সাধারণত অতীতে খেলে আসা ক্লাবের বিপক্ষে গোল করে অনেক ফুটবলারই উদ্‌যাপন করেন না। একসময় যে ক্লাবের জার্সি পরে খেলেছেন, তাদের প্রতি এবং সেই ক্লাবের সমর্থকদের প্রতি সম্মান দেখাতে গিয়েই এই কাজটি করেন ফুটবলাররা। ফুটবল মাঠে এটা খুবই পরিচিত একটি দৃশ্য।

গতকাল রাতে বোকা জুনিয়র্সের সঙ্গে ২–২ গোলের ড্রয়ের পর সেই একই কাজ করেছেন বেনফিকার আর্জেন্টাইন উইঙ্গার আনহেল দিয়া মারিয়া। বোকা জুনিয়র্সের বিপক্ষে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে পেনাল্টিতে গোল করার পর চিরচেনা উদ্‌যাপন থেকে বিরত থাকেন দি মারিয়া। এমনকি হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গিও করেন তিনি।

এই দৃশ্য দেখে তাৎক্ষণিকভাবে অনেকের মনে হতে পারে, অতীতে হয়তো বোকা জুনিয়র্সের হয়ে খেলার কারণেই উদ্‌যাপন করেননি দি মারিয়া। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, দি মারিয়া কখনোই বোকার হয়ে খেলেননি। পুরো ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত একটি আর্জেন্টাইন ক্লাবেই খেলেছেন তিনি—রোজারিও সেন্ট্রাল। এই ক্লাবের বয়সভিত্তিক দলের হয়ে খেলেই ফুটবলে হাতেখড়ি দি মারিয়ার।

আরও পড়ুনচেলসির ম্যাচে ৫০ হাজার আসন ফাঁকা, কেন এই দুরবস্থা ৩ ঘণ্টা আগে

২০০৫ সালে ক্লাবটির হয়েই পেশাদার ফুটবলে যাত্রা শুরু করেন বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার। ক্লাব বিশ্বকাপ শেষে বেনফিকা ছেড়ে সেই রোজারিও সেন্ট্রালেই ফিরে যাবেন দি মারিয়া। প্রশ্ন হচ্ছে, রোজারিও সেন্ট্রালই যদি আর্জেন্টিনায় দি মারিয়ার একমাত্র ঠিকানা হয়, তবে কেন তিনি বোকার বিপক্ষে গোল করে ক্ষমা চাইলেন? কিংবা আদৌ তিনি ক্ষমা চেয়েছেন কি না?

বোকা জুনিয়র্সের বিপক্ষে ম্যাচে দি মারিয়া.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ ল কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ