বরিশালের বাকেরগঞ্জে মাদকের টাকার জন্য ঘরে ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগে হাসান গাজী (২০) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন তার বাবা-মা। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বেলা ২টায় বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ভরপাশা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। হাসানের বাবা জাফর গাজী ও মা নাজমা বেগমকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।

প্রতিবেশী সুরুজ জানিয়েছেন, হাসান গাজী মাদকাসক্ত ছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে সে মাদক কেনার টাকার জন্য বসতঘর ভাঙচুর ও মা-বাবাকে মারধর করে। এ সময় বাবা জাফর গাজী লোহার পাইপ দিয়ে হাসানের মাথা ও ঘাড়ের ওপর কয়েকটি আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় হাসান গাজীর। 

বাকেরগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার এএসআই ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে জাফর গাজী ও তার স্ত্রী নাজমা বেগম থানায় এসে জানান যে, তারা দুজনে মিলে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করেছেন। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে বাকেরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানের চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন। হাসানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

নিহত হাসানের নিকটাত্মীয় শাহজাহান জানিয়েছেন, হাসান মাদকাসক্ত ছিল। মঙ্গলবার সে তার বাবা-মার কাছে ৫ হাজার টাকা চায়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে ঘর ভাঙচুর করে। এতে বাধা দিতে গেলে সে তার বাবা-মাকে মারধর করে। এ সময় তার বাবা জাফর গাজী লোহার পাইপ দিয়ে কয়েকটি আঘাত করলে হাসান মারা যায়।

বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। মামলা এজাহারভুক্ত করে তদন্তসাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/পলাশ/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ক রগঞ জ জ ফর গ জ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ