ভারতের নারী ক্রিকেটে আবারও ইতিহাস লেখা হলো। মহারাষ্ট্রের তারকা ব্যাটার কিরণ নবগিরে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সিনিয়র উইমেন্স টি-টোয়েন্টি ট্রফিতে ঝড় তুলে ভেঙে দিলেন নিউ জিল্যান্ডের সোফি ডিভাইনের রেকর্ড। নাগপুরের সিভিল লাইন্সের ভিসিএ স্টেডিয়ামে পাঞ্জাবের বিপক্ষে মাত্র ৩৫ বলে অপরাজিত ১০৬ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেন তিনি।

প্রায় তিন বছর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে বড় ছক্কার জন্য আলোচনায় আসা নবগিরে আবারও প্রমাণ করলেন কেন তাকে ভারতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হিটার বলা হয়। ১১১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই ছিলেন আগ্রাসী। ওপেনার ইশওয়ারি সাভকার দ্রুত ফিরে গেলে দ্বিতীয় উইকেটে মুক্তা মাগরেকে সঙ্গে নিয়ে মাত্র আট ওভারেই জয় এনে দেন মহারাষ্ট্রকে। ১০৩ রানের সেই জুটিতে মাগরের অবদান ছিল মাত্র ৬ রান, বাকিটা নবগিরের ব্যাট থেকে ৩১ বলে ৯৭ রান!

আরো পড়ুন:

মাত্র ১৪ বছর বয়সেই সূর্যবংশীর ছক্কার বিশ্বরেকর্ড

বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়

মাত্র ৩৪ বলেই তিন অঙ্কে পৌঁছে গড়েন নতুন ইতিহাস। নারী টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ইনিংসটি শেষ করেন ১৪টি চার ও ৭টি ছক্কায়, স্ট্রাইক রেট ছিল অবিশ্বাস্য ৩০২.

৮৬। যা নারী ক্রিকেটে আগে কখনো দেখা যায়নি।

এর আগে ২০২১ সালে সোফি ডিভাইন ৩৬ বলে সেঞ্চুরি করে রেকর্ডটি নিজের দখলে রেখেছিলেন। নবগিরে সেই রেকর্ড ভেঙে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিলেন। তিনি এখন একমাত্র নারী ব্যাটার, যিনি ৩০০-এর বেশি স্ট্রাইক রেটে টি-টোয়েন্টিতে শতক হাঁকিয়েছেন।

এটাই প্রথমবার নয়, নবগিরে অতীতেও এমন বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের নজির রেখেছেন। ২০২২ সালের সিনিয়র উইমেন্স টি-টোয়েন্টি ট্রফিতে তিনি ৩৫টি ছক্কা মেরেছিলেন। তাতে এক মৌসুমে সর্বাধিক ছক্কার রেকর্ড এখনো তার দখলে। একই বছরে অরুণাচল প্রদেশের বিপক্ষে ৭৬ বলে ১৬২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন, যা ছিল কোনো ভারতীয় নারীর টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ১৫০+ রানের ইনিংস।

সেই বছরই নারী টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জে আত্মপ্রকাশ করেন নবগিরে, আর প্রথম ম্যাচেই রেকর্ড! মাত্র ২৫ বলে হাফসেঞ্চুরি। যা ছিল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে দ্রুততম।

পরবর্তীতে উইমেন্স প্রিমিয়ার লিগে তাকে দলে নেয় ইউপি ওয়ারিয়র্স। প্রথম মৌসুমেই ৩১ বলে ৫৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে দলকে জেতান। চলতি বছর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে খেলেছেন আরেকটি আগুনে ইনিংস; মাত্র ১৬ বলে ৪৬ রান, স্ট্রাইক রেট প্রায় ২৮৭!

যদিও আন্তর্জাতিক পরিসরে এখনও নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরতে পারেননি তিনি। ২০২২ সালে ভারতের হয়ে ছয়টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন নবগিরে, করেছেন মাত্র ১৭ রান। তারপর থেকে আর জাতীয় দলে সুযোগ পাননি।

নারী টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম শতক (বল অনুসারে):
১. কিরণ নবগিরে – ৩৪ বল,
২. সোফি ডিভাইন – ৩৬ বল (ওয়েলিংটন বনাম ওটাগো, ২০২১),
৩. ডিয়ান্দ্রা ডটিন – ৩৮ বল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, ২০১০),
৪. গ্রেস হ্যারিস – ৪২ বল (ব্রিসবেন হিট বনাম মেলবোর্ন স্টারস, ২০১৮)।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক র ক ট র কর ড র কর ড নবগ র

এছাড়াও পড়ুন:

আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামি কারাগারে

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলবিরুনী মীর এ আদেশ দেন।

এর আগে এই তিনজন এ মামলায় জামিনে ছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত তাঁদের জামিনাদেশ বাতিল করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।

আসামিরা হলেন আবদুস সবুর ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ও আরাফাত রহমান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জায়েদুর রহমানের ভাষ্য, জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনার সময় এই তিন আসামি অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় সেদিনই এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে আরাফাত, ৬ এপ্রিল খায়রুল এবং গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সবুর এ মামলা থেকে জামিন পান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ভুলবশত তাঁদের হাজিরা দেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালত তাঁদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

আইনজীবী বলেন, ‘৩ ডিসেম্বর তাঁদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করি। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আমরা পুনরায় এই মামলায় তাঁদের জামিনের জন্য আবেদন করব।’

যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই হয়েছিল

২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে আট জঙ্গিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। আসামিরা যখন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের প্রধান ফটকের সামনে আসেন, তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি এক পুলিশ সদস্যকে মারধর শুরু করেন।

এ সময় আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও হামলায় যোগ দেন। অন্য পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাঁদের ওপর মরিচের স্প্রে ছোড়া হয়। এরপর সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীত দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ ২০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আনসার আল–ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এতে জড়িত আনসার আল–ইসলামের ১৫ থেকে ১৮ সদস্য।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, পালিয়ে যাওয়া দুজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল–ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক, যাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়।

আরও পড়ুনআদালত চত্বর থেকে যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই২০ নভেম্বর ২০২২

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তেজগাঁও কলেজে শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল
  • সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামি কারাগারে
  • ইংল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় বড় ধাক্কা উডের