ইরানে নজিরবিহীন ইসরায়েলি হামলার পর পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরান। হামলার তীব্রতাও বাড়ছে। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলার লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে ঘরবাড়ি ও স্থাপনা নির্মাণ এবং আগাম সতর্কতার কারণে ইসরায়েলে প্রাণহানি কম হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ‘হোম ফ্রন্ট কমান্ড অ্যাপ’।

এই অ্যাপের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার ১৫-৩০ মিনিট আগেই সতর্কবার্তা পেয়ে যাচ্ছেন ইসরায়েলিরা। এরপর তাঁরা আশ্রয় নিচ্ছেন বোমা সুরক্ষা কেন্দ্র (বোম্ব শেল্টার) ও নিরাপদ কক্ষে। প্রাণহানি এড়াতে ‘বোম্ব শেল্টার’ ও নিরাপদ কক্ষের কার্যকারিতা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর ‘হোম ফ্রন্ট কমান্ড’ শনিবার জানিয়েছে, তারা ইরানের সম্ভাব্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ১৫-৩০ মিনিট আগে ইসরায়েলিদের ফোনে সতর্কবার্তা পাঠানো শুরু করেছে, যাতে মানুষ বোম্ব শেল্টারে পৌঁছানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় পান।

হোম ফ্রন্ট কমান্ড অ্যাপের মাধ্যমে এই আগাম সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। বেসামরিক নাগরিকদের বোম্ব শেল্টারের কাছাকাছি থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, যাঁদের বাড়িতে বোমা প্রতিরোধী কক্ষ নেই, তাঁদের সময়মতো আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে এটি সহায়তা করবে।

ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের পর ইরান থেকে ইসরায়েলে পৌঁছাতে সাধারণত প্রায় ১০ মিনিট সময় লাগে। তবে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী সাধারণত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার কয়েক মিনিট আগেই ইরানি সামরিক বাহিনীর প্রস্তুতির ওপর ভিত্তি করে হামলার বিষয়টি শনাক্ত করতে পারে।

একবার নিশ্চিত উৎক্ষেপণ শনাক্ত হলেই হোম ফ্রন্ট কমান্ড তাদের অ্যাপ ও মুঠোফোন সম্প্রচার পদ্ধতি (সেল ব্রডকাস্ট সিস্টেম) উভয়টি ব্যবহার করে একটি আগাম সতর্কতা দেয়, যাতে বেসামরিক নাগরিকেরা বোম্ব শেল্টারে যেতে পারেন। শুক্রবার থেকে এমনটি করে করে আসছে হোম ফ্রন্ট কমান্ড। এতে বেসামরিক নাগরিকেরা আশ্রয়কেন্দ্রে পৌঁছাতে প্রায় ১০ মিনিট সময় পাচ্ছেন।

ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানার প্রায় ৯০ সেকেন্ড আগে সাইরেন বাজে। সাইরেন বাজার সঙ্গে সঙ্গে বেসামরিক নাগরিকদের অবশ্যই তাৎক্ষণিক বোম্ব শেল্টারে প্রবেশ করতে হবে আর ‘অল-ক্লিয়ার (সবকিছু স্বাভাবিক)’ বার্তা না দেওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হবে।

শুক্রবার রাতে ইরান যখন প্রথম ধাপে বেশ কয়েকটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন হোম ফ্রন্ট কমান্ড বেসামরিক নাগরিকদের বোম্ব শেল্টারের কাছাকাছি থাকতে নির্দেশনা দেয়। শনিবার বিকেলে এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হয়।

হোম ফ্রন্ট কমান্ড জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শেষ হয়েছে বলে মনে হলে তারা বেসামরিক নাগরিকদের বোম্ব শেল্টার ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি এবং সেগুলোর কাছাকাছি থাকার আর প্রয়োজন হবে না, এমন একটি হালনাগাদ বার্তা দেবে। যদি আরেকটি হামলার আশঙ্কা থাকে, তবে শুরু থেকে যে প্রক্রিয়াটি মেনে চলা হয়েছে, তা একইভাবে অনুসরণ করা হবে।

হোম ফ্রন্ট কমান্ড জোর দিয়ে বলেছে, ভবন বা স্থাপনার ভূগর্ভস্থ পার্কিংয়ের জায়গা বোম্ব শেল্টার হিসেবে বিবেচিত হবে না, যদি না এটি সেভাবে উপযোগী করে নির্মাণ করা হয়।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সময় ইসরায়েলের হাইফায় একটি আশ্রয়কেন্দ্রের চিত্র.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

১২ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি কেরানীগঞ্জে বহুতল ভবনের আগুন

ঢাকার কেরানীগঞ্জের আগানগরে জমেলা টাওয়ারে লাগা আগুন ১২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিট। আগুন লাগা ভবনে আটকেপড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস৷

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের ডাইরেক্টর (অপারেশন) তাইজুল ইসলাম। এর আগে, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ১২ তলা ওই ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে।

আরো পড়ুন:

কৃষিজমি ক্ষতির শঙ্কায় ভেকুসহ মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ

সুনামগঞ্জে আগুনে পুড়ল ৭ ঘর 

তাইজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আগুন লাগার খবর পেয়ে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। পরে আরো ১০টি ইউনিট যুক্ত হয়। বর্তমানে ২০টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে আটকে পড়া ৪৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘ভবনের ভেতরে বিপুল পরিমাণ দাহ্য বস্তু থাকায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে রবিবার পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজনে অতিরিক্ত ইউনিট মোতায়েন করা হবে এবং আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।’’

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘এখনই সূত্রপাত বলা যাবে না, আগে আগুন নিয়ন্ত্রণ করব, তারপর সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বলা যাবে।’’

ঢাকা/শিপন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ