টি-টোয়েন্টিতে ৩৪ বলে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়লেন ভারতের ব্যাটার
Published: 17th, October 2025 GMT
ভারতের নারী ক্রিকেটে আবারও ইতিহাস লেখা হলো। মহারাষ্ট্রের তারকা ব্যাটার কিরণ নবগিরে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সিনিয়র উইমেন্স টি-টোয়েন্টি ট্রফিতে ঝড় তুলে ভেঙে দিলেন নিউ জিল্যান্ডের সোফি ডিভাইনের রেকর্ড। নাগপুরের সিভিল লাইন্সের ভিসিএ স্টেডিয়ামে পাঞ্জাবের বিপক্ষে মাত্র ৩৫ বলে অপরাজিত ১০৬ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন তিনি।
প্রায় তিন বছর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে বড় ছক্কার জন্য আলোচনায় আসা নবগিরে আবারও প্রমাণ করলেন কেন তাকে ভারতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হিটার বলা হয়। ১১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই ছিলেন আগ্রাসী। ওপেনার ইশওয়ারি সাভকার দ্রুত ফিরে গেলে দ্বিতীয় উইকেটে মুক্তা মাগরেকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র আট ওভারেই জয় এনে দেন মহারাষ্ট্রকে। ১০৩ রানের সেই জুটিতে মাগরের অবদান ছিল মাত্র ৬ রান, বাকিটা নবগিরের ব্যাট থেকে ৩১ বলে ৯৭ রান!
আরো পড়ুন:
মাত্র ১৪ বছর বয়সেই সূর্যবংশীর ছক্কার বিশ্বরেকর্ড
বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়
মাত্র ৩৪ বলেই তিন অঙ্কে পৌঁছে গড়েন নতুন ইতিহাস। নারী টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ইনিংসটি শেষ করেন ১৪টি চার ও ৭টি ছক্কায়, স্ট্রাইক রেট ছিল অবিশ্বাস্য ৩০২.
এর আগে ২০২১ সালে সোফি ডিভাইন ৩৬ বলে সেঞ্চুরি করে রেকর্ডটি নিজের দখলে রেখেছিলেন। নবগিরে সেই রেকর্ড ভেঙে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিলেন। তিনি এখন একমাত্র নারী ব্যাটার, যিনি ৩০০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে টি-টোয়েন্টিতে শতক হাঁকিয়েছেন।
এটাই প্রথমবার নয়, নবগিরে অতীতেও এমন বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের নজির রেখেছেন। ২০২২ সালের সিনিয়র উইমেন্স টি-টোয়েন্টি ট্রফিতে তিনি ৩৫টি ছক্কা মেরেছিলেন। তাতে এক মৌসুমে সর্বাধিক ছক্কার রেকর্ড এখনো তার দখলে। একই বছরে অরুণাচল প্রদেশের বিপক্ষে ৭৬ বলে ১৬২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন, যা ছিল কোনো ভারতীয় নারীর টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ১৫০+ রানের ইনিংস।
সেই বছরই নারী টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জে আত্মপ্রকাশ করেন নবগিরে, আর প্রথম ম্যাচেই রেকর্ড! মাত্র ২৫ বলে হাফসেঞ্চুরি। যা ছিল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে দ্রুততম।
পরবর্তীতে উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে তাকে দলে নেয় ইউপি ওয়ারিয়র্স। প্রথম মৌসুমেই ৩১ বলে ৫৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে দলকে জেতান। চলতি বছর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে খেলেছেন আরেকটি আগুনে ইনিংস; মাত্র ১৬ বলে ৪৬ রান, স্ট্রাইক রেট প্রায় ২৮৭!
যদিও আন্তর্জাতিক পরিসরে এখনও নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরতে পারেননি তিনি। ২০২২ সালে ভারতের হয়ে ছয়টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন নবগিরে, করেছেন মাত্র ১৭ রান। তারপর থেকে আর জাতীয় দলে সুযোগ পাননি।
নারী টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম শতক (বল অনুসারে):
১. কিরণ নবগিরে – ৩৪ বল,
২. সোফি ডিভাইন – ৩৬ বল (ওয়েলিংটন বনাম ওটাগো, ২০২১),
৩. ডিয়ান্দ্রা ডটিন – ৩৮ বল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০১০),
৪. গ্রেস হ্যারিস – ৪২ বল (ব্রিসবেন হিট বনাম মেলবোর্ন স্টারস, ২০১৮)।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড র কর ড নবগ র
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুর বোর্ডে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তি কম, ইংরেজিতে অকৃতকার্য বেশি
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডে এবার এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই কমেছে। এ বোর্ডে বিগত ছয় বছরের তুলনায় এবার সর্বনিম্ন পাসের হার ও জিপিএ-৫ এসেছে। তবে দুই বিষয়েই এগিয়ে আছেন মেয়েরা। এবার বোর্ডটিতে শিক্ষার্থী পাসের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মহা. তৌহিদুল ইসলামের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। পরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ফলাফলের বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, এবার ৬৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন এক লাখ ৫ হাজার ৮৯১ জন। এর মধ্যে পাস করেছেন ৬০ হাজার ৮৮২ জন। অনুত্তীর্ণ ৪৫ হাজার ৯ জন, যা শতকরা হিসেবে ৪২ দশমিক ৫০। তবে শুধু এক বিষয়েই ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৭ হাজার ৮৪১ জন। এবার ৪৩টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেননি।
আরও পড়ুনইংরেজিতে কম পাসে যশোর বোর্ডে ‘ফল বিপর্যয়’১ ঘণ্টা আগেফলাফল ঘোষণা শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ফলাফল অপেক্ষাকৃতভাবে খারাপ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বড় অংশ ইংরেজি বিষয়ে ফেল করেছেন এবং এক বিষয়ে ফেল করেছেন।
৪৩টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস না করার বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ওই কলেজগুলোতে প্রকৃতপক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যাই কম। এমনও কলেজ আছে যেখান থেকে মাত্র একজন বা দুজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তবে এসব কলেজ কর্তৃপক্ষকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মান যাচাই সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, দিনাজপুর বোর্ডে এবার পাসের হার ৫৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ। যেখানে ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৫৬, ২০২৩ সালে ৭৪ দশমিক ৪৮, ২০২২ সালে ৭৯ দশমিক ০৮, ২০২১ সালে ৯২ দশমিক ৪৩ এবং ২০২০ সালে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছিলেন। অন্যদিকে এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬ হাজার ২৬০ জন। যেখানে ২০২৪ সালে ১৪ হাজার ২৯৫, ২০২৩ সালে ৬ হাজার ৪৫৯, ২০২২ সালে ১১ হাজার ৮৩০ এবং ২০২১ সালে ১৫ হাজার ৩৪৯ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুনসব শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারে পিছিয়ে কুমিল্লা, পাঁচ বছরে সর্বনিম্ন১ ঘণ্টা আগেমেয়েরা এগিয়েএ বোর্ডে গত সাত বছর ধরে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোতেই ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে থাকছেন মেয়েরা। এবার ছেলেদের পাসের হার ৫২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি বছরে মেয়েদের পাসের হার ৬১ দশমিক ৯২ শতাংশ। এবার জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ছেলেদের সংখ্যা ২ হাজার ৭৭৪ জন। অন্যদিকে ৩ হাজার ৪৮৬ জন মেয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এবার মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৩৭৪ জন এবং ছেলে ৫০ হাজার ৫১৭ জন।
প্রথম স্থানে রংপুর জেলাএ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার ৬৬৬টি কলেজের পরীক্ষার্থীরা অংশ নেন। এর মধ্যে পাসের হারে প্রথম স্থানে আছে রংপুর জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। পাসের হার ৬১ দশমিক ৭৩ শতাংশ নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নীলফামারী জেলা। জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে আছেন রংপুর জেলার পরীক্ষার্থীরা। মোট ২ হাজার ৬২৬ জন জিপিএ-৫ পেয়েছেন এ জেলায়।
আরও পড়ুনবরিশালে জিপিএ–৫—এ এগিয়ে মেয়েরা, ১২ প্রতিষ্ঠানের কেউ পাস করেননি১ ঘণ্টা আগে৪৩ কলেজে কোনো শিক্ষার্থীই পাস করেননিএবার ৪৩টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাসে করেননি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০টি কলেজ নীলফামারীর। এ ছাড়া কুড়িগ্রামের ৯টি, ঠাকুরগাঁওয়ের ৬টি, লালমনিরহাটের ৫টি, রংপুরের ৪টি, দিনাজপুরের ৪টি, পঞ্চগড়ের ৩টি এবং গাইবান্ধা জেলার অন্তর্ভুক্ত ২টি কলেজ থেকে কোনো শিক্ষার্থী পাস করেননি।