শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ও ছাত্রত্ব বাতিল করার দাবিতে মশাল মিছিল হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে ক্যাম্পাসে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’র ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রাত সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসের গোলচত্বর থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়। ছাত্রী হল প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। সেখানে রাত ১০টার দিকে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে রাত ৯টা থেকে মশাল মিছিল হাতে গোলচত্বরে জমায়েত হন শিক্ষার্থীরা।

মশাল মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘ধর্ষকদের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ছাত্রত্ব বাতিল চাই, বাতিল করো করতে হবে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘হ্যাঙ দ্য রেপিস্ট, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘সাস্টিয়ান সাস্টিয়ান, এক হও লড়াই কর’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

গত ২ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে মেসে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত দুজন হলেন ওই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী স্বাগত দাস (পার্থ) ও শান্ত তারার (আদনান)। এ নিয়ে ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। মামলা করার পর ওই দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল ওই দুই ছাত্রের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ধর্ষণের ঘটনার পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে কর্মসূচি করছেন।

গতকাল রাতে সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নূরউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বোনদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি ধর্ষকদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শাস্তির মাধ্যমে এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে, যাতে পরবর্তীতে কেউ বিন্দুমাত্র কোনো সাহস না করে।’

আরেক শিক্ষার্থী জেমিমা জামান বলেন, ‘আমরা চাই, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে। অভিযুক্তদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে, তবে মামলার বিষয়টি যেন থেমে না যায়। দ্রুতই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক—আমরা মশাল মিছিল থেকে এই বার্তা দিচ্ছি।’

আরও পড়ুনধর্ষণের মামলায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র ৪ দিনের রিমান্ডে২১ ঘণ্টা আগে

সমাবেশ শেষে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রতীকী ছবিতে আগুন ধরিয়ে শাস্তির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ওই ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় জরুরি সিন্ডিকেটের বৈঠক ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বৈঠকে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্র প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ‍মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান। 

তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া

বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত

ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।

তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।

দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।

অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। 

বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ