ইসলামী ব্যাংক কর্মীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দিতে ‘বিএনপির আহ্বানে’ জামায়াতের উদ্বেগ
Published: 26th, October 2025 GMT
ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব না দিতে ‘বিএনপির আহ্বান’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
আজ রোববার নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিএনপির এই দাবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অযৌক্তিক এবং সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।
জামায়াতের ওই নেতা বলেন, ২৩ অক্টোবর বিএনপি নির্বাচন কমিশনের প্রতি যেভাবে ইসলামী ব্যাংক, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও ইবনে সিনা হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে—তা উদ্বেগজনক। এর পেছনে কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘ওই প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন ধরে অরাজনৈতিক ও সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে দেশের সব শ্রেণির মানুষ এসব প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণ করে সন্তুষ্ট। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন, তাঁদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।’
রাজনৈতিক দলগুলো সেবামূলক ও অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এভাবে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলে, তবে তা নির্বাচনকে ঘিরে অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে বলে মিয়া গোলাম পরওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিএনপির দাবিকে তিনি ‘বিভ্রান্তিকর, অমূলক ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ দাবি করে এগুলো আমলে না নিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, ২৩ অক্টোবর বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে বৈঠক করে। আলোচনা শেষে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, প্রশাসন ও সরকারি বিতর্কিত কর্মকর্তারা যাতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে না পারেন, সে বিষয়ে তাঁরা বলেছেন। নির্বাচন কমিশনও এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে বলে তাঁদের জানিয়েছেন বলেও জানান আবদুল মঈন খান।
আরও পড়ুনবিতর্কিত কর্মকর্তাদের নির্বাচনে চায় না বিএনপি, সিইসিকে জানালেন মঈন খান২৩ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত র জন ত ক ব এনপ র আহ ব ন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে জামায়াত: গোলাম পরওয়ার
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছরে আপনারা বিভিন্ন দলের শাসন দেখেছেন। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ কি পেয়েছেন? দুর্নীতি আর দুঃশাসন, গুম-খুন, বিরোধী দল ও মতের ওপর নির্যাতন-নিষ্পেষণ দিয়ে ভরপুর ছিল সেই শাসন। বারবার শাসক পরিবর্তন হয়েছে; কিন্তু জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। তাই তো দেশের জনগণের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটাতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার সকালে খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউনিয়নে স্থানীয় বিশিষ্টজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ওই ইউনিয়নের ৭ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আপনারা এই এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত কল্যাণ রাষ্ট্রের রূপরেখা বাস্তবায়নে আপনারাই সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের এই আহ্বান পৌঁছাবেন। ন্যায় ও ইনসাফের প্রতীক দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানাবেন।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘পরিবর্তিত বাংলাদেশের জনগণ এখন শাসনব্যবস্থারও পরিবর্তন চান। বিভিন্ন সময়ে চলমান ঘুষ-দুর্নীতি আর দুঃশাসনেরও অবসান চান। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রেও স্থিতিশীলতা চান। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও ঠিক তেমনি একটি কল্যাণমুখী ও সমৃদ্ধিশালী রাষ্ট্র গড়তে চায়, যেখানে দুর্নীতি আর দুঃশাসন টোটালি স্টপড হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে ইনশা আল্লাহ।’
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান পরিবর্তিত বাংলাদেশে কল্যাণমুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ার রূপরেখা ঘোষণা করেছেন। ঘোষিত রূপরেখা হলো—সব ক্ষেত্রে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা হবে। মানুষের মাঝে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। নতুন নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমে শিক্ষিত বেকার যুবকদের হয় কর্মসংস্থান, না হয় বেকার ভাতা দেওয়া হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। বাস্তবমুখী শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়নে টেকসই ও উন্নত জাতি গঠন করা হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সকলের সহাবস্থান নিশ্চিত করা হবে।’
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, ‘ছাত্ররাজনীতি হবে কল্যাণমুখী—দলের লেজুড়বৃত্তিক নয়। প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে ন্যায্যতার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা হবে। সরকারের এমপি-মন্ত্রীদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে, যাতে তারা রাষ্ট্রের মালিক না ভেবে নিজেদের রাষ্ট্রের সেবক ভাবেন। শাসক নয়, জনগণই হবে রাষ্ট্রের মালিক।’ এ সময় তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান।
জামায়াত নেতা আব্দুল জলিল জমাদ্দারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মুন্সী মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস, পি. গাওসুল আযম হাদী, জেলা কর্মপরিষদের সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম। জামায়াত নেতা মো. সাইফুদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ফুলতলা উপজেলার আমির আব্দুল আলীম মোল্যা, নায়েবে আমির মাওলানা শেখ ওবায়দুল্লাহ, পেশাজীবী বিভাগের সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম জমাদ্দার, দামোদর ইউনিয়নের আমির শাব্বির আহমদ, সেক্রেটারি মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।