দলীয়করণ করলে গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের অবমূল্যায়ন করা হবে: জাহিদ হোসেন
Published: 21st, June 2025 GMT
আওয়ামী লীগের মতো দলীয়করণ করা হলে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের শহীদদের অবমূল্যায়ন করা হবে বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, তাঁরা শহীদ হয়েছেন জাতির জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।
আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় জাহিদ হোসেন এ কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আপনারা আবু সাঈদ, মুগ্ধ অথবা ওয়াসিমের কথা বলেন; কিন্তু আমাদের সব শহীদের কথা বারবার বলতে হবে। শহীদদের যদি আপনারা ওই আওয়ামী লীগের মতো দলীয়করণ করেন, শহীদদের অবমূল্যায়ন করা হবে। এঁরা শহীদ জাতির জন্য, গণতন্ত্রের জন্য।’
এ সময় আওয়ামী লীগের ১৭ বছরের ইতিহাস ভুলে না যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জাহিদ হোসেন বলেন, ইলিয়াস আলী, কমিশনার চৌধুরী আলমকে মনে রাখতে হবে। ১৭ বছরের ইতিহাসকে ভুলে গেলে কোনো অবস্থাতেই জুলাই-আগস্টের লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না।
বিএনপির নেতা জাহিদ হোসেন আরও বলেন, ’৪৭ না হলে ’৬৯ হতো না; ’৬৯ না হলে ’৭১ হতো না; ’৭১ না হলে ’৯০ আসত না। আর ’৯০ না আসলে ২৪–এর জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান হতো কি না, বিরাট বড় প্রশ্ন থেকে যায়। তাই যাঁর যা অবদান, তা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে এবং তাঁদের যথাযথ সম্মান দিতে হবে।
দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে তাঁদের পছন্দের প্রার্থী বাছাইয়ের সুযোগ দেওয়ারও দাবি জানান জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, জনগণ যাকে ভালো মনে করবে, তাকে গ্রহণ করবে। যাকে ভালো মনে করবে না, তাকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের সমালোচনা প্রসঙ্গেও কথা বলেন বিএনপির এই নেতা। সমালোচকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা প্রত্যেক দিন যমুনাতে (প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন) যান। যমুনা থেকে বের হওয়ার পরে আপনারা আপনাদের মতো বলেন আর প্রেসসচিব তাঁর মতো করে প্রেস ব্রিফিং করেন। এটার মধ্যে কোনো দোষ নেই; কিন্তু দোষ তারেক রহমান সাহেবের সঙ্গে ড.
প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকের পর দেশে অনেক ধরনের বিশৃঙ্খলা কমে গেছে এবং শান্তিশৃঙ্খলা ফিরে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন জাহিদ হোসেন।
ন্যাশনালিস্ট রিসার্চ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক সৈয়দ আবদাল আহমদের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. শামছুল আলম, বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ হোসেন আলমগীর (পাভেল), বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র উপদ ষ ট র জন য আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি উড়ে এসে জুড়ে বসেনি: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ দেশে যা কিছু ভালো, সবকিছু দিয়েছে বিএনপি। তাই নানা নির্যাতন-নিপীড়ন করেও দলটিকে কেউ বিলীন করতে পারেনি। এই দল ফিনিক্স পাখির মতো। একে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু সফল হয়নি। বরং ষড়যন্ত্রকারীরাই পালিয়ে গেছে। বিএনপি সেই দল, যারা উড়ে এসে জুড়ে বসেনি।
আজ শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের পুরোনো স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে জানিয়ে এই নেতা বলেন, বর্তমানে দেশে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে এবং মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে বিএনপিকে। যাদের কাল জন্ম হয়েছে এবং যারা একাত্তর সালে ভিন্ন অবস্থানে কিংবা ভিন্ন জায়গায় ছিল—তারাও বিএনপিকে নিয়ে নানা কথা বলে। যা কিছু ভালো, তার সবকিছু বাংলাদেশে দিয়েছে এই বিএনপি। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিএনপি এই পর্যায়ে এসেছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে যে সুযোগ এসেছে এবং নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে—তা কাজে লাগাতে হবে। বিএনপি এ জন্য প্রস্তুত।
দেশ গঠনে বিএনপির অবদান তুলে ধরে দলটির মহাসচিব বলেন, শহীদ জিয়া ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন। এর আগে শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র চারটি পত্রিকা চালু রেখে সব পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দেন। তরুণদের এ কথাটা জানা দরকার। শহীদ জিয়ার স্বপ্ন ছিল একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করেন। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে আসেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে ও মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম। বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ, কোষাধ্যক্ষ এম রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ওয়ারেছ আলী ও আরেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।