জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনিসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, আগামীর বাংলাদেশে যারা সংস্কারের বিপক্ষে এবং গণভোটে ‘না’–এর পক্ষে থাকবে, তারা বাংলাদেশপন্থী হতে পারে না। ভবিষ্যতে এনসিপি তাদের সঙ্গে একত্রে চলতে পারে; যারা সংস্কার, গণভোট ও বিচারিক প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পক্ষে থাকবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী আলোয়াখোয়া রাশ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন এনসিপির এই নেতা।

সারজিস আলম বলেন, ‘সরকার এ পর্যন্ত নিজেদের জায়গা থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটমেন্ট ইতিমধ্যে পালন করেছে। তারা জুলাই গণহত্যার নির্দেশদাতা এবং খুনি শেখ হাসিনার বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করেছে। এটি সরকারের পক্ষ থেকে একটি সফলতা। পাশাপাশি জুলাই সনদ, গণভোট, নোট অব ডিসেন্টের বিষয়গুলো অনেকটাই পরিষ্কার করেছে সরকার। আমরা এখন আমাদের জায়গা থেকে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং মৌলিক সংস্কারগুলোর পথে যেতে চাই এবং একটি সুষ্ঠু গণভোট চাই।’

নির্বাচনে সব দলের সমান সুযোগ নিশ্চিতের আশা ব্যক্ত করে সারজিস আলম বলেন, এই নির্বাচনে সরকার যদি একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড ও ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে দেশের প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে। এসব জায়গায় বিগত সময়ে দলান্ধ, তোষামোদকারী বা দলীয় পরিচয়ে যাঁরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বা ফায়দা নিয়েছেন, তাঁদের যেন বিন্দুমাত্র স্থান না দেওয়া হয়।

এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, ভবিষ্যতে যদি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সব রাজনৈতিক দল একসঙ্গে প্রশাসনকে সহযোগিতা করে এবং প্রশাসনও পেশাদারত্ব বজায় রাখে, তাহলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ইতিহাসের সবচেয়ে সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন পেতে যাচ্ছে।’

শেখ হাসিনার রায়ের প্রসঙ্গে সারজিস বলেন, ‘খুনি হাসিনা তার সময়কালে যত অপরাধ, গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড করেছে, এগুলোর তুলনায় তার এই শাস্তি খুব নগণ্য। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি তাকে দেওয়া হয়েছে, আমরা এখন সেই শাস্তি কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণভ ট সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মালয়েশিয়ায় ১৭৪ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার

মালয়েশিয়ার পর্যটন এলাকা পাহাং রাজ্যের ক্যামেরন হাইল্যান্ডে বেশ কিছু অভিযান চালিয়ে ১৭৪ বাংলাদেশিসহ ৪৬৮ জন বিদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে অভিবাসন বিভাগ।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত ক্যামেরন হাইল্যান্ডের চারটি এলাকায় বাণিজ্যিক অঞ্চল, ভবন নির্মাণ কেন্দ্র ও শাকসবজির খামারে অভিযান চালানো হয়। এতে অংশ নেন অভিবাসন বিভাগের ৫৪৭ সদস্য ও কর্মকর্তা। এ সময় বারনামার এক প্রতিবেদকও উপস্থিত ছিলেন।  

অভিযানের সময় অধিকাংশ বিদেশি শাকসবজি মোড়কজাত করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। কর্তৃপক্ষের উপস্থিতি টের না পাওয়ায় তাঁরা পালানোর সুযোগ পাননি।
ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক জাকারিয়া শাবান বলেন, স্থানীয় লোকজনের বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে এক মাস আগেই এসব অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

অভিযানে মোট ১ হাজার ৮৮৬ জন বিদেশির তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয় বলে জানিয়েছেন জাকারিয়া শাবান। তিনি বলেন, এর মধ্যে ৪৬৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট রাখা, ভ্রমণ নথি না থাকাসহ অভিবাসনসংক্রান্ত নানা আইন ভঙ্গের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমনকি কেউ কেউ অস্থায়ী ওয়ার্ক পারমিট দেখিয়েছেন, যা ভুয়া বলেই মনে হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭৪ জন বাংলাদেশের বলে জাকারিয়া শাবান জানিয়েছেন। এ ছাড়া ১৭৫ জন মিয়ানমারের, ৬৭ জন ইন্দোনেশিয়ার, ২০ জন নেপালের, ১৬ জন পাকিস্তানের, ১১ জন ভারতের এবং ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, চীন ও কলম্বিয়ার নাগরিক একজন করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের ৩৮৮ জন পুরুষ, ৭৬ জন নারী ও ৪টি শিশু। এর মধ্যে ২০ থেকে ৫৪ বছরের বয়সীদের কেলান্তান, পেরাক ও সেলাঙ্গরের আটককেন্দ্রে পাঠানো হবে।

জাকারিয়া শাবান বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, ক্যামেরন হাইল্যান্ড বিদেশিদের জন্য কাজের একটি আকর্ষণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় এখানে বিদেশিদের আগমন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন স্থানীয় লোকজন। পাহাড়ি এলাকা এবং শহর থেকে দূরত্বের কারণে বিদেশিরা এই পর্যটন এলাকায় কাজ করতে আগ্রহী হন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও প্রায়ই তাঁদের নিয়োগ দিতে পছন্দ করেন।’

অভিবাসন বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে চলতি বছরের শুরু থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত মালয়েশিয়াজুড়ে মোট ৮৩ হাজার ৯৯৪ জন বিদেশিকে আটক করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ