জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের চার সদস্যের সদস্যপদ বাতিল করতে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শততম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত চার সদস্যকে বাদ দিতে এ স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।

স্মারকলিপিতে উল্লেখিত চার সিন্ডিকেট সদস্য হলেন আইন অনুষদের ডিন খ্রিস্টিন রিচার্ডসন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মনিরুজ্জামান, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লাইসা আহমেদ লিসা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো.

ইলিয়াস হোসেন।

স্মারকলিপিতে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. নূর নবী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহরিয়ার হোসেন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা ও দর্শন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. তাওহিদুল ইসলাম স্বাক্ষর করেন।

সোমবার সিন্ডিকেট সভা চলাকালীন শিক্ষার্থীরা ‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে উপাচার্যের কক্ষের সামনে চার সদস্যের পদত্যাগ দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের এই চার সদস্য বিগত সরকারের সময়ে স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন। জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের সময় তাঁরা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আমরা সিন্ডিকেট থেকে তাঁদের পদত্যাগ চাই।
সিন্ডিকেট সভা শেষে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে উপাচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসা। ২০২৪ সালের ১০ জুন একাডেমিক কাউন্সিলের ৬৩তম সভায় দুই বছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয় অধ্যাপক লাইসা আহমদকে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের চার সদস্যকে বাদ দিতে উপাচার্যের কাছে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। তাঁদের মধ্যে একজন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন, বাকি তিনজন এখনো বহাল আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপাচার্য মোশাররফ হোসেন স্যার ও রইছ উদদীন স্যার আমাদের অনুরোধ করেছেন বিধায় আমরা কোনো কর্মসূচি দিইনি। এখন ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় সিদ্ধান্তেও আসা যায়নি। ক্যাম্পাস খোলার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি সিন্ডিকেট থেকে তাঁদের বাদ না দেয়, তাহলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্তে উপনীত হব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অধ্যাপক লাইসা আহমদ লিসার পদত্যাগপত্র আমি পেয়েছি। অন্যান্য সিন্ডিকেট সদস্যদের ব্যাপারে আমরা পরবর্তী সময়ে আলাপ–আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। বিশ্ববিদ্যালয় এখন বন্ধ হয়ে চলছে, কার্যক্রম স্বাভাবিক হলে আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম রকল প র পদত য গ চ র সদস য উপ চ র য ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৮৯তম একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে সার্বিকভাবে আসন সংখ্যা কমানোসহ অর্গানোগ্রামে আরো ১৮টি নতুন বিভাগের অন্তর্ভুক্তি, চারটি ইনস্টিটিউট চালু এবং ১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। 

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  

ল্যাবভিত্তিক বিভাগগুলোতে আসন সংখ্যা ৪০টি এবং ল্যাববিহীন বিভাগগুলোতে ৫০টি আসন রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। নতুন ১৮টি বিভাগ অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিজ্ঞান বিভাগ এবং জৈবপ্রযুক্তি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো—সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ। কলা ও মানবিক অনুষদভুক্ত গুলো হলো—ইসলামিক স্টাডিজ ও সংস্কৃতি বিভাগ, ইতিহাস বিভাগ এবং দর্শন বিভাগ। ব্যবসায় অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— পর্যটন ও আতিথেয়তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ, ব্যবসায়িক তথ্যবিজ্ঞান বিভাগ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা বিভাগ এবং লজিস্টিক ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ। প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বিভাগগুলো হলো— বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগ, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগ, পুরকৌশল বিভাগ এবং যন্ত্রকৌশল বিভাগ। আইন অনুষদভুক্ত বিভাগটি হলো— অপরাধবিদ্যা বিভাগ। 

পাশাপাশি চারটি ইনস্টিটিউট গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। সেগুলো হলো—আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্র। এগুলোর গঠন কাঠামোও সুপারিশ করা হয়েছে। 

এর মধ্যে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, নিয়মিত অধ্যাপক দুইজন, তিনজন সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার বা ম্যানেজার একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং একজন ক্লিনার। 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত গবেষণা কেন্দ্র এবং একাডেমিক মান বৃদ্ধি কেন্দ্রের জন্য পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক, একজন অতিথি অধ্যাপক, অতিরিক্ত পরিচালক হিসেবে একজন অধ্যাপক অথবা সহযোগী অধ্যাপক, সেকশন অফিসার অথবা ম্যানেজার হিসেবে একজন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা একজন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট একজন, অফিস সহায়ক দুইজন এবং ক্লিনার একজন। 

১২টি বিভাগে পিএইচডি ডিগ্রি চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগে ন্যূনতম ২৬ জন করে শিক্ষক রাখার ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেছেন, “আমরা মিটিংয়ে এগুলো সুপারিশ করেছি। অর্গানোগ্রাম অনুসারে বিশ্ববিদ্যালয় ডিপার্টমেন্টের জন্য ছাড়পত্র চায়, তারপর কমিশন (ইউজিসি) যদি অনুমোদন দেয়, তখন সেটা অর্গানাগ্রামে যুক্ত হয়। অর্গানোগ্রামে থাকলেই যে বিভাগ হয়ে যাবে, এমন না। একটা অনুমোদন দিয়ে রাখে। এই অনুমোদনের আলোকে আবার যখন দরখাস্ত দেওয়া হয়, তখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে।”

তিনি আরো বলেন, “ইউজিসি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছে আসন সংখ্যা কমাতে, যাতে কোয়ালিটি এডুকেশনের নিশ্চিত হয়। তারা ল্যাববেজড বিভাগের জন্য ৪০টি আসন এবং ল্যাববিহীন বিভাগের জন্য ৫০টি আসন বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।”

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেছেন, “অনেকগুলো সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তবে, এখনই না দেখে বলা যাচ্ছে না। রেজ্যুলেশন পাস হলে বিস্তারিত বলতে পারব।”

ঢাকা/এমদাদুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজায় ২৬ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টির শিকার: জাতিসংঘ
  • ৪ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম: ৭ অডিটর নিষিদ্ধ
  • গ্রাহকের কাছে পেয়ারা খেতে চায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা
  • গল্পটা এই ক্লাসরুম থেকেই শুরু: ইরফান সাজ্জাদ
  • রাশিয়ায় এক বাঙালি বিপ্লবীর খোঁজে
  • গোলাম রাব্বানীর ডাকসুর জিএস নির্বাচিত হওয়া অবৈধ ঘোষণার সুপারিশ
  • আপনার এত সাহস হয় কী করে, সাংবাদিককে নায়িকা
  • দুবাইয়ে বিকৃত যৌন ব্যবসা চক্রের প্রধানকে চিহ্নিত করল বিবিসির এক অনুসন্ধান
  • মহানবী (সা.)–এর ইন্তেকালের পরে শাসন নিয়ে যা ঘটেছে
  • কুবিতে নতুন ১৮ বিভাগ ও ৪ ইনস্টিটিউট চালুর সুপারিশ