বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন–নির্বাচনে যাদের ভয়, তারাই নানা অজুহাতে পিছিয়ে দিতে চায়। তারা মনে করে, পিছিয়ে দিয়ে কিছু শক্তি সঞ্চয় করে নির্বাচন করবে। নির্বাচন প্রক্রিয়া ধ্বংস করতে তারা প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করছে। 

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘অপূর্ণ জাতীয় আকাঙ্ক্ষা ও জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাসদ। 

আমীর খসরু বলেন, ‘দেশের মানুষের মালিকানা, তাকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিতে হবে। কোনো কমিশন এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না। দেশের মানুষকে তার সমস্যা সমাধান করতে হবে একমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে। যতটুকু ঐকমত্যে আমরা পৌঁছেছি, এর বাইরে আর কিছু না করে নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।’ 

সভায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিলে আগামী ৩-৪ মাসে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ঠিক করে নির্বাচন করা সম্ভব। নির্বাচন অনিশ্চিত ও দোলাচলে থাকলে নৈরাজ্য সৃষ্টি হতে পারে। 

গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জাতি জানতে চাচ্ছে, কবে আর কখন নির্বাচন হবে। কিন্তু সরকার কানামাছি খেলছে। তারা এর মধ্যে একটি কিংস পার্টিও করে দিয়েছে। জাতির সঙ্গে এই তামাশা বন্ধ করুন। 

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, সরকার আসলে যেভাবে বলছে, সেভাবে নির্বাচন দেবে কি না– সেটি নিয়ে গভীর একটা সন্দেহ এখনও আছে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে– মানুষ এটিতে এখনও সন্দেহ করে। 

বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধানের সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা.

মুশতাক হোসেন। আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুদ্দিন স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইউম, বাসদের সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক আবু সাঈদ খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. সোহেল আহমেদ, দৈনিক ইত্তেফাকের নির্বাহী সম্পাদক সালেহউদ্দিন, বিলস্-এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত