ফুটবল এবং পেলে সমার্থক। পৃথিবীর এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তাঁর নামটা পৌঁছায়নি। তিনবার বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর মিনাস গেরাইসে এক গরীব ঘরে জন্মে থরে–বিথরে সমৃদ্ধ করেছেন ফুটবলকে, ঠিক যেভাবে এখন খেলাটিকে দু হাত ভরে দিচ্ছেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ভিন্ন দুই প্রজন্মের এই কিংবদন্তিদের খেলার ধাঁচ কি একইরকম? ইতিহাস কি বলে? আজ পেলের জন্মদিনে চলুন খুঁজে দেখি এই প্রশ্নের উত্তর—

টেবিলে মা যেভাবে আলতো করে খাবারের প্লেট বাড়িয়ে দেন, পেলের পাসটাও তেমনই ছিল। বাঁ পায়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডান পায়ে বলটা ডান দিকে একটু ঠেলে দিলেন। কার্লোস আলবার্তো তখন যেন সেই ‘মায়েরই’ বুভুক্ষু শিশু!

ডান দিক থেকে রোলস রয়েসের মসৃণ গতিতে ছুটে আসছিলেন, ভীষণ ক্ষুধায় বাচ্চারা যেভাবে গোগ্রাসে গিলে নেয়—আলবার্তোর শটও যেন তারই প্রতিরূপ। এক শটে বল ইতালির গোলপোস্টের পেটে (জালে)!

পেলের সেই বাড়িয়ে দেওয়া ‘প্লেট’–এর ‘খাবার’টা তৈরি হয়েছিল মাঠের বাঁ প্রান্তে। ক্লদওয়ালদোর ড্রিবলিংয়ের আড়াই প্যাঁচের পর রিভেলিনো ও জর্জিনিওর নজরবন্দীতে বিবশ হয়ে পড়েছিল ইতালির রক্ষণ।

কেউ খেয়াল করেনি ইতালিয়ান রক্ষণের বাঁ পাশটা তখন গড়ের মাঠ! জনমানবহীন সেই সবুজ প্রান্তর ব্রাজিলিয়ান অ্যাটাকেরই তৈরি করা। যেখান থেকে ‘হুররে হুয়া ক্যায়া মজা’র অনুভূতিতে ছুটে এসেছেন কার্লোস আলবার্তো। পরে ফিফায় এক সাক্ষাৎকারে ১৯৭০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের এই অধিনায়ক বলেছিলেন, সেই আক্রমণের ছকটা তাঁরা অনুশীলনেই কষেছেন। আর পেলে? তাঁর সেই পাসটা যেন সরল অঙ্কের হিসাব মিলিয়ে দেওয়ার শেষ রাশি। কার্লোস আলবার্তোর শট সেই হিসাবের যোগফল।

আরও পড়ুন‘হাজার ডলারে’ পেলে যখন কলামিস্ট৩০ ডিসেম্বর ২০২২

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৯৭০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ব্রাজিলের এই শেষ গোলটি ‘জোগো বনিতো’র চূড়ান্ত রূপ, তাতে পেলের ভূমিকা সামান্য একটা পাস মনে হলেও গোটা ছবিটাকে একসূত্রে গেঁথেছিল ওই পাসটাই।

কিংবা সে বিশ্বকাপেই উরুগুয়ের বিপক্ষে পেলের সেই মিস! টোস্টাওয়ের থ্রু ধরতে উরুগুয়ে গোলকিপারের সামনে চলে এসেছিলেন। পেলেকে ঠেকাতে গোলকিপারও বেশ এগিয়ে এসেছিলেন। দুজনেই মুখোমুখি অবস্থানে। পৃথিবীর প্রায় সব ফরোয়ার্ডই সেখান থেকে অন্তত এক শ উপায়ে গোল করতে পারবেন। কিন্তু সেটি করলে তো আর পেলে হওয়া যায় না! পেলে ভেবেছিলেন এক শ এক নম্বর উপায়টি।

একসঙ্গে মেসি ও পেলে।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ বক প আলব র ত

এছাড়াও পড়ুন:

মেসি–রোনালদোদের জাদু আগেই দেখিয়ে গেছেন পেলে

ফুটবল এবং পেলে সমার্থক। পৃথিবীর এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তাঁর নামটা পৌঁছায়নি। তিনবার বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর মিনাস গেরাইসে এক গরীব ঘরে জন্মে থরে–বিথরে সমৃদ্ধ করেছেন ফুটবলকে, ঠিক যেভাবে এখন খেলাটিকে দু হাত ভরে দিচ্ছেন লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ভিন্ন দুই প্রজন্মের এই কিংবদন্তিদের খেলার ধাঁচ কি একইরকম? ইতিহাস কি বলে? আজ পেলের জন্মদিনে চলুন খুঁজে দেখি এই প্রশ্নের উত্তর—

টেবিলে মা যেভাবে আলতো করে খাবারের প্লেট বাড়িয়ে দেন, পেলের পাসটাও তেমনই ছিল। বাঁ পায়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডান পায়ে বলটা ডান দিকে একটু ঠেলে দিলেন। কার্লোস আলবার্তো তখন যেন সেই ‘মায়েরই’ বুভুক্ষু শিশু!

ডান দিক থেকে রোলস রয়েসের মসৃণ গতিতে ছুটে আসছিলেন, ভীষণ ক্ষুধায় বাচ্চারা যেভাবে গোগ্রাসে গিলে নেয়—আলবার্তোর শটও যেন তারই প্রতিরূপ। এক শটে বল ইতালির গোলপোস্টের পেটে (জালে)!

পেলের সেই বাড়িয়ে দেওয়া ‘প্লেট’–এর ‘খাবার’টা তৈরি হয়েছিল মাঠের বাঁ প্রান্তে। ক্লদওয়ালদোর ড্রিবলিংয়ের আড়াই প্যাঁচের পর রিভেলিনো ও জর্জিনিওর নজরবন্দীতে বিবশ হয়ে পড়েছিল ইতালির রক্ষণ।

কেউ খেয়াল করেনি ইতালিয়ান রক্ষণের বাঁ পাশটা তখন গড়ের মাঠ! জনমানবহীন সেই সবুজ প্রান্তর ব্রাজিলিয়ান অ্যাটাকেরই তৈরি করা। যেখান থেকে ‘হুররে হুয়া ক্যায়া মজা’র অনুভূতিতে ছুটে এসেছেন কার্লোস আলবার্তো। পরে ফিফায় এক সাক্ষাৎকারে ১৯৭০ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের এই অধিনায়ক বলেছিলেন, সেই আক্রমণের ছকটা তাঁরা অনুশীলনেই কষেছেন। আর পেলে? তাঁর সেই পাসটা যেন সরল অঙ্কের হিসাব মিলিয়ে দেওয়ার শেষ রাশি। কার্লোস আলবার্তোর শট সেই হিসাবের যোগফল।

আরও পড়ুন‘হাজার ডলারে’ পেলে যখন কলামিস্ট৩০ ডিসেম্বর ২০২২

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৯৭০ বিশ্বকাপ ফাইনালে ব্রাজিলের এই শেষ গোলটি ‘জোগো বনিতো’র চূড়ান্ত রূপ, তাতে পেলের ভূমিকা সামান্য একটা পাস মনে হলেও গোটা ছবিটাকে একসূত্রে গেঁথেছিল ওই পাসটাই।

কিংবা সে বিশ্বকাপেই উরুগুয়ের বিপক্ষে পেলের সেই মিস! টোস্টাওয়ের থ্রু ধরতে উরুগুয়ে গোলকিপারের সামনে চলে এসেছিলেন। পেলেকে ঠেকাতে গোলকিপারও বেশ এগিয়ে এসেছিলেন। দুজনেই মুখোমুখি অবস্থানে। পৃথিবীর প্রায় সব ফরোয়ার্ডই সেখান থেকে অন্তত এক শ উপায়ে গোল করতে পারবেন। কিন্তু সেটি করলে তো আর পেলে হওয়া যায় না! পেলে ভেবেছিলেন এক শ এক নম্বর উপায়টি।

একসঙ্গে মেসি ও পেলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ