চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় গত ১০ মাসে অন্তত আটটি হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড যেমন আছে, তেমনি আছে চোর সন্দেহে, পূর্বশত্রুতার জেরে মব তৈরি করে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা। কিন্তু একটি ছাড়া বাকি হত্যাকাণ্ডগুলোর কোনো আসামিকে পুলিশ এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। খুনের আসামিরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনাগুলোর তদন্ত চলছে এবং দোষীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলায় সবচেয়ে সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে ১০ জুলাই পদুয়া ইউনিয়নের মোবারক আলী টিলা এলাকায়। মোহাম্মদ রাসেল (৩৫) নামে এক যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ধানক্ষেত থেকে রাসেলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত রাসেল মোবারক আলী টিলা এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন এবং এক বছর আগে দেশে ফেরেন। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। 

এর আগে ২০ জুন উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের কাইন্দারকুল এলাকায় গুলিতে নিহত হন শিবু মারমা (৩০)। পাহাড় থেকে লেবু এনে বিক্রি করতেন শিবু। বাড়ি ফেরার পথে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনাতেও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। গত ৬ জুন গোডাউন বাজারে শ্বশুর ওসমান গনিকে (৫০) কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় কেবল তার জামাতা মোহাম্মদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

এ ছাড়া ২৬ মার্চ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল ইসলাম তালুকদার (৭০)। এর আগের দিন ২৫ মার্চ সরফভাটার মীরের খীল বাজারে নিজের দোকানে কুপিয়ে আহত করা হয়েছিল তাঁকে। নিহত নুরুল ইসলাম সরফভাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড সভাপতি ছিলেন। তবে এ ঘটনায় এখনও কেউ মামলা করেনি এবং ময়নাতদন্ত রিপোর্টও পাওয়া যায়নি বলে জানায় পুলিশ।

গত বছরের ১৯ আগস্ট রাঙ্গুনিয়ায় ইমরান নবী ওরফে জুয়েল (১৬) নামে এক নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্রের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই মামলার একমাত্র আসামি মো.

মারুফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা  হয়েছে। এ ছাড়া ওই বছরের ৭ আগস্ট পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রামে জমি নিয়ে বিবাদে আবদুল মজিদ নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষ। গত ১০ এপ্রিল ভোররাতে উপজেলার সরফভাটার সীমান্তবর্তী বোয়ালখালীর দুইজ্জাখালের লেমু এলাকায় লেবু বাগান পাহারা দেওয়ার সময় আওয়াইমং মারমা (৩৩) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। গুলিতে আহত হন আরও তিনজন। এ ঘটনায়ও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। 

গত ২৬ ডিসেম্বর উপজেলার লালানগর ইউনিয়নের ইসলামিয়াপাড়া এলাকায় চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয় রবিউল হোসেন রুবেল (৩০) নামে এক যুবককে। বাড়ি চন্দ্রঘোনা বনগ্রাম হলেও দীর্ঘদিন ধরে রুবেল লালানগর ৫ নম্বর ওয়ার্ডে শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। পেশায় তিনি ছিলেন দিনমজুর। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী অজ্ঞতা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। 

রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ওসি এটিএম শিফাতুল মাজদার ও দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম বলেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলছে। খুব শিগগিরই দায়ীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর হত য ক ণ ড এক য বকক ম হ ম মদ এ ঘটন য় এল ক য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মেক্সিকোতে প্রবল বৃষ্টি-বন্যায় নিহত ৬৬, নিখোঁজ ৭৫

উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর মধ্য ও পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ মৌসুমি ঝড়ে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে এখনও জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মধ্য মেক্সিকো ও পূর্ব উপকূলরেখা জুড়ে পাঁচটি রাজ্য সপ্তাহান্তের তীব্র বৃষ্টিপাত ও বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় ৭৫ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

উপসাগরীয় উপকূলীয় রাজ্য ভেরাক্রুজ ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্য কর্তৃপক্ষ ৩০ জনের মৃত্যু এবং ১৮ জনের নিখোঁজ থাকার খবর জানিয়েছে।

মধ্য মেক্সিকোর হিডালগো রাজ্যে ২১ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি ৫০ জন নিখোঁজ রয়েছে। এ রাজ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। 

পুয়েবলা রাজ্য কর্তৃপক্ষ ১৪ জনের মৃত্যু ও সাতজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে। অন্যদিকে, কুয়েরেতারো কর্তৃপক্ষ একজনের হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

সান লুইস পোটোসি রাজ্যে কোনো মৃত্যু বা নিখোঁজ ব্যক্তির খবর পাওয়া যায়নি, তবে অবকাঠামো ও ঘরবাড়ির উল্লেখযোগ্য ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।

ফেডারেল সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করার জন্য সামরিক কর্মী মোতায়েন করেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জরুরি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা করা হয়েছে।

সরকারি ও বেসামরিক সংস্থাগুলো ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সহায়তা পৌছেঁ দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, যার মধ্যে ১৯টি বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায়ও রয়েছে যারা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে।

মানবিক সংকটের মধ্যে, অপ্রত্যাশিত মহল থেকে সহায়তা এসেছে। মেক্সিকোর সবচেয়ে সহিংস ও কুখ্যাত মাদক পাচারকারী সংগঠনগুলোর মধ্যে একটি- জালিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেল (সিজেএনজি)-কে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওগুলোতে গ্যাং সদস্যদেরকে কৌশলগত পোশাক ও অস্ত্র হাতে ত্রাণ বিতরণ করতে দেখা গেছে। 

তবে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম বুধবার (১৫ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে ভিডিওগুলোর সত্যতা অস্বীকার করেছেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সামরিক বাহিনীর ত্রাণ বিতরণের ছবি শেয়ার করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেক্সিকোতে প্রবল বৃষ্টি-বন্যায় নিহত ৬৬, নিখোঁজ ৭৫