প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যে ভ্যাট প্রত্যাহার দাবি
Published: 26th, June 2025 GMT
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার রুটি ও বিস্কুটের ওপর উচ্চ ভ্যাট অব্যাহত রাখায় দরিদ্র মধ্যবিত্ত ও শিক্ষার্থীদের ওপর আর্থিক চাপ সৃষ্টি এবং এই বৈষম্যমূলক করনীতির পুনর্বিবেচনার দাবিতে বৃহস্পতিবার ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে সেমিনার হয়েছে।
ইআরএফ ও ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্ক (ওয়াইপিএন) যৌথভাবে আয়োজিত ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও ভ্যাট’ শীর্ষক এই সেমিনারে বক্তারা সরকারের বর্তমান করনীতি দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলছে বলে উল্লেখ করেছেন বক্তারা।
ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্কের হেড অব রিসার্চ কে এম ইমরুল হাসান। আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক প্রথম আলোর সহকারী বার্তা সম্পাদক পার্থ সংকর সাহা, ওয়াইপিএন-এর ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মো.
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্কের হেড অব রিসার্চ কে এম ইমরুল হাসান বলেন, দেশে ৯ শতাংশেরও বেশি মূল্যস্ফীতি, যুব বেকারত্ব এবং আয় বৈষম্য বিদ্যমান। তিনি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পর্যালোচনার মাধ্যমে দেখান যে, পূর্ববর্তী বাজেট থেকে বিস্কুট ও পাউরুটির ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৫ শতাংশ করা হয়েছে, যা বর্তমান বাজেটেও অব্যাহত আছে।
গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে তিনি বলেন, তাদের জরিপে নিম্ন আয়ের (১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা মাসিক আয়) মানুষের মধ্যে ৬০ শতাংশ সকালের খাবার বাদ দেন এবং ৩.৫ শতাংশ দুপুর বা বিকালের খাবারও বাদ দিতে বাধ্য হন। ৮৮ শতাংশ নিম্ন আয়ের মানুষ প্রতিদিন কোনো না কোনোভাবে রুটি-বিস্কুট গ্রহণ করেন, যা তাদের জন্য ভাতের সস্তা বিকল্প।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ১৫ শতাংশ মনে করেন, এই ভ্যাট হার অনেক অতিরিক্ত। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভ্যাটের কারণে হয় বিস্কুট ও পাউরুটির আকার ছোট হয়ে যাচ্ছে অথবা দাম বেড়ে যাচ্ছে, যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে।
তিনি বলেন, ৭০ শতাংশ মানুষের প্রত্যাশা ছিল আসন্ন বাজেটে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ইতিবাচক কিছু থাকবে, কিন্তু এই ভ্যাট আরোপে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ওয়াইপিএন-এর ফিল্ড কো-অর্ডিনেটর মো. আকবর হোসেন তার ফলোআপ গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রংপুর, খুলনা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শিক্ষার্থী, রিকশাচালক, দিনমজুর, পোশাক শ্রমিক এবং ডেলিভারিম্যানদের ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, বিস্কুট ও ব্রেড এখন আর নাস্তার খাবার নয় বরং দরিদ্র মানুষের একবেলার নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার হয়ে উঠেছে। তার গবেষণা অনুযায়ী, ৬৮ শতাংশ মানুষ প্যাকেটজাত বিস্কুট খায় এবং ৬৫ শতাংশ মানুষ প্যাকেটজাত বিস্কুট ক্রয়ে প্রতিদিন ন্যূনতম ৩০ টাকা খরচ করে। ৭০ শতাংশ খুচরা বিক্রেতা জানিয়েছেন যে, ভ্যাট বৃদ্ধির কারণে তাদের দোকানে প্যাকেটজাত বিস্কুট ও ব্রেডের বিক্রি কমে গেছে।
তিনি বলেন, সরকার রুটি ও বিস্কুট থেকে বছরে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করে, অথচ এই করের কারণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তায় মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
আকবর হোসেন শ্রীলঙ্কা, ভারত ও নেপালের উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেসব দেশে রুটি ও বিস্কুটে কোনো ভ্যাট নেই অথবা থাকলেও তা ২-৩ শতাংশের বেশি নয়। তিনি অবিলম্বে রুটি ও বিস্কুটের ওপর থেকে ভ্যাট কমানোর বা শূন্য করার দাবি জানান এবং এনবিআরকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পুষ্টিকর পণ্যের একটি তালিকা তৈরি করে সেগুলোকে ভ্যাটমুক্ত রাখার পরামর্শ দেন।
দৈনিক প্রথম আলোর সহকারী বার্তা সম্পাদক পার্থ সংকর সাহা ওয়াইপিএন-এর গবেষণার প্রশংসা করে বলেন, সাধারণ মানুষ যদিও অনেক জটিল রিপোর্ট পড়েন না, তবে এই ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভ্যাটের বিষয়টি তাদের কাছে অত্যন্ত আগ্রহের, বিশেষত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের কাছে।
তিনি বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও এই ধরনের করনীতির কারণে দেশে আরো ৩০ লাখ মানুষ নতুন করে অতি দরিদ্র হতে পারে। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, ৭০ শতাংশ মানুষের আশা ছিল যে এই বাজেটে তাদের প্রত্যাশা পূরণ হবে, কিন্তু সম্ভবত তা হয়নি। তিনি সাধারণ মানুষের প্রতি সহনশীল হওয়ার জন্য কর ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী তাপসী রাবেয়া বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে সব ক্ষমতার উৎস জনগণ এবং রাষ্ট্রের অন্যতম লক্ষ্য একটি শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা কায়েম করা। অথচ, এখনো দেশের ২০ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের ওপর ভ্যাট তাদের জন্য অতিরিক্ত বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, রুটি-বিস্কুট দরিদ্র মানুষের জন্য ন্যূনতম খাবার, এর চেয়ে নিচে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
তাপসী রাবেয়া বলেন, এই ভ্যাট শুধু ‘খাদ্য অধিকার' নয়, ‘স্বাস্থ্য অধিকার'ও লঙ্ঘন করছে। তিনি জুলহাস উদ্দিন মামলার উদাহরণ টেনে বলেন, যেখানে চিকিৎসা সেবার ওপর ভ্যাট আরোপকে অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়েছিল, কারণ এটি জীবন ধারণের অধিকার লঙ্ঘন করে। তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদগুলির কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ সেগুলোর পক্ষভুক্ত, যেখানে খাদ্য একটি মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃত। তিনি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দরিদ্রবান্ধব করনীতি প্রণয়নের আহ্বান জানান, যা দরিদ্র মানুষের ওপর করের বোঝা চাপাবে না এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যে নামমাত্র বা শূন্য ভ্যাট রাখবে।
বাংলাদেশ ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া ওয়াইপিএন-এর গবেষণার ফলাফলের সাথে সম্পূর্ণ একমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, পূর্বে যখন রুটি-বিস্কুটে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছিল, তখন অ্যাসোসিয়েশন আন্দোলন করেছিল এবং এনবিআর চেয়ারম্যানের সাথে দুবার বৈঠক করে ভ্যাট ৭.৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল।
তিনি বলেন, তারা সরকারের কাছে সবসময় রুটি-বিস্কুটকে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য হিসেবে গণ্য করে শূন্য ভ্যাট রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন। শফিকুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, যদি শূন্য ভ্যাট সম্ভব না হয়, তবে সর্বোচ্চ ৩ শতাংশ ভ্যাট রাখা উচিত, যা এফবিসিসিআইও সুপারিশ করেছিল। তিনি এনবিআর চেয়ারম্যানের প্রতি এই দাবিগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথি আবদুর রহমান খান বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর ভ্যাট আরোপ করা উচিত কিনা, তা নিয়ে একটি মৌলিক বিতর্ক সবসময়ই থাকবে। করনীতি প্রণয়নে বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করতে হয় জানিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পাশাপাশি সরকারের ঋণ নির্ভরতা কমানো, বিশেষ করে ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হয়।
তিনি বলেন, সহজে রাজস্ব আদায়ের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর কর আরোপ একটি ‘বদভ্যাস' হতে পারে। তবে দেশের জন্য রাজস্ব সংগ্রহের গুরুত্ব এবং ঋণনির্ভরতা কমানোর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি।
চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের সর্বনিম্নগুলোর মধ্যে একটি। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে, সরকার বুঝতে পেরেছে যে, ভ্যাট দরিদ্র মানুষের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, তখন রুটি-বিস্কুটের ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে ৭.৫ শতাংশে কমিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আদর্শ ভ্যাট ব্যবস্থায় (যেখানে ইনপুট ক্রেডিট সুবিধা থাকে) ৭.৫ শতাংশ ভ্যাটও অযৌক্তিক, এবং সিস্টেমের প্রক্রিয়াগত ও ডিজিটাইজেশনের ত্রুটির কারণে এমনটা হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ওপর আরোপিত ভ্যাট পুনর্বিবেচনা করতে সেমিনারে বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নতি এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় একটি জনবান্ধব ও ন্যায়ভিত্তিক করনীতি অপরিহার্য বলে মত দেন তারা।
ঢাকা/হাসনাত/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দর দ র ম ন ষ র আহ ব ন জ ন ন র ওপর ভ য ট ভ য ট আর প জনগ ষ ঠ র ট র ওপর সরক র র র রহম ন র জন য ৭ ৫ শত করন ত
এছাড়াও পড়ুন:
৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বসুন্ধরার চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল ব্যাংকের ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে সংস্থার সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১–এ মামলাটি করেন। মামলায় আহমেদ আকবর সোবহান ছাড়াও তাঁর দুই ছেলেসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আহমেদ আকবর সোবহানের দুই ছেলে হলেন বসুন্ধরা ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদাত সোবহান এবং একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক সাফিয়াত সোবহান।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আখতার হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
মামলার অপর আসামিরা হলেন ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক মনোয়ারা সিকদার, পারভীন হক সিকদার, মোয়াজ্জেম হোসেন, রিক হক সিকদার, রন হক সিকদার, মো. আনোয়ার হোসেন ও এ কে এম এনামুল হক শামীম, ব্যাংকটির ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হাসিনা সুলতানা, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার আরিফ মো. শহিদুল হক, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ক্রেডিট ইন চার্জ আনিসুল হক, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সুলতানা পারভিন ও সুবল চন্দ্র রায় এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ কামরুল হাসান মিঠু। তাঁদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪২০/৪০৯/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলটি করা হয়েছে।
মামলায় বলা হয়েছে, আসামিরা ব্যাংকের প্রচলিত বিধিবিধান লঙ্ঘন করে এবং ঋণের শর্ত পূরণ না করেই বসুন্ধরা ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ৬০০ কোটি টাকা ‘ফান্ডেড’ ও ৭৫০ কোটি টাকা নন-ফান্ডেড—মোট ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ করেন। পরবর্তী সময়ে বিতরণ করা ফান্ডেড ঋণের ৬০০ কোটি টাকা পরিশোধ না করে পরস্পর যোগসাজশে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। আত্মসাৎ করা টাকার অবৈধ উৎস, অবস্থান এবং মালিকানা গোপন করার জন্য বসুন্ধরা গ্রুপের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা শাখা থেকে ইস্ট ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়।
এ ছাড়া এই অর্থের আরেকটি অংশ রংধনু বিল্ডার্স নামের প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের হিসাবে স্থানান্তর করে ঋণ সমন্বয় ও নগদ উত্তোলন করে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তর করেন।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বড় বড় ব্যবসায়ীদের দুর্নীতি-অনিয়মের বিষয়েও অনুসন্ধানে নামে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থা। তার ধারাবাহিকতায় বসুন্ধরার চেয়ারম্যান এবং তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে ‘সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, ভূমি জবরদখল, ঋণের অর্থ আত্মসাৎ, অর্থ স্থানান্তর ও হস্তান্তর, অর্থ পাচারের’ অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
এর অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের দুদকে তলবও করা হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) বসুন্ধরাসহ পাঁচ বড় কোম্পানির মালিকদের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। তাঁদের ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠায়।
এরপর গত বছর ২১ অক্টোবর ঢাকার আদালত বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানসহ তাঁর পরিবারের আট সদস্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। তার আগে ৬ অক্টোবর তাঁদের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।