পেয়ারার মৌসুম শেষ হতে না হতেই ঝালকাঠির সদর, পিরোজপুরের নেছারাবাদ আর বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার নদী-খালজুড়ে চলছে ‘আমড়ার উৎসব’। পাশাপাশি এই তিন উপজেলায় দেশের সবচেয় বড় পেয়ারাবাগান। এখন সেই পেয়ারাবাগানের মধ্যেই বিকল্প হিসেবে চাষ হচ্ছে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া আমড়া।

শরতে আমড়া পরিপক্ব হয়েছে। এখন হেমন্ত, সেই পরিপক্ব আমড়া সবুজ থেকে পেকে হালকা তামাটে রং ধারণ করেছে। সেই পাকা আমড়া কোষা নৌকার খোলভর্তি করে চাষিরা পাইকারি হাটে নিয়ে আসছেন। দক্ষিণের পেয়ারার সাম্রাজ্য খ্যাত এই এলাকার নদী-খালের ঘাটজুড়ে এখন ব্যস্ততা—আমড়া তোলা, বাছাই, পরিবহন ও দরদামের ভিড়ে।

চাষিরা বলছেন, পেয়ারা চাষ করে এখন আর খুব একটা লাভের মুখ দেখছেন না তাঁরা। তাই পুরোনো পেয়ারাবাগানের পাশাপাশি বিকল্প হিসেবে বছর দশেক ধরে বাণিজ্যিকভাবে চাষিরা আমড়া বাগানের দিকে ঝুঁকেছেন ব্যাপকভাবে।

মৌসুমি এই ফল এবার এই তিন উপজেলার অন্তত ২০ হাজার কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। ফলন কিছুটা কম হলেও দাম ভালো থাকায় কৃষকেরা সন্তুষ্ট। অনেক চাষি পেয়ারায় লোকসান গুনলেও আমড়া বিক্রির অর্থে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পেরেছেন।

নদীঘেরা বাগানে আমড়ার সমারোহ

বরিশাল শহর থেকে ১৫ কিলোমিটারের মধ্যেই নদী-খালজুড়ে চোখে পড়বে বিশাল আমড়াবাগান। শ্রাবণের শেষ থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত—এই তিন মাসই মূলত আমড়ার মৌসুম। এই সময়ের আয়ে চাষিরা সারা বছরের খরচ মেটানোর চেষ্টা করেন।
বরিশাল বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, বিভাগের ছয় জেলাতেই কমবেশি আমড়া চাষ হয়। সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত হয় ঝালকাঠি সদর ও পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া, মদরা, ঈদেলকাঠি, কুড়িয়ানা, সোহাগদল, জলাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায়। এসব অঞ্চলে শত শত আমড়াবাগান আছে।

আরও পড়ুনখরা-তাপপ্রবাহে বরিশালে আমড়া চাষে বিপর্যয়ের শঙ্কা০৮ মে ২০২৫

গত ৩০ এপ্রিল বিশ্ব মেধাস্বত্ব দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে বরিশালের আমড়াসহ দেশের কয়েকটি পণ্যের জিআই স্বীকৃতি দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। বরিশালের আমড়া দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষ স্বাদ, পুষ্টিগুণ ও বহুমুখী ব্যবহারের কারণে দেশের নানা অঞ্চলে এই আমড়ার চাহিদা অনেক। দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাস করা আত্মীয়স্বজনের কাছে এই আমড়া পাঠান বরিশালবাসী। অন্য অঞ্চলের মানুষও বরিশালের আমড়াকে স্বাদ ও গুণগত মানে আলাদা করে চেনেন।

চাষিরা জানান, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তেমন বৃষ্টি হয়নি। তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক বেশি। এতে আমড়ার ফুল ঝরে গেছে। তাই এবার ফলনও কম হয়েছে।
আমড়া জিআই পণ্য ঘোষণার পর দাম ও গুরুত্ব উভয়ই বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ঝালকাঠি সদর উপজেলার কাপুরাকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াহিদুল ইসলাম। আমড়া উৎপাদনকারী এই কৃষক বলেন, গত বছর মানভেদে প্রতি মণ ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার দাম উঠেছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। দাম আরও বাড়তে পারে বলেও তিনি আশা করছেন। এবার ফুল কম হওয়ায় ফলন কিছুটা কমেছে।

হেমন্তে এসে পরিপক্ব আমড়া সবুজ থেকে পেকে হালকা তামাটে রং ধারণ করেছে সম্প্রতি ঝালকাঠি সদরের আদমকাঠি এলাকায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল র উপজ ল র ঝ লক ঠ আমড় র

এছাড়াও পড়ুন:

স্কুলে ভর্তিতে লটারি আজ, ফল দেখবেন যেভাবে

সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির ডিজিটাল লটারি আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর ২০২৫) অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ লটারি অনুষ্ঠান সকাল ১০টায় শুরু হবে। লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি কমিটির সভা আহ্বান করে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের ভর্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। এর সঙ্গে লটারির ফল দেখার প্রক্রিয়াও জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ–চীন–ভিয়েতনামে আইইএলটিএসের প্রশ্নফাঁস, ৮০ হাজার শিক্ষার্থীর ভুল ফল ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

গতকাল মঙ্গলবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) এক চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে সারা দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি (মহানগরী, জেলার সদর উপজেলা এবং অন্যান্য উপজেলা সদরে অবস্থিত) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তিপ্রক্রিয়া ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি (মহানগরী, জেলার সদর উপজেলা এবং অন্যান্য উপজেলা সদরে অবস্থিত) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (কেন্দ্রীয় ডিজিটাল লটারির অন্তর্ভুক্ত) ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠান আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট, সেগুনবাগিচা, ঢাকা-১০০০-এ অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন৬৫৫০২ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ এখন ১০ম গ্রেড১৩ ঘণ্টা আগে

এদিকে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তি নিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। লটারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর প্রতিষ্ঠান প্রধান/অভিভাবক/শিক্ষার্থী লিংক থেকে তাদের নির্ধারিত আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ফলাফল ডাউনলোড করতে পারবেন। ডাউনলোডকৃত ফলাফল প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠান প্রধানেরা সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা ভর্তি কমিটির সভাপতি বরাবর ই-মেইলে প্রেরণ করে মাউশিকে অবহিত করতে হবে। নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি কমিটির সভা আহ্বান করে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণপূর্বক শিক্ষার্থীদের ভর্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

মাউশি জানিয়েছে, এবার সরকারি-বেসরকারি ৪ হাজার ৪৮টি বিদ্যালয়ে আসন আছে ১১ লাখ ৯৩ হাজার ২৮১টি। কেন্দ্রীয়ভাবে লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। মোট আসনের মধ্যে ৩ হাজার ৩৬০টি বেসরকারি বিদ্যালয়ে আছে ১০ লাখ ৭২ হাজার ২৫১টি আসন। এ ছাড়া সরকারি ৬৮৮টি স্কুলে সিট রয়েছে ১ লাখ ২১ হাজার ৩০টি।

আরও পড়ুনশিক্ষক-কর্মচারীরা আইন পেশা, সাংবাদিকতাসহ একই সঙ্গে অন্য চাকরি করতে পারবেন না, নীতিমালা জারি০৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ