রাওয়ালপিন্ডিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে বড় চমক উপহার দিল জিম্বাবুয়ে। কাল ১৬২ রানের লক্ষ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কাকে ৬৭ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে, যা টি-টোয়েন্টিতে পূর্ণ সদস্য দলের বিপক্ষে রানের হিসাবে জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বড় জয়।

ভাবতে পারেন, টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন হতেই পারে। তবে শ্রীলঙ্কাকে মাত্র ৯৫ রানে গুটিয়ে দেওয়াটা অবশ্যই জিম্বাবুয়ের বড় সাফল্য।

এই জয়ে বড় অবদান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক সিকান্দার রাজার। ব্যাটিংয়ে ৪৭ রান করার পাশাপাশি বোলিংয়ে নেন ১ উইকেট। হয়েছেন ম্যাচসেরাও। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে রাজা কাল ছুঁয়েছেন ১০০ উইকেটের মাইলফলক।

জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেট নিয়েছেন রাজা। ব্যাট হাতে রাজার এক হাজারের বেশি রানও আছে। তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে ১০০০ রান ও ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন রাজা। এর আগে এই কীর্তি ছিল সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ নবীর।  

কাল টস জিতে শ্রীলঙ্কা জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়লেও ব্রায়ান বেনেট ও সিকান্দার রাজা তৃতীয় উইকেটে ৬১ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েন। বেনেট ৪৯ রান করে আউট হন, রাজা খেলেন ৪৭ রানের ইনিংস। বেনেট সর্বশেষ তিনটি টি-টোয়েন্টিতেই ফিফটির কাছে গিয়ে ফিফটি পাননি—৪৭,৪৯, ৪৯।

১৮তম ওভারের প্রথম বলে রাজা আউট হওয়ার পর জিম্বাবুয়ের কেউ ঝোড়ো ইনিংস খেলতে পারেননি। দলটি শেষ তিন ওভারে তুলতে পারে ২২ রান। তাতে শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে ৮ উইকেটে ১৬২ রান করে। তখন এই রানটাকে খুব একটা নিরাপদ মনে হয়নি।

কিন্তু বল হাতে জিম্বাবুয়ে মাঠে নামতেই বদলে যায় দৃশ্যপট। বল হাতে ভয়ংকর হয়ে ওঠেন জিম্বাবুয়ের বোলাররা। প্রথম ওভারেই রিচার্ড এনগারাভা তুলে নেন পাতুম নিশাঙ্কার গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারে টিনোটেন্ডা মাপোসা ফেরান কুশাল পেরেরাকে। এরপর রানআউটে বিদায় নেন কুশাল মেন্ডিস। এতে মাত্র ২৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা।

সেখান থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেন ব্র্যাড ইভান্স। অসাধারণ লাইন-লেংথে বল করে ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। আউট করেন ভানুকা রাজাপক্ষে ঈশান মালিঙ্গা ও মহেশ তিকশানাকে। এনগারাভাও নেন ২ উইকেট। শ্রীলঙ্কার হয়ে শুধু দাসুন শানাকা (৩৪) কিছুটা লড়াই করলেও সেটি দলের হার ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে ১৬২/৮ (বেনেট ৪৯, রাজা ৪৭; হাসারাঙ্গা ৩/৩২, মালিঙ্গা ২/২৭)
শ্রীলঙ্কা ৯৫ (শানাকা ৩৪; ইভান্স ৩/৯, এনগারাভা ২/১৫)
ফল: জিম্বাবুয়ে ৬৭ রানে জয়
ম্যাচসেরা: সিকান্দার রাজা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

তামিম বললেন, বাংলাদেশের প্রথম হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলা মুশফিকেরই প্রাপ্য

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগামীকাল টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহমানের টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি হবে শততম ম্যাচ। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তি গড়বেন মুশফিক।

মুশফিকের সাবেক সতীর্থ তামিম ইকবাল মনে করেন, বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলকে পৌঁছানোর কৃতিত্ব সবার আগে মুশফিকেরই প্রাপ্য। এই কীর্তি তাঁর চেয়ে আর কেউ বেশি ‘ডিজার্ভ’ করেন না বলেও মন্তব্য করেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।

তামিমের ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে আজ করা পোস্টে লেখা হয়, ‘তোকে নিয়ে বলার আছে অনেক কিছু্ই। সেই ছেলেবেলা থেকে একসঙ্গে খেলছি, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে, বিভিন্ন পর্যায়ে, রুমমেট ছিলাম অনেকবার। কাছ থেকে দেখেছি তোকে। কোনো একসময় কোনো এক উপলক্ষে কোনো প্ল্যাটফর্মে নিশ্চয়ই বলব সবকিছু। তবে আজকের দিনের জন্য শুধু একটিই কথা, বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলক তোর চেয়ে বেশি আর কেউ ডিজার্ভ করে না। আশা করি, ভবিষ্যতে এই অর্জনে তোর পাশে নাম লেখাবে আরও অনেকেই। কিন্তু তুই প্রথম, এটা তোরই প্রাপ্য।’

মুশফিকের সঙ্গে তামিমের খেলার শুরু অনূর্ধ্ব-১৫ বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে। তারপর ধাপে ধাপে বেড়ে উঠেছেন দুজন। তিন সংস্করণ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানে সবার ওপরে তাঁরা দুজন। ৫৩১ ইনিংসে ১৫৬৪৬ রান নিয়ে শীর্ষে মুশফিক। ৪৪৮ ইনিংসে ১৫১৯২ রান নিয়ে দুইয়ে তামিম। টেস্ট ক্রিকেটেও তাই—মুশফিক রানে শীর্ষে, তামিম দুইয়ে। ওয়ানডেতে অবশ্য তামিম শীর্ষে, মুশফিক দুইয়ে।

চলতি বছরের মার্চে মুশফিক ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়ার পর ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় মুশফিককে ১০০ টেস্ট খেলতে দেখার প্রত্যাশা জানিয়েছিলেন তামিম, ‘এখনো তুই একটি সংস্করণে খেলবি—টেস্ট সংস্করণ। আমি সত্যিই আশা করি ও প্রার্থনা করি, তুই ভালো কর। অন্তত ১০০টি টেস্ট খেল, যেটা বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত কোনো ক্রিকেটার খেলে নাই। আমি এটা আশা করব, ১০০তম টেস্ট অবশ্যই খেলবি।’

মুশফিক আজ যখন সেই মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে তখন শুধু তামিম নয়, আরও অনেকের শুভেচ্ছা বার্তাই পাচ্ছেন। যেমন বাংলাদেশ দলের সাবেক অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন। ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলে কাজ করা এই ভারতীয় অ্যানালিস্ট এখন আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের সঙ্গে আছেন।

মুশফিককে শুভেচ্ছা জানিয়ে শ্রীনিবাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে করা পোস্টে লেখা হয়, ‘মুশি ভাই! ১০০ টেস্ট। অবিশ্বাস্য এক মাইলস্টোন। পরিশ্রম, কঠোরতা ও শৃঙ্খলা—এ সবকিছুর মধ্য দিয়ে এগিয়ে গর্বের সঙ্গে বয়ে চলছ বাংলাদেশ ক্রিকেটকে। দেশের প্রথম হওয়ায় এটা আরও আইকনিক হয়ে উঠেছে। এগিয়ে যাও চ্যাম্প! তুমি চারপাশে সবার প্রেরণা। বিশেষ এই দিনে সেখানে থাকতে পারলে ভালো লাগত। অবিস্মরণীয় করে তোলো।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুশফিকের এক শ টেস্ট খেলা কেন বিশেষ, জানালেন পন্টিং
  • ১০০ টেস্টের আগে মুশফিকের যত রেকর্ড
  • কোন দেশের কে প্রথম ১০০ টেস্ট খেলেছেন
  • মুশফিকুরের শততম টেস্ট: শত রঙে ছড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা
  • তামিম বললেন, বাংলাদেশের প্রথম হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলা মুশফিকেরই প্রাপ্য