প্রযোজনায় বাজেট ও কনটেন্টের ভারসাম্য তৈরি করা কঠিন: সকাল
Published: 12th, June 2025 GMT
দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে প্রযোজনার সঙ্গে যুক্ত মো. আসাদুজ্জামান সকাল। হাফ স্টপ ডাউন থেকে প্রযোজনা শুরু, এরপর এক দশকে তিনি প্রযোজনা করেছেন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, ডকুমেন্টারি, ওয়েব সিরিজ, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এরপর নিজেই খুলেছেন নতুন প্রযোজনা সংস্থা ডিজিটাল শ্যাডো।
ঈদে মুক্তি পেয়েছে তার সহ-প্রযোজিত ওয়েব সিরিজ ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’, যা দর্শক বেশ পছন্দ করছেন। সিরিজটি প্রযোজনা করতে আগ্রহী হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যখন ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’-এর প্রাথমিক ধারণা শুনি, তখনই বুঝি-এটা আমাদের সমাজ ও সময়কে নিয়ে এক সাহসী গল্প। নির্মাণের ভিশনটা এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, প্রযোজনা করতে আগ্রহটা একেবারে স্বাভাবিকভাবেই এসেছে।
ঈদের সময় দর্শকরা ভিন্নধর্মী কিছু খুঁজে থাকেন-ঠিক সেই জায়গা থেকেই সিরিজটি তৈরি করা হয়েছে বলেও জানান।
আসাদুজ্জামান সকালের মতে, বর্তমানে প্রযোজকদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো- সাস্টেইনেবল মডেল খুঁজে পাওয়া। ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এসেছে, কিন্তু বাজেট, রিটার্ন ও কনটেন্টের ভারসাম্য তৈরি করাটা কঠিন।
প্রযোজনার চ্যালেঞ্জিং দিক উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘একজন প্রযোজকের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ‘ভিশনকে বাস্তবে রূপ দেওয়া’। বাজেট, টেকনিক্যাল লজিস্টিক, ট্যালেন্ট, লোকেশন, সময়-সবকিছুর একটা ব্যালেন্স করতে হয়, যাতে নির্মাতার কল্পনা স্ক্রিনে ঠিকভাবে ফুটে ওঠে। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রত্যেক মানুষের ইগো, আবেগ ও চাপের মাঝে একটা পজিটিভ টোন বজায় রাখা।’
এই মুহূর্তে কয়েকটি আন্তর্জাতিক কনটেন্ট নিয়ে কাজ করছেন বলে জানান আসাদুজ্জামান। চেষ্টা চালাচ্ছেন দক্ষিণ এশিয়ার গল্পকে বিশ্বদর্শকের সামনে তুলে ধরার। এছাড়া একটি ফিচার ফিল্ম, একটি ডকুফিকশন এবং দুটি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সিরিজ ডেভেলপমেন্টে আছে বলেও জানান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রোজার আগেই নির্বাচন, এরপর আগের কাজে ফিরে যাবেন
অন্তর্বর্তী সরকার সময়মতো ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র রমজানের আগেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের পর তিনি তাঁর আগের কাজে ফিরে যাবেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভাকে এসব কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন থেকে ভিডিও ফোনকলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন জর্জিয়েভা।
এ সময় তাঁরা বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কার, আঞ্চলিক পরিস্থিতি এবং আগামী ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পূর্ববর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, অধ্যাপক ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি উল্লেখযোগ্যভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই কৃতিত্ব তাঁর নিজের।
অর্থনীতির সংকটকালীন পরিস্থিতি স্মরণ করে আইএমএফ প্রধান বলেন, ‘আপনার অর্জন আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প সময়ে আপনি অনেক কিছু করেছেন। যখন অবনতির ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি ছিল, তখন আপনি দেশের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপনি সঠিক সময়ে সঠিক ব্যক্তি।’
ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বিশেষভাবে বৈদেশিক মুদ্রা বাজারের স্থিতিশীলতা এবং রিজার্ভ পুনরুদ্ধারের জন্য সরকারের সাহসী পদক্ষেপ, বাজারভিত্তিক বিনিময় হার প্রবর্তনের প্রশংসা করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের এক সংকটময় সময়ে আইএমএফ প্রধানের অবিচল সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘চমৎকার সহায়তার জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত বছর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁদের প্রথম সাক্ষাৎ বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথ সুগম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল।
কথোপকথনে আইএমএফ প্রধান অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংকিং খাতে গভীর সংস্কার বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘শক্ত অবস্থানে থাকতে হলে সংস্কার অনিবার্য। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অমূল্য মুহূর্ত।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন এবং রাজস্ব সংগ্রহ জোরদারের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক বিধ্বস্ত ও সম্পূর্ণ ভেঙে পড়া অর্থনীতি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। কিছু ব্যক্তি আক্ষরিক অর্থে ব্যাগভর্তি টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
এ ছাড়া আঞ্চলিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল নেপালে চলমান যুব আন্দোলন এবং আসিয়ানভুক্তির জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা। অধ্যাপক ইউনূস আঞ্চলিক কানেক্টিভিটি জোরদারের লক্ষ্যে ঢাকার বৃহৎ অবকাঠামো উদ্যোগ—যেমন নতুন বন্দর ও টার্মিনাল প্রকল্প—সম্পর্কেও অবহিত করেন।
আলোচনাকালে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।