কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর স্টেডিয়াম থেকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত আইভি রহমানের নাম সরানো হয়েছে। নতুন নাম করা হয়েছে ‘উপজেলা স্টেডিয়াম’।

আইভী রহমান ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন। তিনি তখন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ছিলেন।

নাম বদলকে কেন্দ্র করে ভৈরবে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। স্থানীয় একজন সাংস্কৃতিক কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, ‘নামকরণ বা পরিবর্তনের পেছনে কোনো সার্বজনীন চিন্তা কাজ করেনি; বরং এতে ক্ষমতার প্রভাবই স্পষ্ট।’

স্বাধীনতার পর তিন একর জায়গায় ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায় এই স্টেডিয়াম নির্মিত হয়। তখন এর নাম ছিল ‘ভৈরব পৌর স্টেডিয়াম’। শুরু থেকেই এর ব্যবস্থাপনায় ছিল পৌর প্রশাসন।

আইভি রহমানের স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি মো.

জিল্লুর রহমান ও তাঁর বাবার বাড়ি ভৈরবে। তাঁর ছেলে নাজমুল হাসান পাপন কিশোরগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর মায়ের নামে স্টেডিয়ামটির নামকরণের উদ্যোগ নেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থায়নে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে পুনর্নির্মাণের পর ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘শহীদ আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়াম’ হিসেবে এটি উদ্বোধন করা হয়।

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর স্টেডিয়ামসহ আইভি রহমানের নামে করা বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে এক চিঠিতে স্টেডিয়ামের নতুন নাম ‘উপজেলা স্টেডিয়াম’ নির্ধারণ করে উপজেলা ও পৌর প্রশাসনকে জানানো হয়। পরে পুরোনো নামফলক সরিয়ে নতুন নামফলক স্থাপন করা হয়েছে।

ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘পরিস্থিতির কারণে আইভি রহমানের নাম সরিয়ে দিল। আবার সুযোগ বুঝে আমরাও টানিয়ে নিব।’

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক শবনম শারমিন প্রথম আলোকে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে নাম পরিবর্তনের চিঠি পাওয়ার পর স্টেডিয়ামের নামফলক পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন থেকে এটি অফিশিয়ালি ‘উপজেলা স্টেডিয়াম’ নামে পরিচিত হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রহম ন র ন ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ