বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ঢাকার খিলক্ষেতে একটি অস্থায়ী দুর্গা মন্দির ভাঙার অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্তে ভারত হতাশা প্রকাশ করেছে। ভারতের দাবি, বাংলাদেশ সরকার মন্দিরের নিরাপত্তা প্রদানের পরিবর্তে ঘটনাটিকে অবৈধ ভূমি ব্যবহার হিসেবে তুলে ধরেছে এবং মন্দির ধ্বংসের অনুমতি দিয়েছে।

নয়াদিল্লিতে বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, স্থানান্তরের আগে এই পদক্ষেপের ফলে মূর্তির ক্ষতি হয়েছে।

বাংলাদেশে মন্দির ভাঙার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “আমরা বুঝতে পারছি যে উগ্রপন্থীরা ঢাকার খিলক্ষেতে দুর্গা মন্দির ভাঙার জন্য চিৎকার করছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মন্দিরের নিরাপত্তা প্রদানের পরিবর্তে এই ঘটনাটিকে অবৈধ ভূমি ব্যবহার হিসেবে তুলে ধরে এবং আজ তারা মন্দির ধ্বংসের অনুমতি দেয়। এর ফলে মূর্তি স্থানান্তরের আগে ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে বলে আমরা হতাশ। আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে হিন্দু, তাদের সম্পত্তি এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে রক্ষা করা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব।”

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঢাকার খিলক্ষেতে তাদের জমিতে নির্মিত একটি অস্থায়ী দুর্গা মন্দির ভেঙে দিয়েছে। জনতা মন্দিরটি অপসারণের দাবি করার তিন দিন পর মন্দিরটি ভেঙে ফেলা হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে তারা খিলক্ষেত সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরটি রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে নির্মিত হওয়ায় ভেঙে ফেলেছে।

কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু সংগঠন। তাদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ সম্প্রদায়ের লোকদের পূর্ব নোটিশ না দিয়েই মন্দিরটি ভেঙে দিয়েছে।
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মন দ র ভ ঙ খ লক ষ ত র বর ত সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অভ্যুত্থানের বছরে জামায়াতের আয়-ব্যয় বিএনপির চেয়ে অনেক বেশি

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২০২৪ সালে আয় হয়েছে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা। আর দলটি এ বছর ব্যয় দেখিয়েছে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা।

নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে ২০১৩ সালে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। এরপর চলতি বছর নিবন্ধন ফিরে পাওয়ায় এক যুগ পর আবার হিসাব দিল দলটি। গত ২৯ জুলাই জামায়াত এ হিসাব দেয়।

এর আগে ২৭ জুলাই আয়ে–ব্যয়ের হিসাব দেয় বিএনপি। সেই হিসাব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিএনপির মোট আয় ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। একই সময়ে দলটির ব্যয় ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২৩ টাকা। উদ্বৃত্ত অর্থের পরিমাণ ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা। এই অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা আছে।

ইসির সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তা জানান, ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২৮টি দল আয়–ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে। এর মধ্যে জামায়াতের আয় ও ব্যয় অন্য সব দলের চেয়ে বেশি।

২০২৪ সালে জাতীয় পার্টির আয় হয়েছে ২ কেটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা; দলটি ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। দলের হিসাবে জমা আছে ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।

এ বছর আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয় করেছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪৪ টাকা। গণ অধিকার পরিষদের আয় হয়েছে ৪৬ লাখ ৪ হাজার ৩০০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮ টাকা।

ইসি সূত্র জানায়, বাকি দলগুলোর আয়-ব্যয় জামায়াতের চেয়ে অনেক কম।

দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামী ভোটে না থাকলেও ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীও ঘোষণা করে দিয়েছে দলটি। গত বছরের ৫ আগস্ট–পরবর্তী সময়ের নির্বাচনী তৎপরতায় ব্যয়ের প্রতিফলনও রয়েছে অডিট রিপোর্টে।

কোন খাতে কত আয় জামায়াতের

জামায়াতের জমা দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, দলের কর্মী ও সদস্যদের দেওয়া চাঁদা থেকে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা। কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা থেকে এসেছে ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান পেয়েছে ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে দলটি আয় করেছে ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।

কোন খাতে কত ব্যয়

জামায়াতে ইসলামী বলেছে, বিগত বছরে তাদের সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে কর্মীদের বেতন–ভাতা ও বোনাসে, ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ হয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা।

বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করা হয়েছে ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় হয়েছে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা।

প্রচারণা ও পরিবহনে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় হয়েছে ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা।

ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ