চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ– বছরের পর বছর শুধু এই একটি ট্রফির জন্য মাথা কুটে মরেছেন পিএসজি চেয়ারম্যান নাসের আল খেলাইফি। প্যারিসের ক্লাবটির কাতারি মালিকরা গত ১৪ বছরে বিলিয়ন ডলার ব্যয় করার পর মহাকাঙ্ক্ষিত সেই ট্রফি ধরা দিয়েছে। সেই স্বপ্ন পূরণের ১৫ দিন পার না হতেই নতুন এক চ্যালেঞ্জ নিয়েছে পিএসজি। এবার ক্লাব বিশ্বকাপ জিততে চান লুইস এনরিকের শিষ্যরা। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় স্প্যানিশ জায়ান্ট অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নতুন মিশন শুরু করবে পিএসজি।
দুই সপ্তাহ আগে মিউনিখের অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে পিএসজি। তবে এমন একটি উত্তেজনায় ঠাসা ও স্মরণীয় মৌসুম শেষ করেও ক্লান্ত নন এনরিকে। ক্লাব বিশ্বকাপে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুত তাঁর দল, ‘আমার দৃঢ়বিশ্বাস অসাধারণ একটি টুর্নামেন্ট হবে। আমাদের লক্ষ্য হলো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ফুটবল খেলা এবং মৌসুমের পঞ্চম ট্রফিটি জয় করা।’
আর এই পাঁচ নম্বর ট্রফি জয়ের পেছনে এনরিকের ভরসা তারুণ্য। লিওনেল মেসি, নেইমার জুনিয়র, কিলিয়ান এমবাপ্পের মতো বিশ্বসেরারা যা পারেননি, এবার দেম্বেলে, দুয়ে, ভিতিনহা, বারকোলার মতো তরুণরা সেটা করে দেখিয়েছেন। তাদের সেই ঐতিহাসিক জয় উদযাপন করেছে পুরো ফ্রান্স। প্যারিসে পার্ক ডি প্রিন্সেস স্টেডিয়ামে প্রায় ৫০ হাজার সমর্থকের উপস্থিতিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ীদের সংবর্ধনা জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ।
সেই উদযাপনের সময়ই ফরাসি ক্রীড়া দৈনিক লা’ইকিপকে ডিফেন্ডার লুকাস হার্নান্দেজ বলেছিলেন, ‘আমরা ক্লাবের জন্য, শহরের জন্য, দেশের জন্য ইতিহাস গড়েছি। তাই বলে এখানেই থেমে যাব না।’ তিনি এখানে যে বিশ্ব ক্লাব কাপকে ইঙ্গিত করেছেন, সেটা পরিষ্কার। গত আগস্ট থেকে পিএসজি ৫৮টি ম্যাচ খেলেছে এবং এই মৌসুমে ফ্রান্সের ঘরোয়া ফুটবলের সব ট্রফি জিতেছে।
পিএসজির এই অগ্রযাত্রায় বাধা হতে পারে ক্লান্তি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের হিরো ডিজেরে দুয়ে, দেম্বেলেসহ ক্লাবের অধিকাংশ খেলোয়াড় লম্বা সময় ধরে খেলছেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শেষ করেই তারা জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। গত সপ্তাহে দেশের হয়ে মাঠে নামার পর আবার ক্লাব বিশ্বকাপে। আজ লস অ্যাঞ্জেলেস শহরতলীর অদূরে প্যাসেদানার রোজ বোল স্টেডিয়ামে ইউরোপের আরেক হেভিওয়েট অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মুখোমুখি হবেন তারা। গ্রুপ ‘বি’তে তারা দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের বোতাফোগো ও সিয়াটল সাউন্ডার্সের মুখোমুখি হবে।
পিএসজি যদি ১৩ জুলাই নিউইয়র্কের ফাইনালে খেলতে চায়, তাহলে গ্রুপ পর্বের বাধা পেরোনোর পর আরও তিনটি ম্যাচ জিততে হবে। তবে এই ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য নতুন কোনো খেলোয়াড় যুক্ত করেনি পিএসজি। ক্লান্ত খেলোয়াড়দের ওপরই নির্ভর করছেন এনরিকে। এখন দেখার বিষয়, তাঁর তরুণ ব্রিগেড ক্লান্তি কাটিয়ে কতটা ভালো খেলতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ল ব ব শ বক প প এসজ ক ল ব ব শ বক প র জন য প এসজ এনর ক
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?