ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি জার্মানির
Published: 5th, June 2025 GMT
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াডেফুল ইসরায়েলের জন্য সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। গাজা উপত্যকায় চলমান গণহত্যা সত্ত্বেও তিনি জানিয়েছেন, ইসরায়েলে অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করবে না তার দেশ। ৪ জুন, বুধবার জার্মান পার্লামেন্ট বুন্ডেসট্যাগে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এই কথা বলেছেন। খবর আনাদোলুর।
পার্লামেন্টে বিরোধী গ্রিন পার্টির সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “জার্মানি অস্ত্র সরবরাহসহ ইসরায়েল রাষ্ট্রকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। জোট সরকার ইসরায়েলের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ।”
তিনি আরো বলেন, জার্মান নীতি যা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন দ্বারা পরিচালিত হয় ‘অবশ্যই অস্ত্র সরবরাহসহ সকল নীতিগত ক্ষেত্রে প্রযোজ্য’।
আরো পড়ুন:
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫৪ হাজার ৬০০ ছাড়াল
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি গায়ানা, যা বললেন রাষ্ট্রদূত
অস্ত্র রপ্তানি নীতির উপর এর প্রভাব কী হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী ফেডারেল সিকিউরিটি কাউন্সিলের কথা উল্লেখ করেন, যা গোপনে বৈঠক করে এবং অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।
মঙ্গলবার জার্মানির মতামত গবেষণা সংস্থা ইনসা একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে। সেখানে দেখা গেছে, গাজা যুদ্ধের আলোকে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করার পক্ষে বেশিরভাগ জার্মান নাগরিক মত দিয়েছেন।
মতামত জরিপের ভিত্তিতে, ৫৮ শতাংশ উত্তরদাতা অস্ত্র সরবরাহ সাময়িকভাবে বন্ধ করার পক্ষে ছিলেন। প্রায় ২২ শতাংশ দ্বিমত পোষণ করেছেন এবং প্রায় সমানভাবে বড় অংশ (১৯ শতাংশ) এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি বা দিতে চাননি।
বর্তমানে জার্মানিতে ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহ নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে, বিশেষ করে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের আলোকে, অনেক বিশ্ব নেতা প্রতিদিন ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যার ঘটনাকে গণহত্যা হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্প্রতি ইসরায়েলে জার্মান অস্ত্র রপ্তানি পর্যালোচনা করার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোব্রিন্ড্ট সম্মত পরিমাণে অস্ত্র রপ্তানি অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।
গত সোমবার জার্মান সরকার জানায়, তারা ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের কাছে প্রায় অর্ধ বিলিয়ন ইউরোর সমপরিমাণ অস্ত্র বিক্রি অনুমোদন করেছে।
সোমবার দেশটির সংসদে বাম দলের পক্ষ থেকে করা এক প্রশ্নের জবাবে জার্মান সরকারের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ১৩ মে পর্যন্ত সময়ের জন্য ইসরায়েলে অস্ত্র সরবরাহের উদ্দেশ্যে মোট ৪৮৫.
জার্মান সরকার ফেডারেল সাংবিধানিক আদালতের একটি রায়ের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, রপ্তানির প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। আদালত ইসরায়েলের সামরিক সক্ষমতা বা চাহিদা প্রকাশ করতে পারে এমন বিবরণ প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, কারণ এতে জার্মানির বৈদেশিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান সামরিক অভিযানের তীব্রতার দিকে ইঙ্গিত করে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল গত সপ্তাহে বলেছিলেন, বার্লিন ভবিষ্যতে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি নীতি পর্যালোচনা করতে পারে এবং তা সীমিত করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
বুধবার (৪ জুন), গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৫৪ হাজার ৬০৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল পরর ষ ট রমন ত র ইসর য় ল র প রক শ সরক র ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
সবজির দাম কমতির দিকে, আটার দাম কেজিতে বাড়ল ৫ টাকা
বাজারে বেড়েছে আটার দাম। খুচরা পর্যায়ে কেজিতে আটার দাম ৫ টাকা বেড়েছে। কমেছে খোলা চিনি ও কিছু সবজির দাম। আর খুচরা দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট, টাউন হল বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, খোলা ও মোড়কজাত (প্যাকেট) উভয় ধরনের আটার দামই বেড়েছে। ঢাকার বিভিন্ন খুচরা দোকান থেকে দুই সপ্তাহ আগে মোড়কজাত আটা (দুই কেজি) কেনা যেত ১০৫-১১০ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। আর খোলা আটার কেজি ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে।
এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে আটার দাম এক দফা বেড়েছিল। তখন দুই কেজির মোড়কজাত আটা ৯০-৯৫ থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছিল। খোলা আটার দাম বেড়ে হয়েছিল ৪৫-৪৮ টাকা। মাঝে আটার দামে ২-৩ টাকা ওঠানামা হয়।
চালের বাজারে দরদামে কিছুটা পরিবর্তন আছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে মঞ্জুর, সাগর, ডায়মন্ড ও আনোয়ার—এই চার ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক-দেড় টাকা বেড়েছে। তবে খুচরা বিক্রেতারা আগের দামেই অর্থাৎ ৮০-৮২ টাকা কেজি এসব চাল বিক্রি করছেন। এ ছাড়া নাজির, পাইজাম প্রভৃতি চালের দাম আগের মতো রয়েছে।
ব্রয়লার, সোনালি মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। গতকাল ঢাকার বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম ১৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর সাদা ডিমের দাম ডজনে এর চেয়ে ৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি। তবে ডিলার পর্যায়ে দাম কিছুটা বেড়েছে। এতে বিক্রেতাদের কমিশনের পরিমাণ কমেছে। সপ্তাহ দুই আগে খুচরা বিক্রেতারা ডিলারের কাছ থেকে ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল কিনতেন ৮৯০-৮৯৫ টাকায়; বিক্রি করতেন ৯১৫-৯২০ টাকায়। এখন সেটি ৯০০-৯১০ টাকায় কিনে আগের দামে বিক্রি করছেন।
বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহও কিছুটা কম রয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো অথবা ডিলাররা বাজারে কম পরিমাণে তেল সরবরাহ করছেন। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খুচরা মুদি বিক্রেতা হুমায়ুন কবীর জানালেন, গত মঙ্গলবার ডিলারের কাছে ৫ লিটারের ৫ কার্টন তেল চেয়েছিলেন। বুধবার ডিলার মাত্র ২ কার্টন তেল দিয়ে গেছে।
শীতে সাধারণত চায়ের চাহিদা বেড়ে যায়। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শীত আসার আগেই বেড়েছে চা–পাতার দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে (প্যাকেটজাত) চা–পাতার দাম কেজিতে ১০০ টাকার মতো বেড়েছে। বর্তমানে চা–পাতা বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা কেজি। অবশ্য বাজারে দাম কমেছে চিনির। ১৫ দিন আগে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গতকাল তা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে আটার দাম এক দফা বেড়েছিল। তখন দুই কেজির মোড়কজাত আটা ৯০-৯৫ থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছিল। খোলা আটার দাম বেড়ে হয়েছিল ৪৫-৪৮ টাকা। মাঝে আটার দামে ২-৩ টাকা ওঠানামা হয়।এ ছাড়া ব্রয়লার, সোনালি মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। গতকাল ঢাকার বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম ১৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর সাদা ডিমের দাম ডজনে এর চেয়ে ৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
বাজারে শীতের আগাম কিছু সবজি আসতে শুরু করেছে। এতে কিছু সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এখন ১০০ টাকা কেজির নিচে বেশির ভাগ সবজি কেনা যাচ্ছে। গতকাল প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১৪০ টাকায় ও টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া করলা, কাঁকরোল, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, পটোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল প্রভৃতি সবজির দাম রাখা হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এক-দুই সপ্তাহ আগে এসব সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেশি ছিল।
বর্তমানে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লালশাকের মতো শীত মৌসুমের কিছু আগাম শাকসবজি বাজারে এসেছে। যদিও এসব সবজির দাম তুলনামূলক বেশি। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘দুই-তিন মাস ধরে চড়া দামে সবজি কিনছি। এখন সবজির দাম কিছুটা কমা শুরু হয়েছে। কিন্তু এর আগেই বেড়ে গেছে আটা ও মিনিকেট চালের দাম। বাড়তি খরচ থেকে আমাদের মুক্তি নেই।’