কোহলির আইপিএল জয়ের আনন্দ ‘১০ গুণ’ বাড়িয়েছেন যে দুই কিংবদন্তি
Published: 4th, June 2025 GMT
আইপিএল ফাইনাল দেখতে ভারতে যাওয়ার ছবি উড়োজাহাজে থাকতেই পোস্ট করেছিলেন ক্রিস গেইল। এবি ডি ভিলিয়ার্স তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডলে কোনো ছবি পোস্ট করেননি। চুপি চুপি চলে যান ভারতে। কাল রাতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দেখা গেল দুজনকেই। ম্যাচ শেষে মাঠেও দেখা গেল। বিরাট কোহলির সঙ্গে এ দুই কিংবদন্তির ফ্রেমবন্দী ছবি দেখে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর নষ্টালজিক সমর্থকেরা বলতেই পারেন ‘হলি ট্রিনিটি!’
আরও পড়ুন১৮ বছর, ২৬৭ ম্যাচ ও ৮৬৬১ রানের বিনিময়ে পাওয়া কোহলির এই ট্রফি৩ ঘণ্টা আগেডি ভিলিয়ার্স ও গেইল বেঙ্গালুরুতে খেলাকালীন সময়ে তিনজনকে একসঙ্গে এ নামেই ডেকেছেন সমর্থকেরা। ২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বেঙ্গালুরুতে খেলে ৮৪ ইনিংসে ৩১৬৩ রান করেন গেইল। ৫ সেঞ্চুরির সঙ্গে ফিফটি ১৯টি। গেইল অবশ্য পাঞ্জাবের হয়েও খেলেছেন। কাল রাতের ফাইনালে তিনি বেঙ্গালুরুকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি পাঞ্জাবকেও সমর্থন দেন। বেঙ্গালুরুর জার্সি পরার পাশাপাশি পাঞ্জাবি পাগড়িও পরে মাঠে গিয়েছিলেন গেইল।
ডি ভিলিয়ার্স ২০১১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত খেলেন বেঙ্গালুরুতে। ১৫৬ ম্যাচে ৪৪৯১ রান করেন। কাল ম্যাচের শেষ দুই ওভারে বাউন্ডারি সীমানার বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন এই প্রোটিয়া কিংবদন্তি। মাঠ থেকে তাঁকে দেখে আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন কোহলি। বেঙ্গালুরুর জয়ের পর মাঠে তাঁদের উদ্যাপনে যোগ দেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি গেইলও। মাঠেই সম্প্রচারক চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ দুজনের উপস্থিতি নিয়ে কোহলি বলেছেন, তাতে শিরোপা জয়ের আনন্দটা ‘১০ গুণ বেড়ে বিশেষ’ হয়েছে।
সম্প্রচারক চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে তিন কিংবদন্তি মিলে দারুণ এক উদ্যাপনও করেন। বেঙ্গালুরুর দীর্ঘদিনের স্লোগান ছিল ‘এ সালা কাপ নামদে (এবার কাপটা হবে আমাদের)!’ ১৮ বছর অপেক্ষার পর শিরোপা জিতে ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনের সামনে চিৎকার করে স্লোগানটি পাল্টে দেন তিন কিংবদন্তি, ‘এ সালা কাপ নামদু (এবার কাপ আমাদের)!’
আরও পড়ুনআইপিএলে কে কোন পুরস্কার পেলেন২ ঘণ্টা আগেডি ভিলিয়ার্সের সঙ্গে আইপিএলে দারুণ কিছু ম্যাচ জেতানো জুটি রয়েছে কোহলির। তাঁকে নিয়ে কোহলি বলেন, ‘সে ফ্র্যাঞ্চাইজির (বেঙ্গালুরু) হয়ে যা করেছে, সেটা অসাধারণ। ম্যাচের আগে বলেছি তাকে, এই ম্যাচটা আমাদের জন্য যা, তোমার জন্যও তা–ই এবং আমি চাই যখন আমরা ট্রফি উঁচিয়ে ধরব, তখন তুমি আমাদের সঙ্গে উদ্যাপন করবে। কারণ, সে আরসিবির জন্য যা করেছে, সেটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’
প্রোটিয়া কিংবদন্তিকে নিয়ে কোহলি আরও বলেন, ‘সে সবচেয়ে বেশি ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছে এবং চার বছর হলো অবসর নিয়েছে। এই দলে তার প্রভাবটা এতেই স্পষ্ট.
শেষ দুই ওভারে সীমানার বাইরে ডি ভিলিয়ার্সকে দেখে আবেগাপ্লুত হওয়া নিয়েও কথা বলেন কোহলি। ডি ভিলিয়ার্সকে উদ্দেশ করে কিংবদন্তি বলেন, ‘শেষ দুই ওভারে সীমানার বাইরে তোমাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখাটা ছিল আরও বিশেষ কিছু। (শেষ ওভারে) হফের (হ্যাজলউড) দ্বিতীয় বলটি ছক্কা না হওয়ার পর তাদের পাঁচ ছক্কার দরকার ছিল। (ডি ভিলিয়ার্সকে দেখিয়ে) আমি জানি না ইনিংসের শেষ তিন বলে কীভাবে অশ্রু আটকে রাখতে পেরেছি। কিন্তু তুমি জানো, তখন কেমন লাগে। সেও (গেইলকে দেখিয়ে) জানে কেমন লাগে।’
আরও পড়ুনদেড় যুগ পর আইপিএলজয়ী কোহলিকে ১৫ বছর পর ট্রফিজয়ী কেইনের শুভেচ্ছা ১ ঘণ্টা আগেগেইল সে মুহূর্তে জড়িয়ে ধরেন কোহলিকে। তারপর মুখে হাসি ফুটিয়ে বলেন, ‘১৮ বছর! কী সৌভাগ্যের নম্বর (কোহলির জার্সি নম্বরও ১৮)! তোমার জন্য খুশি লাগছে। আমি তোমার জন্যই। ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্যও খুশি লাগছে।’
কোহলি এরপর বলেন, ‘এটা (আইপিএল ট্রফি) আমার কাছে খুব বিশেষ কিছু হওয়ার কারণ হলো তাদের সঙ্গে এটা ভাগ করে নিতে পারছি। কারণ, নিজের সেরা সময় আমি তাদের সঙ্গে ভাগ করেছি এবং আমি জানি (ট্রফি) জয়ের জন্য আমরা কী পরিমাণ চেষ্টা করেছি...আমরা সবাই কষ্ট (ট্রফি না জেতায়) পেয়েছি, কারণ, আমরা সবাই নিজেদের সেরা সময়টা এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে দিয়েছি। আমরা একদম অন্তরের অন্তস্থল থেকে আরসিবির জন্য শিরোপাটি জিততে চেয়েছিলাম। হলফ করে বলছি, এটাকে (ট্রফি জয়) এখন ১০ গুণ বেশি বিশেষ কিছু মনে হচ্ছে, কারণ, তারা আমার পাশে দাঁড়িয়ে। এ শিরোপা আমার জন্য যতটা প্রাপ্য, তাদেরও ততটাই। আমি জানি, মানুষ আবেগপ্রবণ এবং তারাও নিজেদের সর্বস্ব নিংড়ে দিয়েছে। তাই এটায় তাদেরও সমান ভাগ।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র জন য আম দ র ক হল র বদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ৭ দিনের রিমান্ডে
দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকালে পুলিশ তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. ছানাউল্ল্যাহর আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০২৪ সালের ২৭ অগাস্ট শাহবাগ থানায় দুর্নীতি ও রায় জালিয়াতির অভিযোগের মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
গত ২৪ জুলাই সকালে ঢাকার ধানমন্ডির বাসা থেকে সাবেক এ প্রধান বিচারপতিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
সম্প্রতি তার গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। সংগঠনটি দাবি করেছে, ‘বিচার বিভাগ ও গণতন্ত্র ধ্বংসের মূল কারিগর’ তিনি।
খায়রুল হক ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের ১৯তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন এবং ২০১১ সালের ১৭ মে বয়স অনুযায়ী অবসর গ্রহণ করেন। বিচারপতি হিসেবে তার সবচেয়ে আলোচিত এবং বিতর্কিত রায় ছিল সংবিধানের ১৩তম সংশোধনী, অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে। ওই রায়ের পর দেশে আর কোনো নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হয়নি।
বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ২০১১ সালে এই রায় ঘোষণা করে। এতে বলা হয়, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থি। এরপর থেকে নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরাই সরকারে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছে। বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই রায়ের মধ্য দিয়েই দেশে একতরফা নির্বাচন ও গণতন্ত্রহীনতার ভিত্তি তৈরি হয়।
২০১৩ সালের ২৩ জুলাই তাকে তিন বছরের জন্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ওই মেয়াদ শেষে কয়েক দফা কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে তাকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে তিনি আইন সংস্কার সংক্রান্ত নানা প্রস্তাব ও গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। বিভিন্ন সময় আইনি সেমিনার, বক্তৃতা এবং পরামর্শমূলক কাজে অংশ নিয়েছেন তিনি।
আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবী ও মহলগুলো তাকে ‘সংবিধান রক্ষার সাহসী রূপকার’ হিসেবে অভিহিত করলেও, বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোর মতে তিনি ‘বিচার বিভাগের রাজনৈতিকীকরণের পথপ্রদর্শক’।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বলেছে, ‘তত্ত্বাবধায়ক বাতিল করে তিনি দেশের নির্বাচনব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।’
ঢাকা/কেএন/ইভা