পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল সমাধানে সরকার ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে পরস্পরের প্রতি দোষারোপ ও অস্থিরতা এখন চরমে। এই অবস্থায় পবিস ও আরইবির চলমান সংকটের একমাত্র সমাধান হিসেবে দুই প্রতিষ্ঠানকে এক ও অভিন্ন চাকরিবিধির আওতায় আনার সুপারিশ করেছেন তিনি।

বুধবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির মিলনায়তনে ক্যাব আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড.

সৈয়দ মিজানুর রহমান রাজুর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ক্যাব সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ও নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শওকত আলী খান প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেছেন, সমস্যা সমাধান না করে বরং সমস্যার আগুনেই ঘি ঢেলে এডিবি-বিশ্বব্যাংকের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এগুচ্ছে সরকার। বিশ্বব্যাংক ও এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) পরামর্শে আরইবিকে সেবাখাত থেকে বাণিজ্যিক খাতে রূপান্তরের চেষ্টা করছে। বিদ্যমান বিবাদ অবসানে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকেই এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন বেসরকারিকরণের যে ছবক দেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি বিগত সরকার। তাদের রেখে যাওয়া দায়ই হয়তো কাঁধে তুলে নিতে হচ্ছে বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টাকে। এই পরিস্থিতির যখন সূত্রপাত হয়, তখন ক্যাবের তরফ থেকে একটা তদন্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রথম খণ্ড সরকারের কাছে জমা দেয়া হলেও সেকেন্ড পার্ট দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত তদন্ত ক্যাব স্থগিত রাখে। কারণ বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকে ক্যাব প্রত্যাশিত সহযোগিতা পায়নি।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হন বিধায় বিরোধ ও সংঘাত সৃষ্টি হয়। এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য অভিন্ন নিয়োগ, পদোন্নতি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে জাতীয়করণ করা। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এর ধারা ৪০ মতে আরইবির বিরুদ্ধে আনিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অভিযোগগু‌লো নিষ্পত্তি হতে পারে।

তিনি বলেন, এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রিস্ট্রাকচারিংয়ের নামে এ খাত ভেঙে টুকরো টুকরো করে কোম্পানি বানিয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। এই মন্ত্রণালয়ে এখন কমবেশি ৭৫টি কোম্পানি। জনগণের পকেট কেটে আকাশচুম্বী মুনাফা করছে। ঘাটতি মেটানোর কথা বলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। কোম্পানি হলে ব্যয় আরও বৃদ্ধি হবে। তাতে প্রত্যন্ত পল্লীর নিম্ন আয়ের লোকজনের খরচ বাড়বে।

বাংলাদেশকে দ্রুত বিদ্যুৎ আমদানি বাজারে পরিণত করার ক্ষেত্রে পল্লী বিদ্যুতের ব্যয়বৃদ্ধি গুরুত্ব পাচ্ছে। এডিবি, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বাজারকে আমদানি বাজারে পরিণত করা। ভারতের ক্রসবর্ডার এনার্জি ট্রেডিং পলিসি তারই প্রমাণ। তাই পল্লী বিদ্যুৎকে বাণিজ্যিকীকরণ করার উদ্দেশ্যে কোম্পানি করার মত গণস্বার্থ বিরোধী পদক্ষেপের সুস্পষ্টভাবে বিরোধিতা করছে ক্যাব।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ বব য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনকে টমাহক দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্প কী ভাবছেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল রোববার বলেছেন, তিনি আপাতত এমন কোনো চুক্তির কথা ভাবছেন না, যা ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য দূরপাল্লার টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র পেতে সহায়তা করবে।

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির মার্কিন পরিকল্পনা নিয়েও ট্রাম্প অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কারণ, এসব দেশ পরে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইউক্রেনকে দিতে পারে। বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের ভাষ্য হলো, তিনি যুদ্ধকে আরও তীব্র করতে চান না।

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী উড়োজাহাজ এয়ার ফোর্স ওয়ানে বসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ট্রাম্পের সবশেষ এ মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, ইউক্রেনকে টমাহক দিতে তিনি এখনো অনিচ্ছুক।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার পাম বিচ থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পথে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। সাংবাদিকেরা ট্রাম্পের কাছে জানতে চান, তিনি কি ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রির বিষয়টি বিবেচনা করছেন?

জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘না, আসলে তা নয়।’ তবে তিনি যোগ করেন, ভবিষ্যতে নিজের মত বদলাতে পারেন।

গত ২২ অক্টোবর হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুত্তে। বৈঠকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের ধারণা নিয়ে আলোচনা হয়।

গত শুক্রবার মার্ক রুত্তে বলেন, বিষয়টি এখনো পর্যালোচনার পর্যায়ে আছে। সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দীর্ঘদিন ধরে ওয়াশিংটনের কাছে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র চেয়ে আসছেন। তবে ক্রেমলিন সতর্ক করে বলেছে, ইউক্রেনকে টমাহক দেওয়া হলে পরিণতি ভালো হবে না।

আরও পড়ুনটমাহক কত দূরে আঘাত হানতে পারে, রাডারে কেন ধরা পড়ে না২০ ঘণ্টা আগে

দ্য গার্ডিয়ান ও সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টমাহক যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইল, যা যুদ্ধজাহাজ বা সাবমেরিন থেকে ছোড়া হয়।

ভূপৃষ্ঠে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে অত্যন্ত নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে টমাহক। নিচু উচ্চতায় ওড়ে বলে টমাহক রাডারে ধরা পড়ে না। এতে আছে উন্নত জিপিএস ও নেভিগেশন ব্যবস্থা।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি যুদ্ধজাহাজ থেকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ