দুর্ভোগ কমত। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ‘লঞ্চ তো বিআইডব্লিউটিএ বা বিআইডব্লিউটিসি দেয় না। যেকোনো মালিক যদি সি-সার্ভে সনদ নিয়ে লঞ্চ চালাতে চায়, চালাবে। আমরা অনুমতি দেব। আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
ভোলা-ঢাকা নৌপথে গাড়ি চলাচলের জন্য সরকারিভাবে ফেরি চলাচলের আশ্বাস দিয়ে আসছে বিআইডব্লিউটিসি। কিন্তু এখনো কেন চালু হচ্ছে না জানতে চাইলে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘দেশে অনেক ফেরি সংকট আছে। তাই অনেক স্থানে দেওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে সরকারি ফেরি অনেক নৌপথে দেওয়া হয়েছে। মহেশখালীতে দেওয়া হয়েছে। সন্দীপে দেওয়া হয়েছে। কিছু ফেরি পুরোনো হয়েছে। কিছু ফেরি আরিচা-দৌলতদিয়া নৌপথে চলছে। কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, নোয়াখালী-হাতিয়া ও ভোলা-মনপুরা নৌপথে ফেরি চলাচলের দাবি করছে অনেক দিন। এই বছরের শেষ দিকে আর কিছু ফেরি আসবে, তখন আমরা চাহিদামতো বিভিন্ন নৌপথে দিতে পারব। ফেরি থাকলে নতুন নৌপথে ফেরি দিতে কোনো অসুবিধা নেই। আসলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়া হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পরে দক্ষিণাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছিল, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। কিন্তু দুই দিনে একজন পর্যটকও যেতে পারেননি। কারণ, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কবে থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের কথা। এ জন্য ১ হাজার ৭০০ জন ধারণক্ষমতার দুটি জাহাজ—এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত যাপন করা যাবে না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।
সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল বা সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচলও বন্ধ। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল ইত্যাদি) ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পর্যটক নেই, ফাঁকা ঘাটআজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই। বাঁকখালী নদীতেও পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ দেখা যায়নি। ঘাটে অবস্থান করছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জানা যায়, গতকাল সকালে তিনজন পর্যটক টিকিট কেটে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, পরে জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কোনো পর্যটক যেতে পারেননি। নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়ম থাকায় সময় ও সুযোগ কম, আবার দীর্ঘ জাহাজযাত্রার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে অবস্থান করছি।’
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট কিংবা টেকনাফের কোনো স্থান থেকে এখনো জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেই।
জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।
গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে কক্সবাজারের পথে পর্যটকবাহী একটি জাহাজ