প্রতীকী ছবি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চিমামান্দা এনগোজি আদিচির নারীবাদ

চিমামান্দা এনগোজি আদিচি একজন নাইজেরীয় কবি ও আখ্যান লেখক। আদিচির কবিতা, গল্প ও উপন্যাসগুলোতে সব সময় একটা নারীবাদী দৃষ্টিকোণ প্রয়োগ করতে দেখা যায়। বিশেষ করে আফ্রিকার সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্য, পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণা, নারীর ওপর বলপ্রয়োগ ও নিপীড়ন এবং নারী-স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যুক্তি ও শক্তি প্রয়োগের বিষয়গুলো। ছোটবেলা থেকে আদিচি দেখেও এসেছেন ‘নারীবাদী’ শব্দটি এবং ‘নারীবাদ’ সম্পর্কে আফ্রিকার ধারণাগুলো নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ। তাই আদিচি স্বভাবগতভাবে নারীবাদ-সংক্রান্ত নিজের বক্তৃতায় ও রচনায় এসব বিষয়কে নারীবাদের অনুষঙ্গ করে গল্পাকারে আফ্রিকার বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয় আদিচির নারীবাদবিষয়ক প্রথম বই ‘উই শুড অল বি ফ্যামিনিস্টস’ এবং দ্বিতীয় বই ‘ডিয়ার ইজাওয়েলে: আ ফ্যামিনিস্ট ম্যানিফেস্টো ইন ফিফটিন সাজেশনস’ প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে। বলতে গেলে নাইজেরিয়ার বাস্তবতা, ঐতিহ্য ও ইগবো সংস্কৃতির আলোকে আদিচির দুই রচনায়ই নারীবাদ ও নারীবাদী চিন্তার স্বতন্ত্র ধরন প্রকাশ পায়। একইভাবে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর নারী-পরিপ্রেক্ষিতের সর্বজনীন বিষয়ও তাঁর ভাবনায় ফুটে উঠতে দেখা যায়।

আদিচির চৌদ্দ বছর বয়সে তর্কচ্ছলে তাঁর বড় ভাইয়ের বন্ধু ওকুলোমা তাঁকে নারীবাদী তকমা দেন। তখনো তিনি নারীবাদী শব্দটার সঙ্গে অপরিচিত ছিলেন এবং তার মানেও জানতেন না। আর ওকুলোমা শব্দটাকে এমনভাবে প্রয়োগ করেছিলেন যে আদিচির ধারণা হয়েছিল, বিষয়টার সঙ্গে সন্ত্রাসের সম্পর্ক বিদ্যমান। পরে অভিধান ঘেঁটে আদিচি শব্দটার অর্থ জেনে নিয়েছিলেন। তার অনেক পরে, ছাব্বিশ বছর বয়সে আদিচির প্রথম উপন্যাস ‘পার্পল হিবিসকাস’ (২০০৩) প্রকাশিত হয়। উপন্যাসের প্রোটাগোনিস্ট লোকটি আর সব নির্যাতনের সঙ্গে স্ত্রীকে শারীরিকভাবেও প্রহার করত, তাই গল্পের পরিণতিটা বেদনাদায়ক হয়। এমন গল্পের জন্য পাঠকেরা আদিচিকে ‘নারীবাদী লেখক’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। একজন সুহৃদ সাংবাদিক-পাঠক আদিচিকে প্রথম বিষয়টি অবগত করেন এবং উপদেশ দেন, তিনি যেন নিজেকে নারীবাদী হিসেবে প্রকাশ না করেন। একই সঙ্গে ওই সাংবাদিক নারীবাদীদের একটা সংজ্ঞার্থও ছুড়ে দেন আদিচির উদ্দেশে, ‘স্বামী না পেয়ে যেসব মেয়ে অসুখী হয়, তারাই নারীবাদী।’

নারীবাদীরা পুরুষকে ঘৃণা করে। তাই আদিচি ঠিক করলেন, তিনি এমন একজন নারীবাদী হবেন, যিনি পুরুষকে ঘৃণা করেন না। তাই হলেনও একজন সুখী আফ্রিকান নারীবাদী। আদিচি পুরুষকে ঘৃণা করেন না কিংবা তিনি পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য নয়, নিজের আনন্দের জন্য লিপগ্লস ও হাইহিল পরতে পছন্দ করেন।

পরে আদিচি নাইজেরিয়ার একজন নারী শিক্ষাবিদের কাছ থেকে জানতে পারেন, নারীবাদ নামক জিনিসটা আফ্রিকার সংস্কৃতি নয়। ওই শিক্ষাবিদের ধারণা, পশ্চিমা বিশ্বের বই পড়ে আদিচির মাথা বিগড়ে গেছে এবং তিনি নারীবাদী হয়ে উঠেছেন। অথচ আদিচির কাছে বিষয়টা এমন ছিল না। তবে নারীবাদ যেহেতু আফ্রিকার বিষয় নয়, তাহলে তাঁর আফ্রিকান নারীবাদী হতে আপত্তি নেই। বন্ধুরা বলাবলি করলেন, নারীবাদীরা পুরুষকে ঘৃণা করে। তাই আদিচি ঠিক করলেন, তিনি এমন একজন নারীবাদী হবেন, যিনি পুরুষকে ঘৃণা করেন না। তাই হলেনও একজন সুখী আফ্রিকান নারীবাদী। আদিচি পুরুষকে ঘৃণা করেন না কিংবা তিনি পুরুষের মনোরঞ্জনের জন্য নয়, নিজের আনন্দের জন্য লিপগ্লস ও হাইহিল পরতে পছন্দ করেন। আসলে এর বেশির ভাগই নিছক ব্যঙ্গাত্মক ব্যাপার ছিল।

আদিচির নারীবাদবিষয়ক প্রথম বই ‘উই শুড অল বি ফ্যামিনিস্টস’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঘরের চালে ঢিল ছোড়া নিয়ে বিরোধ, মীমাংসার পর মারামারিতে প্রাণ গেল একজনের
  • জাদুঘর থেকে উধাও ফারাওর সেই ব্রেসলেট চুরির পর সোনা পেতে গলিয়ে ফেলা হয়েছে
  • কারাগারে ও বিদেশে ছিলেন আসামিরা, তবু ‘মোবাইলের আলোতে চিনতে’ পেরেছেন বাদী এনসিপি নেতা
  • জীবিকার জন্য পরিশ্রম করা ইবাদত
  • যুক্তরাষ্ট্রের হেনড্রিক্স কলেজের মর্যাদাপূর্ণ বৃত্তি পাওয়া চারজনের একজন বাংলাদেশের মুমতাহিনা
  • চার্লি কার্ককে কে হত্যা করল
  • এক অধ্যাপকের কাছেই অসহায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
  • চৌধুরীবাড়ি ব্যবসায়ী নির্বাচনে ব্যাডমিন্টন মার্কায় গনসংযোগে এগিয়ে মেরাজ
  • ফ্রান্সজুড়ে কৃচ্ছ্রতা বিরোধী বিক্ষোভ
  • চিমামান্দা এনগোজি আদিচির নারীবাদ