রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আইন বিভাগ যেন ফিরে পেয়েছে তার গৌরবময় অতীতের দিনগুলো। প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর পর প্রথম পুনর্মিলনী উপলক্ষে ক্যাম্পাসে জড়ো হয়েছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদসহ ৩৫ জন বিচারপতি।
এর মধ্যে প্রধান বিচারপতি, হাইকোর্ট বিভাগের ২৯ জন বিচারপতি, আপিল বিভাগের তিনজন ও অবসরপ্রাপ্ত দুইজন বিচারপতি রয়েছেন। এছাড়া উপস্থিত আছেন, শতাধিক জজ ও সহস্রাধিক আইনজীবী।
আরো পড়ুন:
শিল্পকলায় নোবেলজয়ী নাট্যকারের ‘ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলমস’
রেজোয়ানের ভাসমান স্কুলের ইউনেস্কোর পুরস্কার অর্জন
এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করেছেন আইন বিভাগের ১৯৬৭-৬৮ সেশন থেকে ২০২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থীরা। প্রিয় ক্যাম্পাসে আবেগঘন একটি দিন পার করতে তাদের অনেকেই নিয়ে এসেছেন পরিবার-পরিজনকে ।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকেই ক্যম্পাসের সর্বত্র দেখা যায় তাদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনের সামনে জমে আড্ডা। কেউবা ছবি তুলছেন, কেউ জমিয়ে আড্ডায় মেতেছেন।
পুরোনো বন্ধু, শিক্ষক আর সহপাঠীদের সঙ্গে দেখা হওয়ার আনন্দে সবার মুখে ঝলমল করছে হাসি। কেউ স্মৃতিচারণ করছেন টিচার্স লাউঞ্জের আড্ডার কথা, কেউবা স্মৃতি রোমন্থন করছেন আইনের ক্লাসরুম, সিনেট ভবন কিংবা শহীদুল্লাহ কলাভবনের করিডোরের দিনগুলো।
পুনর্মিলনী উপলক্ষে স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিশেষ আলোচনা সভাসহ সারাদিন থাকছে নানা আয়োজন। আইন বিভাগের বর্তমান শিক্ষার্থীরাও এই আয়োজনকে ঘিরে উচ্ছ্বসিত। কারণ তাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সেই সিনিয়ররা, যারা আজ দেশের বিচারব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ আসনে অধিষ্ঠিত।
এ বিষয়ে এক সাবেক শিক্ষার্থী বলেন, “অনেকদিন পর প্রিয় ক্যাম্পাসে ফিরে মনে হচ্ছে, সময় যেন পেছনে ফিরে গেছে। এখানেই গড়ে উঠেছিল আমাদের চিন্তা, যুক্তি আর ন্যায়বোধের ভিত।”
অনিভুতি প্রকাশ করে ১৯৯২-৯৩ সেশনের শিক্ষার্থী কবির ইকবাল হোসেন বলেন, “আইন বিভাগকে ধন্যবাদ, এত সুন্দর একটা আয়োজন করার জন্য। ৭২ বছর পর প্রথম পুনর্মিলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মতিহারের সবুজ চত্বর আজ একটা মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। অংশগ্রহণ করে আমরা খুবই উজ্জীবিত। আমরা চাই, প্রতি বছর যেন এই আয়োজনটা হয়।”
বাংলাদেশ বিচার বিভাগের জয়েন্ট ডিস্ট্রিক্ট জজ ও রাবি আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বেল্লাল হোসেন বলেন, “আইন বিভাগের এই ৭২ বছর পূর্তিতে এসে আমরা একটি অন্যরকম অনুভূতি অনুভব করছি। এটি নবীন-প্রবীণের একটি আনন্দঘন মুহুর্ত। আমরা প্রাক্তন ছাত্ররা এই আয়োজনে আসতে পেরে অনেক খুশি। এই আয়োজনের জন্য আয়োজকদের আমরা অশেষ ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, “প্রায় ১৭ বছর পর ক্যাম্পাসে এসে ভৌত ও অবকাঠামোগত কিছু পরিবর্তন দেখছি, এবং অনুভূতিতে আমি ফিরে গিয়েছি ছাত্রজীবনের সেই সময়টাতে। সঙ্গে আমার স্ত্রী-সন্তান এসেছে আমার নিজের ক্যাম্পাসে, তাই অনেক ভালো লাগছে।”
অনুভুতি প্রকাশ করে বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো.
তিনি বলেন, “ছোটভাই, বড়ভাই ও প্রিয় সহপাঠীদের সঙ্গে এই মিলনমেলা উপভোগ করছি প্রাণভরে। আমরা চাই, এমন আয়োজন প্রতি বছরই হোক। এতো সুন্দর ও হৃদয়ছোঁয়া আয়োজনের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইন ব ভ গ র ন ব চ রপত ম লনম ল বছর পর অন ভ ত বছর প
এছাড়াও পড়ুন:
আওয়ামী লীগে যোগদানের ঘোষণা, কিশোরগঞ্জের সেই নেতাকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার
আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া কিশোরগঞ্জের সাবেক বিএনপি নেতা ও আইনজীবী ফয়জুল করিমকে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দলের গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় প্রাথমিক সদস্যপদসহ ফোরামের জেলা যুগ্ম আহ্বায়কের পদ থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।
আজ শুক্রবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কিশোরগঞ্জ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সদস্যসচিব শরীফুল ইসলাম বিষয়টি জানান। এ সময় ফোরামের সদস্য শফিউজ্জামান, শেখ মাসুদ ইকবাল, জাহাঙ্গীর মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত বুধবার ফেসবুক লাইভে বক্তব্য দেন ফয়জুল করিম। পরে ২ মিনিট ১২ সেকেন্ডের সেই ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা ফেসবুকে তাঁর দলে যোগদানের খবর প্রচার করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ফয়জুল করিম দলবদলের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
ফয়জুল করিম কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির উপদপ্তর সম্পাদক, পৌর বিএনপির সদস্য ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। চলতি বছরের ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ এখনো চলমান। এর মধ্যে আজ তাঁকে আইনজীবী ফোরাম থেকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও ৫ অক্টোবর নিজের ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি পৌর বিএনপি ও আইনজীবী ফোরামের পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আইনজীবী ফোরামের সদস্যসচিব শরীফুল ইসলাম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও গঠনতন্ত্রবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় ফয়জুল করিমকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কিশোরগঞ্জের যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফয়জুল করিমের মুঠোফোন নম্বরে কল করলেও বন্ধ থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুনকিশোরগঞ্জের বিএনপির সাবেক নেতা ফয়জুল করিম যোগ দিলেন আওয়ামী লীগে২৩ অক্টোবর ২০২৫