সিঙ্গাপুর ম্যাচ ঘিরে ফুটবল জ্বরে বুঁদ হয়েছিল পুরো দেশ। জাতীয় স্টেডিয়ামে হামজা দেওয়ান চৌধুরী-শমিত সোমদের খেলা দেখতে টিকিটের জন্য অনলাইনে সে কি যুদ্ধ ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে। ফুটবল উন্মাদনার এই রেশটা এবার ঢাকার বাইরে ছড়িয়ে দিতে চায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।
৯ অক্টোবর হংকংয়ের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচটি চট্টগ্রাম কিংবা সিলেটে আয়োজনের পরিকল্পনা বাফুফের। তবে স্টেডিয়ামের বর্তমান অবস্থা বিচারে চট্টগ্রামের চেয়ে সিলেটের পরিস্থিতি ভালো। তার ওপর হামজার বিভাগ সিলেট হওয়ায় সেখানেই হতে পারে বাংলাদেশ-হংকং ফুটবল লড়াই।
বৃহস্পতিবার সমকালের কাছে তেমন ইঙ্গিত দিয়েছেন বাফুফে সহসভাপতি ফাহাদ করিম, ‘আমার খুব ইচ্ছে হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি ঢাকার বাইরে করা। সবকিছু নির্ভর করছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ওপর।’
সম্প্রতি চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম বাফুফেকে বরাদ্দ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্তারা। চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইট নেই। গ্যালারির চেয়ারও ভালো না। এই অবস্থায় চট্টগ্রামে হংকং ম্যাচ আয়োজন করা কঠিন। তবে তিন মাসের মধ্যে ফ্লাডলাইট লাগানো সম্ভব বলে মনে করেন ফাহাদ করিম।
শেষ পর্যন্ত চট্টগ্রামে না হলে বিকল্প ভেন্যু সিলেটকে চান বাফুফের অন্যতম এ সহসভাপতি, ‘সিলেটে হলেও ভালো। সেখানে ফ্লাডলাইট আছে। গ্যালারিতে ধারণক্ষমতা ১৫ হাজারের মতো। হামজা খেলবেন বলে টিকিটের জন্য যুদ্ধ শুরু হবে সিলেটে।’
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে টিকিট বিক্রির স্বত্ব পাওয়া টিকিফাইয়ের ওপর অসন্তুষ্ট বাফুফে। এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের সামনের ম্যাচগুলোতেও অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হবে। টেন্ডারে যারা পাবে, তাদেরকে দেবে ফেডারেশন। সেক্ষেত্রে সহজ ডটকম কিংবা বিডি টিকিট ডটকমের যে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানকে ম্যাচটির টিকিট বিক্রির স্বত্ব দেওয়া হতে পারে।
১৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুনত্বের ছোঁয়া লাগলেও জাতীয় স্টেডিয়ামের মাঠের ঘাস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন জাতের ঘাস লাগানোয় খারাপ অবস্থা দেখা যায় মাঠে। তাই তো সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের পর এ স্টেডিয়ামে নতুন ঘাস বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাফুফে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার
স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।
আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।
হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’