জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) রসায়ন বিভাগে স্নাতকোত্তরে পুনঃভর্তি ও ছাত্রত্ব ফিরিয়ে পেতে আদালতে রিট আবেদন করেছেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর। রিটের শুনানি শেষে আদালত চার সপ্তাহের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।

বুধবার (২৫ জুন) হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি আকরাম এইচ. চৌধুরী ও দেবাশীষ রায় চৌধুরী বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

একইসঙ্গে, কেন আবেদনকারীর পুনঃভর্তির আবেদন যথাযথভাবে নিষ্পন্ন না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবৈধ কাজ করেছেন বলে ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের (২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মণ্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.

মাহফুজুর রহমান মিলন, মো. মোহাম্মদ মেহেদী হাসান, কামরুল ইসলাম, কফিজা আলম লাকি ও মারিয়া তানজিমাথ।

গত ২৭ ও ২৯ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে পুনঃভর্তি ও ছাত্রত্ব পুনরায় ফিরিয়ে পাওয়র জন্য আবেদন করেন জহির উদ্দিন বাবর। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টির নিষ্পত্তি করেননি।

এ বিষয়ে জহির উদ্দিন বাবরের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, “আমার মক্কেল জহির উদ্দিন বাবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে পুনঃভর্তি ও ছাত্রত্ব ফিরে পেতে আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার পক্ষে আবেদনটির নিষ্পত্তি করেনি। ফলে আমার মক্কেল বিষয়টি নিয়ে আদালতের দারস্ত হন।”

তিনি বলেন, “আদালত রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ জহির উদ্দিন বাবরের পূর্বে করা আবেদন আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে, কেন আবেদনকারীর পুনঃভর্তির আবেদন যথাযথভাবে নিষ্পন্ন না করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবৈধ কাজ করেছেন বলে ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী তাঁর ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেওয়া বা বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে যে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”

ছাত্রদল নেতা জহির উদ্দিন বাবর বলেন, “মেধা তালিকায় ভর্তি হয়েও ছাত্রলীগের নির্যাতন নিপিড়ন এবং তৎকালীন বিশ্বিবিদ্যালয় প্রশাসনের অসহযোগিতায় আমি আমার শিক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারিনি। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি, উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে আমার স্নাতকোত্তের নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রমে ভর্তির বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য আদেশ দিয়েছেন। আশা করি, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমার স্নাতকোত্তর ভর্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহযোগিতা করবে।”

এ বিষয়ে জাবির ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) মোহাম্মদ আলী রেজা বলেন, “আমরা এ বিষয়ে একটি আবেদন পেয়েছি। তবে সেটি যথাযথ পদ্ধতিতে, অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট বিভাগের মাধ্যমে আসেনি। আরো একটি বিষয় হলো, আবেদনে আবেদনকারীর স্বাক্ষর ছিল না। ফলে সেটি প্রকৃতপক্ষে তার কি না, তা যাচাই করার চেষ্টা চলছে “

আবেদনপত্র অনুযায়ী, তিনি ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে পরবর্তীতে তিনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি। যেহেতু তিনি নিয়মিতভাবে ভর্তি ছিলেন, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে তার মাস্টার্স সম্পন্ন করার সুযোগ রয়েছে।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ন ভর ত ছ ত রদল কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় জেলায় জেলায় বিক্ষোভ

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের পরদিনই এ ধরনের ঘটনাকে দেশের জন্য অশনিসংকেত হিসেবে দেখছেন।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে তাঁরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় মদদদাতা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের দাবি জানান। তাঁদের ভাষ্য, হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ চলার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে জুলাই হামলায় জড়িত শিক্ষকদের বিচার শেষ করার দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রার ভবনে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে চলে আসেন এবং সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে রেজিস্ট্রার ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।

বিক্ষোভ শেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ঠিক পরের দিন আমরা দেখতে পেয়েছি জুলাই আন্দোলনের অগ্রনায়ক, ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী কণ্ঠস্বরকে আজকে দিনদুপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। এই ইন্টেরিম সরকার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিচার করতে যে ব্যর্থ হয়েছে, সে ব্যর্থতার একটি নমুনা আজকে আমরা দেখতে পেয়েছি। এ ছাড়া গত বছরের ১৫ জুলাই জাবি ক্যাম্পাসে যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী আমাদের নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, রক্তাক্ত করেছিলেন তাঁদের বিচার আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি।’

জাকসুর সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক আহসান লাবিব জানান, ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। জুলাই হামলার সন্ত্রাসীদের বিচার না করা এবং দোষীদের গ্রেপ্তার না করার ফলেই এ ধরনের হামলা হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বিকেল সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল শুরু হয়। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগরের তালাইমারিতে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিক্ষোভকারীরা মিছিলে ‘হাদির ওপর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাঈদের অ্যাকশান, ডাইরেক্ট অ্যাকশান’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় জেলায় জেলায় বিক্ষোভ
  • চাঁদপুর-৫ আসনে এনসিপির মনোনয়ন পেলেন মাহাবুব আলম