পল্লী বিদ্যুতের সংকট সমাধানে সরকার ব্যর্থ: ক্যাব
Published: 4th, June 2025 GMT
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) ও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) মধ্যকার অভ্যন্তরীণ কোন্দল সমাধানে সরকার ব্যর্থ বলে মন্তব্য করেছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম। তিনি বলেন, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে পরস্পরের প্রতি দোষারোপ ও অস্থিরতা এখন চরমে। এই অবস্থায় পবিস ও আরইবির চলমান সংকটের একমাত্র সমাধান হিসেবে দুই প্রতিষ্ঠানকে এক ও অভিন্ন চাকরিবিধির আওতায় আনার সুপারিশ করেছেন তিনি।
বুধবার ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির মিলনায়তনে ক্যাব আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক ড.
লিখিত বক্তব্যে ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেছেন, সমস্যা সমাধান না করে বরং সমস্যার আগুনেই ঘি ঢেলে এডিবি-বিশ্বব্যাংকের এজেন্ডা বাস্তবায়নে এগুচ্ছে সরকার। বিশ্বব্যাংক ও এশিয়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) পরামর্শে আরইবিকে সেবাখাত থেকে বাণিজ্যিক খাতে রূপান্তরের চেষ্টা করছে। বিদ্যমান বিবাদ অবসানে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকেই এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের প্রেসক্রিপশন বেসরকারিকরণের যে ছবক দেওয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করতে পারেননি বিগত সরকার। তাদের রেখে যাওয়া দায়ই হয়তো কাঁধে তুলে নিতে হচ্ছে বর্তমান জ্বালানি উপদেষ্টাকে। এই পরিস্থিতির যখন সূত্রপাত হয়, তখন ক্যাবের তরফ থেকে একটা তদন্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রথম খণ্ড সরকারের কাছে জমা দেয়া হলেও সেকেন্ড পার্ট দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত তদন্ত ক্যাব স্থগিত রাখে। কারণ বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকে ক্যাব প্রত্যাশিত সহযোগিতা পায়নি।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানাভাবে বৈষম্যের শিকার হন বিধায় বিরোধ ও সংঘাত সৃষ্টি হয়। এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের জন্য অভিন্ন নিয়োগ, পদোন্নতি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে জাতীয়করণ করা। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন, ২০০৩ এর ধারা ৪০ মতে আরইবির বিরুদ্ধে আনিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি হতে পারে।
তিনি বলেন, এডিবি ও বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রিস্ট্রাকচারিংয়ের নামে এ খাত ভেঙে টুকরো টুকরো করে কোম্পানি বানিয়ে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। এই মন্ত্রণালয়ে এখন কমবেশি ৭৫টি কোম্পানি। জনগণের পকেট কেটে আকাশচুম্বী মুনাফা করছে। ঘাটতি মেটানোর কথা বলে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। কোম্পানি হলে ব্যয় আরও বৃদ্ধি হবে। তাতে প্রত্যন্ত পল্লীর নিম্ন আয়ের লোকজনের খরচ বাড়বে।
বাংলাদেশকে দ্রুত বিদ্যুৎ আমদানি বাজারে পরিণত করার ক্ষেত্রে পল্লী বিদ্যুতের ব্যয়বৃদ্ধি গুরুত্ব পাচ্ছে। এডিবি, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বাজারকে আমদানি বাজারে পরিণত করা। ভারতের ক্রসবর্ডার এনার্জি ট্রেডিং পলিসি তারই প্রমাণ। তাই পল্লী বিদ্যুৎকে বাণিজ্যিকীকরণ করার উদ্দেশ্যে কোম্পানি করার মত গণস্বার্থ বিরোধী পদক্ষেপের সুস্পষ্টভাবে বিরোধিতা করছে ক্যাব।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১২ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কেরানীগঞ্জে বহুতল ভবনের আগুন
ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগরে জমেলা টাওয়ারে লাগা আগুন ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। আগুন লাগা ভবনে আটকেপড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস৷
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের ডাইরেক্টর (অপারেশন) তাইজুল ইসলাম। এর আগে, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ১২ তলা ওই ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে।
আরো পড়ুন:
কৃষিজমি ক্ষতির শঙ্কায় ভেকুসহ মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ
সুনামগঞ্জে আগুনে পুড়ল ৭ ঘর
তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। পরে আরো ১০টি ইউনিট যুক্ত হয়। বর্তমানে ২০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে আটকে পড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ভবনের ভেতরে বিপুল পরিমাণ দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে অতিরিক্ত ইউনিট মোতায়েন করা হবে এবং আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।’’
আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘এখনই সূত্রপাত বলা যাবে না, আগে আগুন নিয়ন্ত্রণ করব, তারপর সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।’’
ঢাকা/শিপন/রাজীব