পরিবহনশ্রমিকদের মারধর ও চাঁদাবাজির প্রতিবাদে গাজীপুরের শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করেছিলেন পরিবহনশ্রমিকেরা। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত উপজেলার জৈনাবাজার এলাকায় এই অবরোধ চলে। ঢাকার সঙ্গে চলাচলকারী প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনের শ্রমিকেরা এই অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশের আশ্বাসে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন।

স্থানীয় লোকজন বলেন, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জৈনাবাজার এলাকায় সড়কের দুই পাশে প্রভাতী বনশ্রীর বেশ কয়েকটি বাস আড়াআড়িভাবে রেখে অবরোধ করেন পরিবহনশ্রমিকেরা। এ সময় মারধরের প্রতিবাদে অর্ধশতাধিক শ্রমিক বিক্ষোভ মিছিল করেন।

প্রভাতী বনশ্রী পরিবহনের শ্রমিক মো.

খোকন প্রথম আলোকে বলেন, জৈনাবাজার এলাকায় গত রোববার রাতে তাদের পার্কিং এরিয়ায় এসে দুই পরিবহনশ্রমিককে মারধর করেন স্থানীয় মো. ফাহিম নামের এক ব্যক্তি। ফাহিম তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজনকে নিয়ে এসে চাঁদার দাবিতে মারধর করেন। প্রতিবাদ করলে একটি বাস ভাঙচুর করেন ফাহিম ও তাঁর লোকজন। এ ঘটনার বিচার দাবিতে তাঁরা সড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন।

খোকন বলেন, ‘শ্রীপুর থানা-পুলিশ বিচারের আশ্বাস দিয়েছে। তাই আমরা আমাদের অবরোধ তুলে নিয়েছি। ফাহিমের বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ দেব।’ প্রভাতী বনশ্রীর অপর শ্রমিক মো. মোজাম্মেল হক বলেন, এর আগেও কয়েকবার পরিবহনশ্রমিকদের মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। শ্রমিকেরা অভিযুক্ত ব্যক্তির শাস্তি চান।

অভিযুক্ত মো. ফাহিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর বা চাঁদা দাবি করিনি। রোববার রাতে আমার ভাতিজাকে মারধর করেন পরিবহনশ্রমিকেরা। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কারণ জানতে চেয়েছিলাম। তাঁরা বলেন, যিনি মারধর করেছেন, তিনি সেখানে নেই। পরদিন বিষয়টি মীমাংসার কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা উল্টো আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে সড়ক অবরোধ করেছেন।’

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল বারিক বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা অবরোধ তুলে নেন। সকাল ৯টার পর থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র কর ন বনশ র

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ