ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেওয়ায় মহিলা দলের নেত্রীকে মারধর, অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
Published: 6th, June 2025 GMT
চাহিদামতো ভিজিএফের স্লিপ না পাওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদে তালা দিয়েছিলেন ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়ন মহিলা দলের সভাপতি মালেকা বেগম। ওই ঘটনার জেরে মারধরের শিকার হন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের লোকজন তাঁর ওপর হামলা করেন।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ভিজিএফের চাল নিতে আসা নারীদের হামলায় মালেকা বেগম আহত হয়েছেন।
এদিকে মালেকা বেগমের ওই অভিযোগের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভ করেছেন এলাকার লোকজন। বিকেল চারটা থেকে ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালিত হয়।
গত মঙ্গলবার সকালে চাঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদে মালেকা বেগমকে মারধর করা হয়। পরে তিনি তজুমদ্দিন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ভোলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। তিনি ইউপির সাবেক সদস্য। ওই ঘটনা সম্পর্কে মালেকা বেগম বলেন, ‘গত সোমবার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো.
এ সম্পর্কে বিএনপি নেতা ইব্রাহীম খলিল হাওলাদার বলেন, ‘ওই দিন (মঙ্গলবার) নারীদের মধ্যে চাল বিতরণের কথা ছিল। তাঁরা এসে পরিষদে তালা মারা দেখেন এবং মালেকা বেগমকে তালা খুলে দিতে বলেন। এ সময় কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে মালেকা বেগম হতদরিদ্র নারীদের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করেন। তখন তাঁরা তাঁকে পিটিয়ে জখম করেন। এ ঘটনায় আমার পরিবারের বা বিএনপির কেউ জড়িত নন।’
চাঁচড়া ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ইয়াজউদ্দিন বলেন, ‘তাঁদের ইউনিয়নে ১ হাজার ৬৭৪ জন হতদরিদ্রের নামে ঈদ উপলক্ষে ভিজিএফের চাল এসেছে। মহিলা সভাপতি (মালেক বেগম) একাই ১০০টি স্লিপ দাবি করেন। তাঁকে বলেছিলাম, আইডি কার্ড জমা দেন, চেষ্টা করব। ঘটনার দিন (মঙ্গলবার) সাড়ে ১০টার সময় পরিষদে গিয়ে জানতে পেরেছি তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।’
তজুমদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহব্বত খান বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক