পাথর কোয়ারি চালুর দাবিতে মানববন্ধনে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি নেতাদের একাত্মতা
Published: 24th, June 2025 GMT
সিলেটে পাথর কোয়ারিগুলো ইজারা দিয়ে আবারও চালুর দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে যোগ দিয়ে একাত্মতা জানিয়েছেন সিলেটের বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির শীর্ষ ছয় নেতা। এ ঘটনার সমালোচনা করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। সিলেট জেলা পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এই মানববন্ধন শেষে নগরে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এতে অংশ নেন তিনটি রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতারা।
কর্মসূচিতে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগরের আমির মো.
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী কিম প্রথম আলোকে বলেন, বিগত সরকারের সময়ে সিলেটের পাথর লুটের নেপথ্যে ছিলেন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা। সাবেক মন্ত্রী, এমপি ও জেলা-উপজেলার নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় পাথর লুট হয়েছে। ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ লুটপাটের সুযোগ হারালেও লুট অব্যাহত আছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সিলেটের পাথর–রাজ্য লুটপাটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১০ মাসে হাজার কোটি টাকার পাথর লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় পাথর কোয়ারি খোলার দাবিতে আয়োজিত কর্মসূচিতে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের অংশগ্রহণ অনভিপ্রেত।
সিলেটের পাঁচটি পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন। আজ মঙ্গলবার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজীপুরে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন
গাজীপুরের সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার ঘটনার বিচার ও সারাদেশে সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
শনিবার (৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছেন রাবিতে কর্মরত সাংবাদিকরা।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাংবাদিকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তুহিন হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হলে এবং সারাদেশে সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা বিধান না হলে আরো কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।
আরো পড়ুন:
অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ
চটের বিছানা নিয়ে বাগবিতণ্ডা, যুবককে হত্যা
বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সৈয়দ সাকিব বলেন, “সাম্প্রতিক যে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে, এ রকম নৃশংসভাবে সাংবাদিককে হত্যা সর্বশেষ কবে হয়েছে আমার মনে পড়ে না। অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টাকে উদ্দেশ্য করে আমি বলতে চাই, আপনার কাছ থেকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা আমরা শুনতে চাই। আপনি এ সংবাদকর্মীদের অভিভাবক, কিন্তু এখনো পর্যন্ত আমরা আপনার কোনো প্রতিবাদ দেখিনি, এমনকি একটি ফেসবুক পোস্টও না। এভাবে একদম প্রকাশ্যে ও নৃশংসভাবে একজন সংবাদকর্মীকে হত্যার পরো আপনার পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য না আসা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা আজ এখানে সমগ্র দেশের সাংবাদিকদের নিরাপত্তার দাবি নিয়ে দাঁড়িয়েছি। অবিলম্বে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং আমরা যারা সাংবাদিক আছি, আমাদের নিরাপত্তাও আপনাদের নিশ্চিত করতে হবে। রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমরা বিভিন্ন ধরনের পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি, তাই আমাদের নিরাপত্তা এখন সময়ের দাবি।”
বিক্ষোভ সমাবেশে বর্তমান সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি মনির হোসেন মাহিন বলেন, “সাংবাদিক তুহিনকে প্রকাশ্যে যেভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা আমরা সবাই দেখেছি। জুলাই-পরবর্তী সময়েও যদি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
তিনি বলেন, “আজ আমাদের এখানে দাঁড়ানোর কথা নয়। এখন আমাদের রাষ্ট্র নিয়ে ভাবার কথা, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার কথা। কিন্তু আজ দাঁড়িয়েছি আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার চাইতে। সাংবাদিকদের অবহেলার চোখে দেখার কোনো সুযোগ নেই। সাংবাদিকরা যেমন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কলম দিয়ে লিখতে পারে, তেমনি প্রয়োজনে সেই কলমকে অস্ত্রে পরিণত করতে পারে। তাই আমরা সতর্ক করছি—এ ধরনের সাহস যেন আর কেউ না দেখাতে পারে, তার জন্য আমরা ন্যায়সঙ্গত ও যথাযথ বিচার চাই।”
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, “আপনারা গদিতে বসেছেন শুধু এসির হাওয়া খাওয়ার জন্য নয়। হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আপনারা এ গদিতে বসেছেন। যদি সেই দায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে গদি ছেড়ে দিন। আপনাদের বাইরে বাংলাদেশে অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন, যারা দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারবেন এবং আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন।
রাবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের জিসানের সঞ্চালনায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী