পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মধুপাড়া বাজারে জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরে রামদার কোপে মিরান খন্দকার (৩২) নামের এক যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁর দুই হাত শরীর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে। আহত মিরান খন্দকার উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের ছোট বালিয়াতলী গ্রামের রফিক খন্দকারের ছেলে।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল মিরান খন্দকারের সঙ্গে তাঁর চাচাতো ভাই সোহেল খন্দকারের। গতকাল রাতে জরুরি কাজে মধুপাড়া বাজারে যান মিরান। বাজারে একা পেয়ে সোহেল তাঁর ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে হাতে থাকা রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপান। এতে মিরান গুরুতর আহত হন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাঁকে উদ্ধার করে কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১১টার দিকে তাঁকে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) পাঠানো হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জে এইচ খান লেলিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রামদার কোপে ওই যুবকের বাঁ হাতের কনুইয়ের নিচ থেকে এবং ডান হাতের কনুইয়ের ওপর থেকে কেটে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত আছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। তবে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় গতকাল রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

কলাপাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইলিয়াস তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে আহত ওই যুবককে দেখে এসেছি। ওই যুবকের হাত দুটির জখম গুরুতর। আমরা এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি গ্রহন

সম্প্রতি দেশে করোনার নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সতর্কতামুলক জরুরি নির্দেশনা অনুসারে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ প্রস্তুতি গ্রহন করেছে। বৃহস্পতিবার (১২ জুন) জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এ এফ এম মুশিউর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা শিল্প অধ্যুষিত এলাকা। ছোট্ট এই জেলাতে রয়েছে তৈরি পোশাক, পাট, সিমেন্টসহ নানা ধরনের কল-কারখানা। এসব কল-কারখানায় কাজ করছেন লাখো মানুষ। কাজের খোঁজে দেশের নানা প্রান্ত থেকে এখানে লোকজন ছুটে আসেন।

অনেকে আবার পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। বিশেষ করে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এ জেলা থেকে বিভিন্ন জেলায় ঈদ করতে যাওয়া লোকজন ফের নারায়ণগঞ্জে ফিরছেন। তাই এখানে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে।

বিষয়টি বিবেচনায় রেখে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। সম্ভাব্য করোনা মোকাবেলায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জেলা শহর ছাড়াও উপজেলা পর্যায়েও সর্বাত্মক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। 

তিনি আরও জানান, করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজন মতো সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে কমপক্ষে ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ না করতে অনুরোধ জানিয়েছে। এছাড়া হাঁচি-কাশির সময় টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক মুখ ঢাকতে হবে।

করোনা মোকাবেলার লক্ষ্যে আক্রান্ত রোগীদের সেবা প্রদান, স্বাস্থ্য ডেস্ক চালু, চিকিৎসাকাজে স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক, গ্লাভস ও রোগ প্রতিরোধী পোশাক (পিপিই) মজুত রাখতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এ এফ এম মুশিউর রহমান আরও জানান, নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে করোনাভাইরাস শনাক্তে রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য পিসিআর মেশিন আছে। আমরা দু'একদিনের ভিতরে কিট সরবরাহ করে সেই মেশিন গুলো চালু করব। পরীক্ষা নিরীক্ষা গুলো আমাদের হাসপাতালেই হবে। 

এ হাসপাতালকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে সিলেক্ট করেছি। গত করোনা কালীন সময়েও এ হাসপাতাল ডেডিকেটেড হিসেবে কাজ করেছে। জেনারেল রোগী গুলা এখানে ভর্তি হবে। আর কোন কিছুতে আতঙ্কিত না হয়ে যদি কোন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে সাথে সাথে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিবেন। 

আইসোলেশনে থাকবেন এবং মাক্স ব্যবহার করবেন ও স্বাভাবিক খাবার দাবার খাবেন এবং জনসমাগম ভীড় এড়িয়ে চলবেন তাহলে আমি মনে করি এই করোনা সংক্রমণকে রোধ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব। আর নারায়ণগঞ্জে আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ নেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে রোগ প্রতিরোধে নির্দেশনাগুলো প্রচার করতে বলা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ