অ্যাট্রোপিক রাইনাইটিস একটি দীর্ঘমেয়াদি ক্ষয়রোগ, যাতে নাকের ঝিল্লি, ঝিল্লির নিচের অংশ বা তার আশপাশের হাড় ক্ষয় হয়ে যায়। এই ক্ষয়রোগের কারণ হলো নাকের রক্তনালি এবং তার আশপাশের নালির প্রদাহ, যা রক্ত সরবরাহে বাধা দেয়। এটি একটি বিশেষ ধরনের রোগ, যা বিলম্বে নির্ণয় হয়। রোগটি নারীদের বেশি হয়।
এ রোগের কারণের মধ্যে রয়েছে বংশগত, অপুষ্টি এবং পুষ্টিহীনতা, নাক ও সাইনাসের দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ, রক্তনালির প্রদাহ, হরমোনজনিত, নাকের হাড়ের অসামঞ্জস্য ও ইমিউনোলজিক্যাল।
উপসর্গ ও চিহ্নগুলো
নাক দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয়, যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না, কিন্তু তার আশপাশের লোকজন দুর্গন্ধ পায়।
নাক বন্ধ থাকে, যা নাকের একদিকে বা দুই দিকেই হতে পারে এবং যা সবুজ, দুর্গন্ধযুক্ত রস নিঃসরণ করে।
মাঝেমধ্যে নাক দিয়ে রক্তপাত হতে পারে।
মাথাব্যথা, নাক ও গলা শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
নাকের পরীক্ষায় দেখা যায়, নাকের গহ্বর বেশ বড় এবং তাতে সবুজ আস্তরণ বা ক্রাস্ট ভর্তি।
এ ছাড়া নাকের আশপাশের মাংসগুলো শুকিয়ে ছোট হয়ে যায়।
নাক দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয় বলে রোগীর বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
নাক ও সাইনাসের এক্স-রে
রক্ত পরীক্ষাসমূহ: রক্তের রুটিন পরীক্ষা যেমন গ্লুকোজ। এ ছাড়া ভিডিআরএল, টিপিএইচএ, এইচআইভি।
নাক ও সাইনাসের সিটি স্ক্যান, নাকের নিঃসৃত রসের কালচার ও সেনসিভিটি পরীক্ষাগুলো উন্নত দেশে নিয়মিত করা হয়। কিন্তু আমাদের দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে পরীক্ষাগুলো নিয়মিত ভিত্তিতে করা হয় না।
চিকিৎসা
প্রধানত ওষুধের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা হয়। মাঝেমধ্যে এ রোগের জন্য অপারেশনেরও প্রয়োজন হতে পারে, যদি তা ওষুধের মাধ্যমে না সারে।
ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা
গ্লিসারিনের সঙ্গে শতকরা ২৫ ভাগ গ্লুকোজের মিশ্রণ প্রতিদিন ৪-৫ ফোঁটা করে দুই নাকের ছিদ্রে দিনে ৩-৪ বার করে দীর্ঘ মেয়াদে দেওয়া হয়।
অ্যালকালাইন দ্রবণ দিয়ে নাকের গহ্বার নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়।
অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে, যখন তা জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়।
এ ছাড়া পরিপূরক হিসেবে ভিটামিন দেওয়া যেতে পারে।
উল্লিখিত চিকিৎসা ছাড়াও অন্যান্য চিকিৎসা রয়েছে।
অস্ত্রোপ্রচারের মাধ্যমে চিকিৎসা
ইয়াংগস অপারেশন (Young’s Operation)
অন্যান্য সার্জারি
ডা.
এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক, ইএনটি, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান।
তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া
বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত
ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।
তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।
দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।
অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।
ঢাকা/রাসেল