প্রতি ডিমে লস দুই থেকে আড়াই টাকা, দিশেহারা খামারিরা
Published: 27th, June 2025 GMT
টাঙ্গাইলের কালিহাতীর দেউপুর গ্রামের পোল্ট্রি খামির মো. জিন্নাহ। পৈত্রিক সম্পতি দেখিয়ে লোন করে ও নিজের জমানো টাকা থেকে এ বছর প্রায় ৩০ লাখ টাকা খরচ করে তিন হাজার লেয়ার মুরগি লালন পালন করছেন। প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার ডিম উৎপাদন হলেও ক্ষতি হচ্ছে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা।
মো. জিন্নাহ বলেন, “জানুয়ারি মাস থেকে প্রতি ডিমে দুই থেকে আড়াই টাকা পর্যন্ত ক্ষতি হচ্ছে। প্রতি ডিমের উৎপাদন খরচ ১০ টাকা ২০ পয়সা। সেখানে সাত টাকা ৫০ পয়সা ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে। ক্ষতি যাওয়ায় আমাদের গ্রামের অনেক খামারি নিঃস্ব হয়েছে। আবার অনেকেই দেউলিয়া হয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছে।”
শুধু জিন্নাহ নয়, তার মতো ভূঞাপুর, ঘাটাইল, সখীপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার প্রান্তিক খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
খামারিদের দাবি, ডিমের দাম কমলেও খাদ্য, মেডিসিনসহ উৎপাদন খরচ কমছে না। এতে ঋণ, সুদ ও জমি বিক্রি করে যারা খামার পরিচালনা করছিলেন। তারাই অনেকেই দেউলিয়া হয়েছেন। বর্তমান বেশিভাগ খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে নিঃস্ব হচ্ছেন।
এদিকে ডিমের দাম কমলেও তেমন বিক্রি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের দাবি, ডিমের চাহিদা কমায় আগের চেয়ে ডিম বিক্রি নেমেছে অর্ধেকে।
জেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয় ও ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, এক যুগ আগে টাঙ্গাইলে প্রতিদিন তিন কোটি পিস ডিম উৎপাদন হলেও বর্তমানে প্রতি দিন প্রায় ৩২ লাখ পিস ডিম উৎপাদন হচ্ছে। আগে টাঙ্গাইলে ২০ হাজারের অধিক খামারি থাকলেও বর্তমানে খামারি আছে প্রায় আড়াই হাজার।
দেউপুর গ্রামের খামারি সুজন মিয়া বলেন, “ডিমের দাম কমায় প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এভাবে চলমান থাকলে আমাকেও দেউলিয়া হতে হবে।”
অপর খামারি হাসমত আলী বলেন, “ডিমের দাম একটু বাড়লে প্রশাসনসহ ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তারা জরিমানা করেন। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে ডিম আমদানি করেন। এখন তো ডিমের দাম কমছে, তাহলে যদি পার্শ্ববর্তী দেশগুলো ডিম রপ্তানি করে তাহলে লাভ না হলেও ডিমের উৎপাদন খরচটা উঠতো। প্রান্তিক খামারিদের টিকিয়ে রাখতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এছাড়াও প্রান্তিক খামারিরা না থাকলে বহুজাতিক কোম্পানি থেকে প্রতিটি ডিম আগামীতে ২০ থেকে ২৫ টাকায় কিনতে হবে।”
টাঙ্গাইল পার্ক বাজারের ব্যবসায়ী আমজাদ মিয়া বলেন, “ডিমের দাম কমায় একদিকে যেমন খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অপর দিকে আমরা তেমন ডিম বিক্রি করতে পারছি না। শুক্রবার (২৭ জুন) ৩৩ থেকে ৩৫ টাকা হালি ডিম বিক্রি করছি। তাও স্বাভাবিক সময়ের মতো বিক্রি হচ্ছে না। আগে এক দিনে ১২/১৩ হাজার ডিম বিক্রি করলেও এখন সাত হাজার ডিম বিক্রি করতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে। অনেকের ডিম আড়তে থেকে ভেঙে ও পঁচে নষ্ট হচ্ছে।”
অপর ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া বলেন, ‘গত ঈদে ১০ দিনের ছুটি ছিলো। সেই ছুটিতে যে ডিমের চাহিদা কমেছে, তা আর বাড়েনি। সেই ১০ দিনে ডিম জমে যাওয়ায় ডিমের সরবরাহ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। তবে তেমন চাহিদা না থাকায় ডিমের দাম কমেছে। খামারিদের পাশাপাশি আমরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।”
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো.
ঢাকা/কাওছার/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড ম র দ ম কম ব যবস য়
এছাড়াও পড়ুন:
মনোস্পুলের প্রথম প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে ৪.৩৮ শতাংশ
পুঁজিবাজারে পেপার ও প্রিন্টিং খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মনোস্পুল বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২৫) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, আলোচ্য প্রান্তিকে আগের হিসাব বছরের তুলনায় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) বেড়েছে ৪.৩৮ শতাংশ।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
এনার্জিপ্যাকের লভ্যাংশ ঘোষণা
২৮ প্রতিষ্ঠানের নেগেটিভ ইক্যুইটি ও লস প্রভিশনিংয়ের সময় বৃদ্ধি
এর আগে রবিবার (১৬ নভেম্বর) কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ বছরের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।
২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয়েছে ১.১৯ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি মুনাফা ছিল ১.১৪ টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটি আলোচ্য প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ০.০৫ টাকা বা ৪.৩৮ শতাংশ।
আলোচ্য সময়ে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে ০.২৮ টাকা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো ছিল ০.০৭ টাকা।
২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৬.২৫ টাকা।
ঢাকা/এনটি/ফিরোজ