ভারতীয় বাংলা সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা চিরঞ্জিতের ছোট ভাই মারা গেছেন। ২৫ জুন মারা যান অমিতাভ চক্রবর্তী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। ভাইকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন চিরঞ্জিৎ।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী বলেন, “ঘটনাটি ঘটেছে ২৫ জুন। সকাল ৮টায় ঘুম থেকে উঠল। ওর স্ত্রী মজা করে বলল, ‘আজ তুমি অনেকক্ষণ ঘুমালে।’ তখন অমিতাভ বলে, ‘হ্যাঁ আজ ভালো ঘুম হয়েছে।’ এরপরই কলিং বেল বেজে ওঠে। কে এসেছে তা দেখতে ওর স্ত্রী বারান্দায় যায়। ফিরে এসে দেখে অমিতাভের কোনো সাড়াশব্দ নেই, চুপচাপ শুয়ে আছে। ঘুম থেকে ওঠার কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যেই ঘটনাটা ঘটে যায়।”

স্মৃতিকাতর হয়ে চিরঞ্জিৎ বলেন, “ও আমার চেয়ে ৬ বছরের ছোট ছিল। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় হলো চলে যাওয়ার মতো তো ওর কিছুই হয়নি। খালি মনে হচ্ছে, মাকে দেখেছি ওকে কোলে করে বাড়ি নিয়ে আসতে। একসঙ্গে খেলা, খাওয়া, ঘুম। এত সুন্দর সময় কাটানোর পর ওকে শ্মশানেও পাঠাতে হলো আমায়। এটা তো দাদা হিসেবে আমার দুর্ভাগ্য।”

আরো পড়ুন:

আমি আফরান নিশোর ফ্যান: স্বস্তিকা

দেবের নায়িকা হওয়া হলো না ফারিণের!

কয়েক দিন আগে বুকে ব্যথা অনুভব করেছিলেন অমিতাভ। চিকিৎসক ইসিজি করতে বলেছিলেন। রিপোর্টে সমস্যা না পাওয়ায় ইকো কার্ডিওগ্রাম করার পরামর্শ দেন ডাক্তার। কিন্তু গুরুত্ব দেননি অমিতাভ। এ বিষয়ে চিরঞ্জিৎ বলেন, “ও বলেছিল আমি তো ঠিক আছি, কেন টেস্ট করাব। আর সেটাই সর্বনাশ ডেকে আনল।

মারা যাওয়ার দিন সকালে ঘুম থেকে অমিতাভ তার স্ত্রীকে বলেছিলেন—“অনেক দিন পর রাতে ভালো ঘুম হয়েছে।” এ কথা স্মরণ করে চিরঞ্জিৎ বলেন, “এটাই ওর বলা শেষ কথা। মুহূর্তের মধ্যেই সব শেষ। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও কোনো লাভ হয়নি। সত্যি বলতে, এভাবে চলে যাওয়াটা ওর জন্য হয়তো খুব সুন্দর। কিন্তু আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর।”

চিরঞ্জিৎ অভিনয়ের মানুষ হলেও অমিতাভ এই অঙ্গনের কেউ ছিলেন না। আর্ট কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। খুব ভালো ছবি আঁকতেন বলেও জানান চিরঞ্জিৎ।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ইমিউনিটি বাড়াবেন যেভাবে

মৌসুম সামান্য রদবদলেই হাঁচি-কাশি শুরু হয়ে যায়? সম্ভবত দুর্বল ইমিউনিটিই এর কারণ। অনেকেই ভাবেন, ভালো ইমিউনিটি জিনগত ব্যাপার। জিন ছাড়াও এমন অনেক ফ্যাক্টর রয়েছে, যেগুলো ইমিউনিটির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। স্ট্রেস, পুষ্টি, এক্সারসাইজ় এবং মেডিটেশন তার মধ্যে অন্যতম। ইমিউনিটি আসলে শরীরের ডিফেন্স সিস্টেম; যা বিভিন্ন ধরনের বাহ্যিক টক্সিন, কেমিক্যালস, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস থেকে শরীরকে সুরক্ষা দেয়। তবে অসুস্থ হওয়া মানে এই নয় যে, আপনার লাইফস্টাইলে কোনো ত্রুটি রয়ে গেছে। চূড়ান্ত স্বাস্থ্যসচেতন মানুষও অসুস্থ হতে পারেন। তবে ঘন ঘন অসুস্থ হওয়া অপুষ্টি এবং দুর্বল ইমিউনিটির পরিচায়ক। ইমিউনিটি বাড়াতে তাই নজর দিন বিশেষ কিছু দিকে।
পুষ্টি হোক শরীরের অস্ত্র
আমাদের শরীরে যে ইমিউন বডিস রয়েছে, তারা মূলত প্রোটিন দিয়ে তৈরি। সুতরাং, ভালো ইমিউনিটির জন্য শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকা জরুরি। ডেয়ারি প্রডাক্ট, লিন মিট, মাছ এবং ডাল প্রোটিনের অন্যতম উৎস। ডেয়ারি প্রডাক্টের মধ্যেও টকদই এবং ইয়োগার্ট ইমিউনিটি বুস্টার হিসেবে ভালো। এছাড়া প্লান্ট ফুডসও ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, ক্যান্সার প্রতিরোধে নিরামিষাশীদের শরীরের শ্বেতরক্তকণিকা আমিষাশীদের চেয়ে বেশি কার্যকরী। নানা ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসও এক্ষেত্রে জরুরি ভূমিকা পালন করে। ভিটামিন সি, ই, ক্যারোটিনয়েডস, জিঙ্ক, আয়রন, কপার এবং সেলেনিয়াম তার মধ্যে অন্যতম। ভিটামিন সি-এর জন্য কাঁচালঙ্কা, পেয়ারা, টোম্যাটো, খরমুজ; ভিটামিন ই-এর জন্য চিনাবাদাম, ভেজিটেবল অয়েল, কাজু ইত্যাদি খেতে পারেন। এই দুই প্রকার ভিটামিনের সঙ্গে ক্যারোটিনয়েডস খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো। তরমুজ, সবুজ শাকসবজি, টোম্যাটো, আম ইত্যাদি শরীরে ন্যাচারাল কিলার সেল এবং টি-লিম্ফোসাইটের পরিমাণ বাড়িয়ে ইমিউনিটি আরও শক্তিশালী করে তোলে। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে হুইট ব্র্যান, জোয়ার, বাজরা, শেলফিশ, বাদাম, বাদামের তেল খেলে সর্দি-কাশি থেকেও সুরক্ষা পাবেন। তবে অনেক সময়ই খাবারের গুণগত মানের জন্য শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পায় না। এর সঙ্গে কোনো মাল্টিভিটামিন সাপ্লিমেন্ট নিতে পারলে ভালো।
ন্যাচারাল ইমিউন বুস্টার
‘সুপারফুডস’ প্রতিদিন ডায়েটে রাখলে সুস্থ থাকাও সহজ হবে। আমাদের চারপাশে যে সমস্ত সুপারফুডস রয়েছে, রসুন তার মধ্যে অন্যতম। এছাড়া মৌরি, হলুদ, আদা, লবঙ্গ এবং দারচিনিও ইনফেকশনের বিরুদ্ধে ম্যাজিকের মতো কাজ করে। ঘন ঘন চা-কফির অভ্যাস কমিয়ে গ্রিন-টি বেছে নিতে পারেন। এতে থাকা ক্যাটেকিনসের অ্যান্টি-কারসিনোজেন হিসেবে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। মনে রাখবেন, মজবুত ইমিউনিটি গড়ে তুলতে অনবরত শরীরের খেয়াল রাখা প্রয়োজন। 
জীবনযাপনের রদবদল
শরীরকে আপনি যেভাবে ট্রিট করবেন, তার ওপর নির্ভর করবে আপনার সুস্থতা। বিশ্রামের অভাব, অনিয়মিত বা অপর্যাপ্ত শরীরচর্চা, ঘুমের সঙ্গে কম্প্রোমাইজ করলে তার সরাসরি প্রভাব পড়বে ইমিউনিটিতেও। জীবনধারার এই দিকগুলোয় তাই একটু নজর দিন। পরিমিত ঘুম এবং বিশ্রাম শরীরের একান্ত প্রয়োজন। দিনে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। স্ট্রেস কমাতে মেডিটেশন ট্রাই করতে পারেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ